ছয় মাসের মধ্যে সম্পদ ও বিনিয়োগ নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তিতে সরকারকে এস আলমের নোটিশ
প্রকাশিত হয়েছে :
সংশোধিত :
বহুল বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মো. সাইফুল আলম আগামী ছয় মাসের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সম্পদ ও বিনিয়োগ নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তিতে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। এই সময়সীমার মধ্যে বিষয়টির সমাধান না হলে আন্তর্জাতিক সালিসিতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
তিনি দাবি করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তার সম্পদ জব্দ করেছে এবং বিনিয়োগে বাধা দিচ্ছে। এই বিষয়ে সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসসহ একাধিক উপদেষ্টার কাছে ছয় মাস সময় বেঁধে দিয়ে একটি ‘বিরোধ নিষ্পত্তির নোটিশ’ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে আরও বলা হয়, এই ক্ষতি আদায়ে সাইফুল আলম আন্তর্জাতিক আইনি প্রচেষ্টা শুরু করেছেন। তবে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে নন, সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে তাঁর এই প্রচেষ্টা। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে ২০০৪ সালের দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ চুক্তির কথা বলা হয়েছে নোটিশে।
১৮ ডিসেম্বর দেওয়া এই নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ২০১১ সাল থেকে সাইফুল আলমের পরিবার সিঙ্গাপুরে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। ২০২০ সালে তারা বাংলাদেশি নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন এবং ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে বলে দাবি করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার; এই ঘটনায় সেই টাকা ফেরত আনার প্রচেষ্টা ব্যাহত হতে পারে।
পত্রিকাটির ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মার্কিন আইনি প্রতিষ্ঠান কুইন ইমানুয়েল অ্যান্ড সুলিভানের মাধ্যমে পাঠানো এই নোটিশে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার এবং এর বিভিন্ন সংস্থার অবহেলার কারণে এস আলম গ্রুপের সম্পদ ও বিনিয়োগ আংশিক বা পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি বিনিয়োগ চুক্তি ও বাংলাদেশের আইন লঙ্ঘনের শামিল।
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় ব্যাংক খাত থেকে বিপুল অর্থ পাচার করেছেন। এর মধ্যে এস আলম গ্রুপ একাই এক হাজার কোটি ডলার পাচার করেছে। এটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ব্যাংক ডাকাতির এটাই সবচেয়ে বড় ঘটনা।
এস আলম এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক তার বিরুদ্ধে ‘ভীতি প্রদর্শনমূলক ব্যবস্থা’ নিচ্ছে। সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ চুক্তির আলোকে তিনি সুরক্ষার দাবি করেছেন।
নোটিশে স্পষ্ট জানানো হয়, ছয় মাসের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান না হলে তিনি আন্তর্জাতিক সালিসি আদালতে মামলা করবেন।