প্রকাশিত হয়েছে :
সংশোধিত :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া বিভিন্ন মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ করা সম্ভব কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, আসামির সংখ্যা বেশি হওয়ায় তদন্তে সময় লাগছে। তিনি বলেন, এসব মামলায় দোষীদের পাশাপাশি অনেক নির্দোষ ব্যক্তি জড়িয়ে পড়েছেন, ফলে যাচাই-বাছাই করে তদন্ত শেষ করতে কিছুটা সময় প্রয়োজন।
মঙ্গলবার (১০ জুন) সকালে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আগে পুলিশ নিজেরাই ১০-১৫ জনের নাম দিয়ে শত শত অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করতো। এবার পরিস্থিতি উল্টো—মামলার বাদীপক্ষই ১০-১৫ জনের নামের পাশাপাশি ২০০-২৫০ জন বেনামি ব্যক্তিকে আসামি করেছে। এ কারণেই তদন্তে বিলম্ব হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, পুলিশের সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, আর এ লক্ষ্যে একটি পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। অতীতে অনেক সময় অভিযোগ থাকত যে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) বা মামলা নিতে পুলিশ অনিচ্ছা দেখায়। এই সমস্যার সমাধানে মামলা গ্রহণ ব্যবস্থা এখন অনলাইনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মানুষ এখন বাসায় বসেই জিডি করতে পারছে, ফলে থানায় গিয়ে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে না।
রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এখন থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাঁচের মতো স্বচ্ছ ঘর তৈরি করা হবে, যাতে বাইরে থেকে দেখেই বোঝা যায়—আসামির সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ করা হচ্ছে কি না।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশের কেউ যদি মামলা বাণিজ্য বা দুর্নীতিতে জড়িত থাকে, তাকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। ইতোমধ্যে ৮৪ জন কর্মকর্তাকে বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছে এবং এদের মধ্যে ৩০-৪০ জনকে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনে আরও ৩০-৪০ জনকে বাড়ি পাঠানো হবে, এতে কোনো দ্বিধা থাকবে না।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে দুর্নীতি, যা আমাদের সামাজিক কাঠামোর গভীরে গেঁথে গেছে। যদি এটিকে নিয়ন্ত্রণে আনা যেত, তাহলে দেশ অনেক দূর এগিয়ে যেত। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকা অপরিহার্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাংবাদিকরা যদি সত্য ও সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিবেদন করেন, তাহলে অনেক কিছুই ইতিবাচকভাবে বদলে যাবে।