Bangla
9 months ago

গতির বিচারে সেরা পাঁচে কারা?

ঘণ্টায় ১৫২ কিলোমিটার বেগে বোল ছুঁড়েন নাহিদ রানা
ঘণ্টায় ১৫২ কিলোমিটার বেগে বোল ছুঁড়েন নাহিদ রানা

প্রকাশিত হয়েছে :

সংশোধিত :

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফাস্ট বোলারদের কথা আসলেই সবার আগে সামনে আসে শোয়েব আখতার ও ব্রেট লির নাম। সাদা-কালো যুগে সেই নাম জেফ থমসন, মাইলেক হোল্ডিং কিংবা ইমরান খান। ২০০৩ এর বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেসের করা ঘণ্টায় ১৬১.৩ কিলোমিটার গতির বোলটি এখন পর্যন্ত ক্রিকেট ইতিহাসে করা সর্বোচ্চ গতির বোল। সম্প্রতি সেই শোয়েব আকতারের শহর রাওয়ালপিন্ডিতেই বাংলাদেশি হিসাবে গতির নতুন ইতিহাস গড়লেন তরুণ ফাস্ট বোলার নাহিদ রানা। রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের তৃতীয় দিনে ঘণ্টায় ১৫২ কিলোমিটার স্পিডের একটি ডেলিভারি করেছেন তিনি। যেটা বাংলাদেশি পেস বোলারদের মধ্যে গতির হিসাবে সর্বোচ্চ । এছাড়াও ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটারের ক্লাবে বোল করা প্রথম বাংলাদেশি বোলারও নাহিদ রানা। শুধু নাহিদ রানাই নয়, এর আগেও আমাদের দেশের ক্রিকেটে অনেক গতিদানব এসেছে যারা নিয়মিত গড়ে ঘণ্টায় ১৪০-১৪৫ কিলোমিটার গতিতে বোল করেছেন। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ গতিতে বোল করা এমন সেরা পাঁচজন বোলার কারা এই তালকাটি নিশ্চই জানতে ইচ্ছে করবে। আজকের লেখাটি এবিষয়ই।

মাশরাফি বিন মর্তুজা

২০০১ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া মাশরাফি হলেন স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের সর্বোচ্চ গতির বোলার। এর আগে ৭০ এর দশকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ গতির বোলার ছিল মোবারক। যদিও তার বোলিং এ্যাকশন নিয়ে অনেকের আপত্তি ছিল। যাই হোক মাশরাফি তার ক্যারিয়ারের প্রথম দুই-তিন বছর ধারাবাহিকভাবে ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৪৫ কি.মি বেগে বোল করতেন।তার ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ গতির বলটি ছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যামিল্টন টেস্টে। সেখানে তিনি ঘণ্টায় ১৪৮.৭ কিলোমিটার গতির একটি বোল করে প্রতিপক্ষকে তাক লাগিয়ে দেন। ক্যারিয়ারে বারবার ইঞ্জুরি, অস্ত্রোপাচার, ফিটনেস ও বিভিন্ন কারণে পরবর্তী সময়ে মাশরাফি তার বোলিংয়ে গতির ঝড় অব্যাহত রাখতে পারেননি। তবুও তিনি ক্রিকেট দর্শকদের কাছে ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ নামে পরিচিত।

তাসকিন আহমেদ

তাসকিন আহমেদ বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রথম বোলার যিনি তার অভিষেক ম্যাচেই ভারতের বিপক্ষে পাঁচ উইকেট শিকার করেছিলেন।অসাধারণ গতি ও সুইং ঠিক রেখে বোল করায় ক্রিকেট ভক্তদের মনে স্থান করেছিলেন তিনি। সে ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে গড়ে ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার বেগে বোল করতেন। তার করা সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১৪৯.৩ কিলোমিটার।

রুবেল হোসেন

রুবেল হোসেনের নাম এলেই মনে পড়ে ২০১৫ বিশ্বকাপের ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের কথা। সেবার রুবেল হোসেনের বোলিং নৈপুণ্যে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের মঞ্চে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। রুবেল হোসেন একসময় নিয়মিত গড়ে ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৪৫ কিলোমিটার গতিতে বোল করতেন। সর্বোচ্চ গতিতে তিনি ঘণ্টায় ১৪৯.৫ কিলোমিটার বেগে বোল ছুঁড়েছিলেন।

এবাদত হোসেন

বাংলাদেশের ক্রিকেট জগতের এই ব্যতিক্রমী খেলোয়াড় নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেন একজন বিমানবাহিনীর সৈনিক হিসাবে। তখন তিনি নিয়মিত ভলিবল খেলতেন। সেখান থেকে অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর পরিশ্রমের ফলে বনে যান বাংলাদেশের পেস ইউনিটের অন্যতম ভিত্তি। উইকেট নিয়ে স্যালুট দিয়ে উদযাপনের জন্য এবাদত বাংলাদেশের ভক্তদের কাছে জনপ্রিয়।

তারই বোলিং নৈপুণ্যে বাংলাদশ ২০২২ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের ঘরের মাটিতেই প্রথম জয় পায়। এবছরেই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ম্যাচে তিনি তার ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ গতির বোল ডেলিভার করেন। বোলটির গতি ছিল ঘণ্টায় ১৪৯.৬ কিলোমিটার।

নাহিদ রানা

২১ বছর বয়সী রানা বাংলাদেশের ক্রিকেট পাড়ার নতুন বিস্ময়। রানার ক্রিকেট জগতে পরিচিতি ২০২৪ এর বিপিএলের মাধ্যমে। সেখানে খুলনা টাইগার্সের হয়ে খেলা এই বোলারের বোলিং ক্ষিপ্রতা ও গতি তাকে নির্বাচকদের নজরে আনতে সাহায্য করে।

মাত্র ৩টি টেস্ট ম্যাচ খেলেই রানা তার ঝুলিতে পুড়ে নিয়েছেন ১১টি উইকেট। ইকোনমিও মানানসই। দ্রুতগতির বোল করার পাশাপাশি বোলের লাইন-লেংথ ও সুইংয়ের ওপর দারূণ নিয়ন্ত্রণ আছে তারা।

রানা পাকিস্তানের বিপক্ষে হওয়া প্রথম টেস্টে এবাদতের সর্বোচ্চ গতির রেকর্ড ভেঙ্গেছেন। এই ম্যাচে তার সর্বোচ্চ গতির বোল ছিল ঘণ্টায় ১৪৯.৯ কিলোমিটার। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে সে পূরবর্তী ম্যাচে তারই গড়া রেকর্ড ভেঙে প্রথম বাংলাদেশি হিসাবে ঘণ্টায় ১৫২ কিলোমিটার গতিতে বোল করেন।

aurnobprashad456@gmail.com

শেয়ার করুন