Bangla
a year ago

সমুদ্র ভ্রমণে আর নয় খাবারের দাম নিয়ে চিন্তা

বাজেটের মধ্যে কক্সবাজারে সেরা ৬টি রেস্টুরেন্ট  

প্রকাশিত হয়েছে :

সংশোধিত :

অবসর সময়ে একটু ঘুরে বেড়াতে কে না পছন্দ করে ! আর যদি গন্তব্য হয় কক্সবাজার ,তাহলে তো কথাই নেই।সমুদ্র সৈকতের মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের সাথে একটু খানি সুস্বাদু ভুড়ি-ভোজ হলে তো বেশ ভালোই জমে। এতো পাঁচ তারকা হোটেলের ভিড়ে সবসময় সাধ ও সাধ্যে কুলিয়ে ওঠা যায় না। ভ্রমণের সময় খাবার খরচ যেন সাধ্যের মধ্যে হয় তাই খাবারের গুণগত মান ও স্বাদ নিয়ে আপস না করে ভ্রমণকারীদের জন্যে কক্সবাজারের কিছু বাজেট ফ্রেন্ডলি রেস্তোরাঁর কথা জানাতে এসেছি।

শালিক

সস্তা ও সুস্বাদু খাবারের জন্য ডলফিন মোড়ের শালিক রেস্তোরাঁ বেশ পরিচিত। এশিয়ান খাবার ও সামুদ্রিক খাবারের সমন্বয়ে  দারুণ বৈচিত্র্যময় সব খাবার এখানে পাওয়া যায়। সকালের নাস্তা থেকে দুপুর ও রাতের খাবারের আইটেমগুলোও স্বল্পমূল্যে বেশ সুস্বাদু। 

নাস্তার জন্যে ২০০ টাকার মধ্যেই পরোটা ও নান দিয়ে গরুর কলিজা, ডিম, চিকেন খাওয়া যায়। এছাড়া ডিমের মোগলাইও বেশ জনপ্রিয়। 

দুপুরের খাবারের জন্য মাত্র ৬০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যেই ভাতের সাথে বিভিন্ন পদের ভর্তা প্ল্যাটার, দেশি মুরগি বা গরু ও খাঁসির কালো ভুনা পাওয়া যায়। লইট্টা, কাঁচকি বাটা, সুরমা, কোরালের মতো সামুদ্রিক মাছ দিয়ে খাবার সারা সম্ভব বেশ সুলভ মূল্যে।  

আল গণি

দেশি খাবারের জন্য স্বল্প বাজেটে সেরা হোটেল পুলিশ স্টেশন রোডের আল গণি। আপনি যদি ৫০০ টাকার মধ্যে খাবার খেতে চান তাহলে আল গণিই বেস্ট অপশন। 

দেশি খাবারের মধ্যে এখানে ভাত, পোলাও, খিঁচুড়ির সাথে ডাল, সবজি, মুরগির মাংস, খাঁসির কালো ভুনা, হাঁস ও কবুতর ভুনা পাওয়া যায়। এছাড়া মেজবানী গরুর মতো মুখরোচক খাবারও রয়েছে এখানে। 

আরো আছে চার পদের মাছ ভর্তা (ইলিশ, কোরাল, টাকি, টুনা) আর আলু, ঢেঁড়শ, বেগুন, শিম, কাচকলা ও কলার মোঁচা ভর্তা। সামুদ্রিক মাছের মধ্যে আছে রুপচাঁদা, লইট্টা, কোরাল মাছের মাথা, চিংড়ি, ইলিশ, টেংরা, ও চিরিং মাছ। এখানে কেবল সপ্তাহের শনিবার খাঁসির মাংস পাওয়া যায়।

পউষী

ডলফিন মোড়ে অবস্থিত এই রেস্তোরাঁয় ৬০০ টাকার মধ্যে সকাল, দুপুর ও রাতের খাবার খুব ভালোভাবে হয়ে যাবে। এখানে খেতে আসলেই তারা প্রথমেই ‘ওয়েলকাম ডিশ’ হিসেবে চাটনি সার্ভ করে। 

