‘বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের গুরুত্ব’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত
প্রকাশিত হয়েছে :
সংশোধিত :
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত পর্যটন ভবনে "বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের গুরুত্ব" শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) বুধবার এই সেমিনারের আয়োজন করে। খবর প্রেস বিজ্ঞপ্তির।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিসিক চেয়ারম্যান সঞ্জয় কুমার ভৌমিক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার সিদ্দীকা।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের। সেমিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যনেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার দেব এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ও ট্যুরিজম বিশেষজ্ঞ জাবেদ আহমেদ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিকের পরিচালক (বিপণন, নকশা ও কারুশিল্প) আব্দুন নাসের খান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিসিকের সম্মানিত পরিচালক (প্রশাসন) শ্যামলী নবী, বিসিকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ, শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী প্রতিনিধিবৃন্দ, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিবৃন্দ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিসিকের নকশাবিদ শেখ আলী আশরাফ ফারুক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সঞ্জয় কুমার ভৌমিক রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে ও শিল্প সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মানে শিল্পের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, "ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উন্নয়ন এবং বিকাশে বিসিক সবসময়ই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। পর্যটন শিল্পের বিকাশে এই শিল্পগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম। পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে আমরা নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারবো।"
"এছাড়াও সম্প্রতি আমাদের দেশের ভেতরেই পর্যটক সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। এক্ষেত্রে বিসিকের অবদান ১১ শতাংশ। শিল্প ক্ষেত্রে ১০ লক্ষের অধিক কর্মসংস্থান বিসিকের মাধ্যমেই হয়েছে যার মধ্যে তিন লক্ষের অধিক নারী," বলেন বিসিক চেয়ারম্যান।
তিনি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের গুরুত্ব তুলে ধরতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক হস্তশিল্প পণ্যকে ২০২৪ সালের বর্ষপণ্য ঘোষণা করার বিষয়ে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, ট্যুরিজম বোর্ড ও বিসিক আলাদা নয়। আমাদের দেশের পণ্যের বাজার ব্যাপক। রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় স্বার্থে বিসিক ও ট্যুরিজম বোর্ডকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
সেমিনারে উপস্থিত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে করে দেশের পর্যটনকেন্দ্রগুলোর অপার সৌন্দর্য ও গুরুত্ব যথার্থভাবে তুলে ধরার আহ্বান জানান বিসিক চেয়ারম্যান।
বিশেষ অতিথি কামরুন নাহার সিদ্দীকা বলেন, "ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমাদের ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প, টেক্সটাইল এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প পণ্যসমূহ বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে সক্ষম।"
সেমিনারের সভাপতি আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন, "বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক স্থান এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে পর্যটকদের সামনে তুলে ধরতে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যটন শিল্প এবং ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের প্রসারে সরকারের বিশেষ প্রণোদনা প্রয়োজন।"
জাবেদ আহমেদ তার প্রবন্ধে উল্লেখ করেন, "বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের ভূমিকা আরও সুসংহত করার জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা জরুরি। তাছাড়া, পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় পণ্য ও সেবা উন্নয়নে উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।"
সেমিনারে বিসিক ও ট্যুরিজম বোর্ডের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, শিল্প ও পর্যটন সংস্থা, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প উদ্যোক্তা, শিক্ষাবিদ ও নীতি-নির্ধারকগণও উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে একটি মুক্ত আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়, যেখানে উপস্থিত অতিথিরা তাদের মতামত ও প্রস্তাবনা প্রদান করেন। তারা পর্যটন শিল্প এবং ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে বিভিন্ন দিক আলোচনা করেন এবং এসকল শিল্পের উন্নয়নে একত্রে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।