Bangla
7 months ago

গরমে যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেন

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

প্রকাশিত হয়েছে :

সংশোধিত :

ঋতু পরিক্রমায় এখন চলছে গ্রীষ্মকাল। এই ঋতুতে হরেক রকম মৌসুমী ফল বাজার দেখা গেলেও গ্রীষ্মের তীব্র তাপদাহে জনজীবন অনেকটাই দূর্বিষহ হয়ে পড়ে। তাই তো ঘরে কিংবা বাহিরে সর্বত্রই চোখে পড়ে ক্লান্তি আর অবসাদের ছাপ।
 
শীতকালে যেমন প্রকৃতির সাথে খাপ খাওয়াতে মানুষকে নতুন করে অভিযোজন নীতি গ্রহণ করতে হয়, ঠিক তেমনি গ্রীষ্মের তপ্ত দুপুরে নিজেকে একটু আরাম দিতে মেনে চলতে হয় কিছু বিশেষ রীতি। কারণ, এই সময় সূয্যি মামাও যেন কোনো আবদার শুনতে চায় না। আর তাই তো বাধ্য হয়েই পরিবর্তন আনতে হয় নিত্য দিনের জীবনযাপনে।
 
গ্রীষ্মের গরমে বেশি করে পানি পান করা একটি সাধারণ নিয়ম। এছাড়া এই সময় আইসক্রিম কিংবা হরেক রকম কোল্ড ড্রিংকস খাওয়ার মাত্রাও বেড়ে যায় পূর্বের তুলনায় কয়েকগুণ।
 
এই তো গেল গরমে কিছু নির্দিষ্ট খাবারের প্রতি মানুষের তীব্র আকাঙ্ক্ষার কথা। কিন্তু সেইসাথে এটিও সত্য যে গরমে সুস্থ থাকতে হলে খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে কিছু খাবার। তা না হলে, বদহজম কিংবা ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আর তেমনই কিছু খাবার সম্পর্কে জানবো এই লেখায়। 
 
লাল মাংস
 
লাল মাংস বা রেড মিট বলতে মূলত গরু এবং ছাগলের মাংসকে বোঝায়। পুষ্টিগুণের দিক থেকে এগুলো অনেক এগিয়ে থাকলেও গরমকালে এসব মাংস যতটুকু সম্ভব কম খাওয়াই ভালো। কারণ, এই ধরনের মাংস শরীরের তাপমাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়।
 
এছাড়া গরমে রেড মিট বেশি খেলে বদহজম কিংবা ডায়রিয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত পরিমাণে রেড মিট খাওয়া বছরের অন্যান্য সময়েও স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। কারণ, এর ফলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়।
 
ভাজা-পোড়া খাবার
 
আমাদের দেশে বরাবরই ভাজা-পোড়া খাবার বেশ জনপ্রিয়। এসব খাবারে মশলাপাতি বেশি থাকে বিধায় খাবারগুলো খেতে খুব মুখরোচক হয়।
 
তবে গ্রীষ্মকালে এসব খাবার পরিহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ, তা না হলে ডায়রিয়ার মতো সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে গ্রীষ্মকালে এই ধরনের খাবার শরীরের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হলেও অন্যান্য ঋতুতেও ভাজা-পোড়া এবং অতিরিক্ত মশলা জাতীয় খাবার যতটুকু সম্ভব বাদ দেয়াই উত্তম।
 
স্ট্রিট ফুড
 
রাস্তার পাশে বিক্রি হওয়া বার্গার, পিৎজা, চাউমিনসহ হরেক রকম মুখরোচক খাবার দেখলে লোভ সামলানো মুশকিল। এসব খাবার স্বাদের দিক থেকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী হলেও, মানের প্রশ্নে এসব খাবারের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়।
 
বছরের যেকোনো সময়েই এসব খাবার মারাত্নক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তবে গ্রীষ্মকালে এই ঝুঁকি কয়েকগুণ বেড়ে যায়। কারণ, প্রচন্ড গরমে এসব স্ট্রিড ফুড হজমে সমস্যাসহ পাকস্থলিজনিত নানা জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
 
চা-কফি
 
বাংলাদেশের মানুষ স্বভাবগতভাবেই চা কিংবা কফির ভক্ত। বিশেষ করে চা খেতে বাঙালী সমাজে কোনো কারণ লাগে না। বাসা কিংবা দোকান সর্বত্রই চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে শরীরের ক্লান্তিকে বিদায় জানানোর অভ্যাস এদেশে বেশ পুরোনো।
 
তবে গরমের সময় চা কিংবা কফি খাওয়া যতটুকু সম্ভব কমিয়ে আনা স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারি। কারণ, এগুলো একদিকে যেমন শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়, ঠিক তেমনি এসব এগুলোতে থাকা ক্যাফেইন শরীরে পানিশূন্যতা সৃষ্টি করে।
 
ফাস্ট ফুড
 
রেস্টুরেন্টে বিক্রি হওয়া হরেক রকম ফাস্টফুড শুধু বাংলাদেশেই নয়, সমগ্র পৃথিবীতেই বেশ জনপ্রিয়। তবে এসব খাবারে মশলাপাতি বেশি ব্যবহার করা হয় বিধায় তা পাকস্থলীতে অ্যাসিডিটি সৃষ্টি করতে পারে।
এছাড়া এসব খাবারের অনেক উপাদান প্রক্রিয়াজাতভাবে উৎপাদন করা হয় বিধায় সেখানেও মানের প্রশ্নে যথেষ্ট উদ্বেগ রয়েছে। তাই গরমে সুস্থ থাকতে হলে ফাস্টফুড খাওয়া অবশ্যই বাদ দিতে হবে।
 
অতিরিক্ত চিনি ও লবণজাতীয় খাবার
 
অতিরিক্ত চিনি এবং লবণজাতীয় খাবার বরাবরই স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর৷ বিশেষ করে ক্যান্সার কিংবা উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা এড়াতে প্রায়ই চিনি এবং লবণ খাওয়ার উপর বিধি-নিষেধ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। তবে গ্রীষ্মকালে এই বিষয়ে আরো বেশি সচেতন হওয়া জরুরি।
 
কারণ, এতে করে শরীরে এক ধরনের অস্বস্তি অনুভূত হতে পারে। এছাড়া প্রসেসড ফুডের ব্যাপারেও সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি যেহেতু এসব খাবারে লবণ কিংবা চিনির মাত্রা বেশি থাকে।
 

শেয়ার করুন