সকালের নাস্তা ও দুপুরের খাবারের প্যাকেজ পাওয়া যায় যা জনপ্রতি ১৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৬০০ টাকার মধ্যে। নাস্তার প্যাকেজে আছে পরোটা, ডালভাজি, অমলেট ও চা। প্যাকেজের বাইরে আছে নেহারি, খাঁসির পায়া, আলু পোস্ত ভুনা ও গরুর কলিজা। 

দুপুরের খাবারের প্যাকেজে ভাত ও ডালের সঙ্গে হয় মাছ নয়তো মাংস রদবদল করে নেয়া যায়। যদি কেউ একটু বাজেট বাড়িয়ে খেতে চায় তবে এখানে চিকেন, বিফ ও সামুদ্রিক মাছের বারবিকিউও পাওয়া যায়।

ঝাউবন

সায়মান রোডের একটি নামকরা বাংলা হোটেল ঝাউবন। এখানে বেশ জনপ্রিয় দুইটি খাবার হলো লইট্টা ফ্রাই ও কোরাল মাছের কারি। 

এছাড়াও এখানকার সবজি মিক্সেরও বেশ সুনাম রয়েছে। ৫০০ টাকার মধ্যেই দুপুরের খাবার অনায়াসেই সেরে ফেলা যায় এই হোটেলে। ভাত-ডালের সাথে ভর্তা প্যাকেজ (ছুরি শুটকি, লইট্টা শুটকি, কোরাল, চিংড়ি, কলার মোচা) আর সামুদ্রিক মাছের মধ্যে কাঁচকি, রুপচাঁদা, রিটা, কোরাল এবং মাংসের মধ্যে মুরগি, হাঁস, কবুতর ও গরু উল্লেখযোগ্য।

পালংকি

ইনানী বিচের কাছে বাজেট ফ্রেন্ডলি একটা রেস্তোরাঁ পালংকি যেখানে ৬০০ টাকার ভেতরে বাঙালি, ভারতীয়, থাই, পশ্চিমা ও ইতালীয় খাবার পাওয়া যায়। খাবারের তালিকায় বেশ সুন্দর কিছু নাম দেখতে পাওয়া যায় যেমন: আট পদের ভর্তার নাম ‘অষ্টভূজা’, ছোট মাছের চচ্চড়ির নাম ‘যদি কিছু মনে না করেন’।

ভাতের সঙ্গে সামুদ্রিক মাছের তালিকায় আছে  লইট্টা, রুপচাঁদা, কাকড়া, শানদাঁড় শুটকি ও ছোট মাছ। 

শুধু সন্ধ্যায় পাওয়া যায় ভারতের বিখ্যাত ডাল মাখনি, পালক পনির, বিফ আচারি, আলু মটর পনির বাটার মাসালা। থাই খাবারের মধ্যে চওমিন, নুডলস, চিলি অনিয়ন (চিকেন/বিফ)। 

আর পশ্চিমা খাবারের মধ্যে পাওয়া যায় চিকেন গ্রিল, বিফ স্টেক, লবস্টার ও স্যালমন। কাবাবের মধ্যে শিক, আলিশান, বাজারা, রেশমি ও হরিয়ালি কাবাব। 

এখানে ৫০০ টাকার মধ্যে গ্রীলড সি ফুড পাওয়া যায় যা অন্যান্য সকল রেঁস্তোরার গ্রিল্ড ফুড থেকে বেশ সস্তা। এর মধ্যে আছে চিংড়ি, স্কুইড, কাকড়া, রুপচাঁদা ও কোরালের গ্রিল।

ফাহরিয়া ফারুকী পুষ্পিতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তার সম্প্রতি কক্সবাজার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন, “কক্সবাজারে খাবারের জন্য আমার পছন্দের তালিকায় আল গণি, ঝাউবন, শালিকের মতো রেস্টুরেন্টগুলোই প্রাধান্য পায়। কম খরচে ভালো মানের খাবার মেলে এখানে। পরিবেশও বেশ ভালো।”

jarinohi99@gmail.com

শেয়ার করুন