বিদেশে নির্মিত সিনেমায় ১০০ % শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের
প্রকাশিত হয়েছে :
সংশোধিত :
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক উত্তেজনার মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি বিদেশে নির্মিত চলচ্চিত্রে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন।
ট্রাম্প জানান, মার্কিন চলচ্চিত্র শিল্প দ্রুত অবনতির দিকে যাচ্ছে এবং এই শিল্পকে বাঁচাতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প এই পরিস্থিতির জন্য অন্য দেশগুলোর সম্মিলিত কার্যকলাপকে দায়ী করছেন। তিনি অভিযোগ করেন, এসব দেশ চলচ্চিত্র নির্মাতা ও স্টুডিওগুলোকে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে, যা মার্কিন শিল্পের জন্য জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ট্রুথ সোশাল প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক বার্তায় ট্রাম্প বলেন, “এটা পুরোপুরি প্রচারণা ও প্রপাগান্ডার অংশ। আমরা আবার আমেরিকায় তৈরি সিনেমা দেখতে চাই।”
হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর থেকেই তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ শুরু করেছেন। ট্রাম্পের মতে, এ ধরনের শুল্কনীতি দেশীয় শিল্পকে সুরক্ষা দেবে এবং কর্মসংস্থান বজায় রাখবে। তবে, এতে বৈশ্বিক বাণিজ্য সম্পর্ক টানাপোড়েনে পড়েছে এবং বাণিজ্য যুদ্ধ আরও ঘনীভূত হয়েছে।
ট্রাম্প তার অভিষেকের সময় হলিউড তারকা জন ভোইট, মেল গিবসন ও সিলভেস্টার স্ট্যালোনকে বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ দেন, যারা হলিউডের ব্যবসায়িক সুযোগ বাড়াতে আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করবেন।
তিনি বলেন, “তাদের দায়িত্ব হলো বিগত চার বছরে বিদেশিদের দখলে চলে যাওয়া মার্কিন চলচ্চিত্র বাজার আবার ফিরিয়ে আনা — আরও বড়, আরও শক্তিশালী রূপে।”
মার্কিন বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছি।”
চলচ্চিত্র গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রডপ্রো’র তথ্যমতে, নানা চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও এখনো যুক্তরাষ্ট্রই চলচ্চিত্র খাতে সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করে। তবে ২০২৩ সালে এই খাতে ব্যয় হয়েছে ১৪.৫৪ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ২৬ শতাংশ কম।
এদিকে, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা ও যুক্তরাজ্যে সিনেমা খাতে বিনিয়োগ বাড়ছে।
ট্রাম্পের কড়া শুল্কনীতির জেরে আমেরিকার চলচ্চিত্র শিল্প আগে থেকেই ক্ষতির মুখে পড়ে।
সম্প্রতি চীন জানায়, তারা আমেরিকান চলচ্চিত্র আমদানির পরিমাণ কমাবে। চীনা ফিল্ম প্রশাসনের মতে, “যুক্তরাষ্ট্র যে ভুলভাবে শুল্ক চাপিয়েছে, তাতে চীনা দর্শকদের মধ্যে আমেরিকান সিনেমার চাহিদা হ্রাস পাবে।”
চীন যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসিয়েছে।
বিবিসি আরও জানায়, চীনের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক সবচেয়ে কঠোর। চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বর্তমানে ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত এবং তা আরও বাড়িয়ে ২৪৫ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।