Bangla
2 days ago

নতুন বাংলাদেশ গড়ার পথে ফ্যাসিবাদী অপশক্তির বাধা: প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশিত হয়েছে :

সংশোধিত :

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি এবং তাদের দেশি-বিদেশি মিত্ররা বারবার নতুন বাংলাদেশ গঠনের প্রচেষ্টায় বাধা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।

আজ শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় ঈদুল আজহা উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, এই অপশক্তিরা নানাভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাদের মূল লক্ষ্য হলো জুলাই অভ্যুত্থানের পর গড়ে ওঠা জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে ধ্বংস করা এবং বাংলাদেশকে আবারও নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া। আমরা এখন এক প্রকার যুদ্ধাবস্থায় রয়েছি। এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধ থাকা। পরাজিত গোষ্ঠী এবং তাদের সহযোগীরা সুযোগের অপেক্ষায় আছে। আমরা কোনোভাবেই তাদের সে সুযোগ দেব না।

দেশবাসীর প্রতি ঐক্য ধরে রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, চলুন আমরা সবাই মিলে প্রতিরোধের এক অটুট প্রাচীর গড়ে তুলি। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় মর্যাদার ওপর যেকোনো আঘাত একযোগে প্রতিহত করব।

তিনি বলেন, স্বৈরাচারী শাসনামলে গত ১৬ বছরে বিপুলসংখ্যক মানুষ গুমের শিকার হয়েছেন। অনেককে এমন অমানবিক ও নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল, যা নিষ্ঠুরতার সীমা ছাড়িয়ে গেছে। কেউকে পেট চিরে সিমেন্টের বস্তা ঢুকিয়ে নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে, কেউকে অজ্ঞান করে ইটভাটায় নিক্ষেপ করা হয়েছে, আবার কাউকে ট্রেন বা গাড়ির নিচে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

ড. ইউনূস জানান, এসব গুমের ঘটনা তদন্তে একটি স্বাধীন কমিশন কাজ করছে। তারা ইতিমধ্যে দুটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন দিয়েছে এবং নতুন নতুন অভিযোগ আসতে থাকায় তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, এ তদন্ত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে রাজধানীসহ কয়েকটি জেলার গুমকেন্দ্র পরিদর্শন এবং গণশুনানি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় গণশুনানিতে শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ আট শতাধিক মানুষ অংশ নিয়েছেন। এছাড়া কিছু অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং একটি আইন প্রণয়নের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ১৬ বছরের দুঃশাসনে দেশে অপরাধ, অনিয়ম ও দুর্নীতি গভীরভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। এই অসুস্থ রাষ্ট্রব্যবস্থাকে সুস্থ করে তোলার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণ জরুরি। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ ও আলোচনায় আছি।

তিনি আরও জানান, সপ্তাহজুড়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তারা দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের মতামত দিয়েছেন এবং সংকট উত্তরণের জন্য জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। আলোচনার এই ধারার মধ্য দিয়েই সমঝোতার আশাবাদ দেখা যাচ্ছে। অংশগ্রহণকারীরা সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে দেশের সংকট কাটিয়ে ওঠার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

শেয়ার করুন