প্রকাশিত হয়েছে :
সংশোধিত :
ইপিভি ঠাকুরগাঁও ১১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদেশি মালিকরা বারবার পাওনা বিল পরিশোধে দেরি হওয়ায় কোম্পানির চরম আর্থিক ও পরিচালনাগত সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন।
বিগত সরকারকর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত কোম্পানিগুলোর একটি এই স্বাধীন বিদ্যুৎ উৎপাদক কোম্পানি। এই কোম্পানিটি একটি চিঠির মাধ্যমে অভিযোগ করেছে যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে বিল পরিশোধে ব্যর্থ হচ্ছে।
চিঠিতে বলা হয়, বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) ৩০ দিনের নির্ধারিত সময় অনুযায়ী নিয়মিত বিল পরিশোধ না করে বিপিডিবি ‘প্রায়শই ব্যর্থ’ হচ্ছে এবং দেরির সময়সীমা ১৬৫ দিন পর্যন্ত গড়িয়েছে।
তবে কত টাকা বকেয়া রয়েছে তা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়নি এবং বিষয়টি নিশ্চিতও করা যায়নি।
চিঠিতে ইপিভিটিএলের মালিক কোম্পানি ইএমএ পাওয়ার ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান স্টিফেন ভাইনবার্গ লিখেছেন, “এই বিলম্ব ইপিভিটিএলে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলছে এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ চালিয়ে যাওয়ার ক্ষমতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।”
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টার কাছে চিঠিতে বিল পরিশোধের বিষয়টি দ্রুত সমাধানের অনুরোধ জানিয়েছেন।
সূত্র জানায়, স্বাধীন বিদ্যুৎ উৎপাদক কোম্পানিটি অর্থ মন্ত্রণালয়েও চিঠির একটি অনুলিপি পাঠিয়েছে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধে।
চিঠিতে ভাইনবার্গ আরও লেখেন, “বকেয়া অর্থ অবিলম্বে পরিশোধ করা এবং ভবিষ্যতে পিপিএ অনুযায়ী নিয়মিত বজায় রাখা অপরিহার্য।”
তিনি উল্লেখ করেন, সময়মতো বিল পরিশোধ না করায় ইপিভিটিএল ভারি জ্বালানি তেল আমদানির বিল পরিশোধে অক্ষম হয়ে পড়ে। এতে কোম্পানির ১ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রার ক্ষতি হয়েছে, যা আর্থিক চাপ আরও বাড়িয়েছে।
এছাড়া, ব্যাংকগুলো কোম্পানিকে আর কার্যকর মূলধন ঋণ দিচ্ছে না, যার ফলে জ্বালানি মজুদের সক্ষমতা মারাত্মকভাবে কমে গেছে এবং জাতীয় লোড ডিসপ্যাচ সেন্টারের (এনএলডিসি) চাহিদা পূরণে সক্ষমতা নষ্ট হচ্ছে।
ইপিভিটিএল সম্পূর্ণভাবে ইএমএ পাওয়ার ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের মালিকানাধীন, যা ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ড II ও কোরিয়ার ডেইলিম কোম্পানির সহযোগী ডিএল এনার্জি কোম্পানির একটি বিনিয়োগ প্ল্যাটফর্ম।
চিঠিতে বলা হয়, “ইপিভিটিএলের পেছনে যে ঋণ ও ইকুইটি বিনিয়োগ রয়েছে, তা পুরোপুরি বিদেশি উৎস থেকে এসেছে এবং পিপিএ অনুযায়ী বিলম্বিত অর্থ পরিশোধের ঘটনায় আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।”
ভাইনবার্গ বলেন, “বিপিডিবির পক্ষ থেকে কোনো বিলম্বিত অর্থ পরিশোধের ঘটনা বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ, স্থানীয় কর্মসংস্থান ও সরবরাহকারীদের উপর, জ্বালানির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ এবং বাংলাদেশে স্বাধীন বিদ্যুৎ উৎপাদকদের ভবিষ্যতের উপর হুমকি তৈরি করছে।”
বিষয়টি জানতে চাইলে বিপিডিবির এক কর্মকর্তা অর্থসংকটের কারণে বিল পরিশোধে বিলম্ব হওয়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, “আমরা কোম্পানির সঙ্গে মিলে সমস্যার সমাধানে চেষ্টা করছি।”
অন্যদিকে, অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, পাওয়ার ডিভিশনের কাছ থেকে হালনাগাদ তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে মন্তব্য করা যাবে না।