বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে নতুন পদ্ধতি চালু করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তি
প্রকাশিত হয়েছে :
সংশোধিত :
কেন্দ্রীয় ব্যাংক আজ মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) থেকে রেফারেন্স-কেন্দ্রিক বিনিময় হার ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে, যা বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে সহায়তা করবে। বর্তমানে চলমান ক্রলিং-পেগ ব্যবস্থা বাতিল করে রেফারেন্স-কেন্দ্রিক বিনিময় হার ব্যবস্থা চালু করা হবে।
এ বিষয়ে সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে। বর্তমান ক্রলিং-পেগ ব্যবস্থায় একটি নির্দিষ্ট মধ্যম হার নির্ধারণ করা থাকে এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলিকে সেই হারের আশেপাশেই ডলার ক্রয়-বিক্রয় করতে হয়। তবে নতুন ব্যবস্থায় কোনো নির্দিষ্ট মধ্যম হার থাকবে না।
নতুন ব্যবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিদিন একটি রেফারেন্স হার প্রকাশ করবে। এই হারের ভিত্তিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলিকে ডলার ক্রয়-বিক্রয় করতে হবে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রথমে এই রেফারেন্স হার ব্যবস্থা চালু করা হবে। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে বিনিময় হার সম্পূর্ণরূপে বাজার নির্ধারিত হতে দেওয়া হবে।
নতুন ব্যবস্থায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলিকে প্রতিদিন ডলার ক্রয়ের প্রকৃত হার কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানাতে হবে। এই তথ্যের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দিনে দুইবার রেফারেন্স হার নির্ধারণ করবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা দ্য ফাইনান্সিয়াল এক্সপ্রেসকে জানান, এই রেফারেন্স হার ওজনযুক্ত গড় বিনিময় হারের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হবে। কোনো নির্দিষ্ট মধ্যম হার থাকবে না। তবে একটি নির্দিষ্ট সীমা থাকবে, যা বাজার পর্যবেক্ষণের জন্য গোপন রাখা হবে।
এদিকে, এই সিদ্ধান্তের আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর ড. আহসান এইচ. মানসুর ২৭টি অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের সাথে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে গভর্নর সম্প্রতি বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে অস্থিরতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বৈঠকে ব্যাংক কর্মকর্তারা সরকারের আমদানি বকেয়া পরিশোধের চাপ এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ডলার ক্রয় বন্ধ করার সিদ্ধান্তকে অস্থিরতার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। তবে গভর্নর তাদের বক্তব্যে পুরোপুরি সন্তুষ্ট ছিলেন না।
গভর্নর বৈঠকে ব্যাংক কর্মকর্তাদের নতুন ব্যবস্থা সম্পর্কে জানান এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের জন্য বিনিময় হার একই রাখার নির্দেশ দেন। বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তারা অফিসিয়ালি ব্যাংকগুলিকে ডলারের জন্য বিনিময় হার ১২৩ টাকার মধ্যে রাখার অনুরোধ করেছেন।
বর্তমান ক্রলিং-পেগ ব্যবস্থা কার্যকরীভাবে কাজ করছে না। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে অস্থিরতা দেখা দিচ্ছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নিজেদের মতো করে ডলার ক্রয়-বিক্রয় করছে। এমনকি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর প্রতিনিধিরাও বর্তমান ব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন।