ফরিদপুরের সালথায় পানির অভাবে পাট নিয়ে সংকটে চাষিরা, সুইচগেইট খুলে দেওয়ার দাবি
প্রকাশিত হয়েছে :
সংশোধিত :
ফরিদপুরের সালথায় শুরু হয়েছে সোনালি আঁশ পাট কাটা। খাল-বিল ও মাঠে পানি না থাকায় পাট জাগ দেওয়া নিয়ে সংকটে পড়েছেন চাষিরা। রাস্তার খাদে ও পুকুরে মাটি দিয়ে পাট জাগ দেওয়া শুরু হলেও আঁশের মান তেমন ভালো হচ্ছে না। এছাড়াও পাট কেটে কুমার নদে নিয়ে যাচ্ছেন অনেকেই। পাটচাষিদের দাবি, ফরিদপুর চুনারুঘাট স্লুইচগেট খুলে দিলে তারা পানি পাবেন।
চাষিরা পাটের ভালো ফলনের আশা করলেও পাট জাগ দেওয়ার জন্য খাল-বিলে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। আবার পাটের মান ভালো না হলে ন্যায্য মূল্যের চিন্তা তো আছেই।
চাষিদের দাবি, পাটের ন্যায্য দাম নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। বীজ, জৈব ও রাসায়নিক সার, কীটনাশক এবং শ্রমিকদের মজুরির মূল্যবৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। তারা সরকারের কাছে বীজ, সার ও কীটনাশকের দাম কমানোর পাশাপাশি ফরিদপুর স্লুইচগেট খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সালথার চাষিরা।
তরুণ পাটচাষি নয়ন কান্ত জানান, “আমাদের আটঘর ইউনিয়নের মাঠে-ঘাটে কোথাও পানি নেই। পাট কেটে জাগ দিতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। ফরিদপুর স্লুইচগেটের অপরপাশে পানি বাড়ছে, তাই স্লুইচগেট খুলে দিলে আমরা পানি পেতাম।”
পাটচাষি জয়নাল হোসেন জানান, “খাল-বিল, নদী-নালায়, পুকুরে পানি নেই; পাট জাগ দেব কোথায়? ভালো পানি না হলে পাটের রং ভালো হবে না। আমাদের দাবি, পানির জন্য যেন স্লুইচগেট খুলে দেওয়া হয়।”
উপজেলার আরেক পাটচাষি লোকমান মোল্যা জানান, “বৃষ্টিতে পাটের খেতে ছিলছিলে পানি হয়েছে, এতে পাটের গোড়া নষ্ট হয়ে গেছে। খেতে বেশি পানি হলে পাটের গোড়া পঁচন ধরতো না। খেতের পাট খেতেই জাগ দেওয়া যেত। এখন নছিমন ও ভ্যানে করে অন্য জায়গায় নিয়ে যাচ্ছি, পাট জাগ দিতে। পানির অভাবে পাটের কালার খারাপ হচ্ছে, দামও কম পাবো। সব মিলিয়ে চিন্তায় আছি।”
ফরিদপুর সালথা উপজেলা কৃষি অফিসার সুদর্শন সিকদার জানান, “এ বছর সালথায় ১৪ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। অতি বৃষ্টির কারণে পাট ক্ষেতে পানি জমে পাটের গোড়া পচন ধরেছে। এখন যারা পাট কাটবে তাদের ফলন ভালো হবে।”
তিনি আরও জানান, “পানি না থাকায় পাট পঁচনে সমস্যা হচ্ছে পাটচাষিদের, এতে পাটের কালার খারাপ হতে পারে। ফরিদপুরের স্লুইচগেট যাতে খুলে দেয়, সেজন্য আমরা চেষ্টা করছি।”