প্রকাশিত হয়েছে :
সংশোধিত :
চলটি বছরের জুন মাসে দেশে মোট ৬৮৯টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে, যাতে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৯৬ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ১ হাজার ৮৬৭ জন।
এসব দুর্ঘটনার ফলে মানবসম্পদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ হাজার ৪৬৩ কোটি ২০ লাখ টাকা।
আজ বুধবার (২ জুলাই) এই তথ্য জানিয়েছে সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। প্রতিষ্ঠানটি জাতীয় দৈনিক, অনলাইন পোর্টাল, ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, নিহতদের মধ্যে ১০৪ জন নারী (১৫.০৯%) এবং ১০৯ জন শিশু (১৫.৮২%)। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ছিল সবচেয়ে বেশি—২৫৬টি ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২২৮ জন, যা মোট নিহতের প্রায় ৩২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। পথচারী নিহত হয়েছেন ১২০ জন (১৭.২৪%), আর চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ১০৬ জন (১৫.২২%)। পাশাপাশি ১৮টি নৌ-দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ২১ জন এবং ১৩ জন আহত হয়েছেন। ৫৩টি রেলপথ দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ৪৪ জনের এবং আহত হয়েছেন ২৫ জন।
দুর্ঘটনাগুলোর স্থান অনুযায়ী বিশ্লেষণে দেখা যায়: জাতীয় মহাসড়কে ২৯৬টি (৪২.৯৬%), আঞ্চলিক সড়কে ২৪৩টি (৩৫.২৬%), গ্রামীণ সড়কে ৫৯টি (৮.৫৬%), শহরে ৮৭টি (১২.৬২%) এবং অন্যান্য স্থানে ৪টি (০.৫৮%) দুর্ঘটনা ঘটে।
ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে উঠে এসেছে: ১৬৭টি (২৪.২৩%) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৩০৬টি (৪৪.৪১%) চালকের নিয়ন্ত্রণ হারানো, ১২৪টি (১৮%) পথচারীকে ধাক্কা দেওয়া, ৭৬টি (১১.০৩%) পেছন থেকে আঘাত এবং ১৬টি (২.৩২%) অন্যান্য কারণ।
সময়ভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দুর্ঘটনার বেশিরভাগ ঘটেছে সকালে (২৬.২৬%) ও বিকেলে (২০.৭৫%)। দুপুরে ১৯.৪৪%, রাতে ১৯.৫৯%, সন্ধ্যায় ৮.৮৫% এবং ভোরে ৫.০৭% দুর্ঘটনা ঘটে।
বিভাগ অনুযায়ী ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা (২৯.৩১%) ও প্রাণহানি (২৬.৮৬%) ঘটেছে। এরপর রয়েছে চট্টগ্রাম (১৭.৪১%) ও রাজশাহী (১৫.২৩%) বিভাগ। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা (৩.৯১%) ও প্রাণহানি (৩.৫৯%) হয়েছে।
জেলা হিসেবে ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ২০২টি দুর্ঘটনায় ১৮৭ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়—মাত্র ৬টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১ জন। রাজধানী ঢাকায় ৬২টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত এবং ৮৭ জন আহত হয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন জানায়, এই আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ আন্তর্জাতিক রোড অ্যাসেসমেন্ট প্রোগ্রাম পদ্ধতি অনুসারে হিসাব করা হয়েছে। যেহেতু অনেক দুর্ঘটনার তথ্য প্রকাশ পায় না, তাই প্রকৃত ক্ষতি আরও ৩০% বেশি হতে পারে। তবে যানবাহন বা সম্পত্তি ধ্বংসের নির্ভরযোগ্য তথ্য না থাকায় প্রপার্টি ড্যামেজের আর্থিক মূল্য নির্ধারণ করা যায়নি।