জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে গণঅভ্যুত্থানের বিজয় পরিপূর্ণ হবে: ময়মনসিংহে সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স
প্রকাশিত হয়েছে :
সংশোধিত :
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, আমাদের বুকের ভিতর থেকে ফ্যাসিবাদের জগদ্বল পাথর হয়তো এক বছর আগে নেমে গেছে। আমরা এখন মুক্তকণ্ঠে কথা বলতে পারছি। ৫ আগস্ট আমরা গণঅভ্যুত্থানের বিজয়, সেটাকে অর্জন করতে পেরেছি। কিন্তু সে অর্জন ছিল আংশিক। পরিপূর্ণ বিজয় তখনই হবে যখন দেশে বহু আকাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারবো এবং জনগণের শাসন আমরা প্রতিষ্ঠিত করতে পারবো। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারবো। এর মধ্য দিয়েই আমরা পরিপূর্ণ বিজয় অর্জন করতে পারবো।
রবিবার দুপুরে নগরীর টাউন হল মোড়ে ময়মনসিংহ বিভাগীয় বিএনপির উদ্যোগে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তিতে গ্রাফিতি অঙ্কন ও গণসংগীত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রিন্স বলেন, গত এক বছর একটা দীর্ঘ সময়, আমরা ভাবিনি এত সময় লেগে যাবে। এখন দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা জেনেছি, খুব দ্রুতই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের একটি তারিখ ঘোষণা করবে। তারা ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রশাসনকে নির্বাচনমুখী প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। আমরা আশা করছি আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই দেশে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়েই আমরা যে জনপ্রিয় সংসদ পাবো বা সরকার পাবো, সেই সংসদ এবং সরকারের মধ্য দিয়েই এই গণঅভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা, সেটাকে আমরা বাস্তবায়নের দিকে নিয়ে যেতে পারবো।
তিনি বলেন, আমরা জাতীয়তাবাদী দল ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানকে বুকে ধারণ করি। '৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের প্রেরণার উৎস এবং '৯০-এর গণঅভ্যুত্থান আমাদের চেতনা। সেই চেতনাগুলোকে ধারণ করে আমরা আগামী দিনে নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই—যেটা হবে বৈষম্যবিহীন, সাম্য-মানবিক, মর্যাদা ও গণতন্ত্রের বাংলাদেশ। যেটা ছিল আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্যই আমরা জুলাই-আগস্ট মাসকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য শোক আর আনন্দের যে আবহ, সেটাকে সংমিশ্রণ ঘটিয়ে আমাদের কর্মসূচি পালন করছি।
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, বিএনপি বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। বহু মত ও পথের রাজনীতি বিএনপির হাত ধরেই বাংলাদেশে এসেছে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত ধরেই বাংলাদেশে এসেছে। আমরাও এটাকে লালন করতে চাই। তবে রাজনীতিতে অশোভন আচরণ, অশ্লীল বাক্য এবং কারও চরিত্র হনন করা রাজনীতির মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত না।
আমরা সকলের কাছে অনুরোধ করবো, রাজনীতির মাঠে এসে রাজনীতির খেলোয়াড় হিসেবে যদি আমরা নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চাই, তাহলে রাজনীতির যে শিষ্টাচার, সেটা আমাদের মধ্যে ধারণ করতে হবে এবং অপরের প্রতি সম্মান রেখেই আমাদের বক্তব্য উপস্থাপন করতে হবে শালীনতার সাথে। সেটা যদি শালীনতার বিপর্যয় ঘটে, তখনই কিন্তু সংঘাত, সংঘর্ষ এবং উসকানি সেখানে নিহিত থাকে, যেটা আমরা কয়েকদিন আগে দেখেছি। আমরা চাই না আমাদের শান্তির জনপদ এই ময়মনসিংহে এমন কিছু সৃষ্টি হোক।
এনসিপি আমাদের ময়মনসিংহে আসছে, আমরা তাদের স্বাগত জানাই। আমরা আশা করবো, এখানে যে রাজনৈতিক সহনশীলতা আছে, সেটা বজায় রাখতে তারা তৎপর থাকবে।
এসময় অনুষ্ঠানে বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন ও আবু ওয়াহাব আকন্দ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. জাকির হোসেন বাবলু, সদস্য সচিব মো. রোকনুজ্জামান সরকার রোকন, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক একেএম মাহবুবুল আলমসহ বিভাগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।