Bangla
9 days ago

হাসিনার গুলি চালানোর নির্দেশ নিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদন প্রকাশ

প্রকাশিত হয়েছে :

সংশোধিত :

গত বছরের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমন করতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছে আল জাজিরা।

সম্প্রতি ফাঁস হওয়া একটি অডিও রেকর্ডিং বিশ্লেষণ করে সংবাদমাধ্যম বলছে, শেখ হাসিনা “যেখানেই পাবে, সেখানেই গুলি করতে” নিরাপত্তা বাহিনীকে ‘উন্মুক্ত নির্দেশ’ দিয়েছিলেন।

আল জাজিরার অনুসন্ধানী ইউনিট (আই-ইউনিট) জানায়, ফাঁস হওয়া কলগুলো ভয়েস-ম্যাচিং ও ফরেনসিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে যাচাই করা হয়েছে। এক ফোনালাপে হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, “আমি এখন প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি… তারা যেখানেই পাবে, সেখানেই গুলি করবে।”

অন্য একটি কথোপকথনে তিনি ঢাকা দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে জানান, হেলিকপ্টার থেকে আক্রমণ শুরু হয়েছে এবং কিছু জায়গায় বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেছে। যদিও সরকার সেই সময় আকাশ থেকে গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছিল, ঢাকার একটি হাসপাতালের চিকিৎসক শাবির শরীফ জানান, তাদের হাসপাতালের প্রবেশপথ লক্ষ্য করে হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানো হয়েছিল।

আল জাজিরা জানায়, ২০২৪ সালের জুনে কোটা আন্দোলনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ শুরু করলে সেটি দ্রুত দমনমূলক অভিযান ও সহিংসতায় পরিণত হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তথ্য অনুযায়ী, কয়েক সপ্তাহে প্রায় ১৪০০ জন নিহত এবং ২০ হাজারের বেশি আহত হন। এরপর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান।

এছাড়া, আন্দোলনের সময় রংপুরে নিহত আবু সাঈদের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট নিয়েও পুলিশ হস্তক্ষেপ করেছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। রংপুর মেডিকেল কলেজের এক চিকিৎসক জানান, পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার তথ্য বাদ দিতে তাকে রিপোর্ট পাঁচবার বদলাতে বলা হয়।

হাসিনার নজরদারি নেটওয়ার্ক ‘এনটিএমসি’-র মাধ্যমে কথোপকথনগুলো রেকর্ড করা হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। আল জাজিরার মতে, হাসিনা জানতেন যে তার কথোপকথন রেকর্ড করা হচ্ছে।

তদন্তে এসব তথ্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনে উপস্থাপন করা হতে পারে, যেখানে হাসিনাসহ কয়েকজন মন্ত্রী ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। বিচার শুরু হতে পারে আগস্টে।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, শেখ হাসিনা কখনো ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র’ ব্যবহারের কথা বলেননি এবং রেকর্ডিংগুলো ‘বিকৃত’ বা ‘জাল’।

শেয়ার করুন