বাড়তে পারে দুই বন্দরের উন্নয়ন বাজেট
মাতারবাড়ি ও মংলা বন্দর উন্নয়নে সরকারের গুরুত্বারোপ
প্রকাশিত হয়েছে :
সংশোধিত :
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর এবং মংলা সমুদ্রবন্দরকে শিপিং হাব হিসেবে গড়ে তুলতে গুরুত্বারোপ করছে। এ লক্ষ্যে আগামী বাজেটে প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি বরাদ্দ চেয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানায়, মাতারবাড়ি বন্দরের উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দ প্রায় দ্বিগুণ হতে পারে এবং দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত ও দুর্বল সংযোগের কারণে পিছিয়ে থাকা মংলা বন্দরের জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরের উন্নয়ন বাজেটে প্রায় ৪৫ গুণ বেশি অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে, কারণ দেশের বিদ্যমান দুই সমুদ্রবন্দর — চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের খসড়া গভীরতা সমুদ্রগামী বড় জাহাজের জন্য যথেষ্ট নয়।
এ ছাড়া বর্তমানে দুর্বল যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে অব্যবহৃত অবস্থায় থাকা মংলা বন্দরের কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো আঞ্চলিক যোগাযোগ এবং বৈদেশিক বাণিজ্য বাড়ানো। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় ৮০ শতাংশ বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পন্ন হয় সবচেয়ে বড় সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে।
পরিকল্পনা কমিশনের (পিসি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় আগামী অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) মোট ১০ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছে, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির তুলনায় ৪৮ শতাংশ বেশি।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে এ খাতে ৭ হাজার ৫৯ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল।
এ বিষয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, "মাতারবাড়ি এবং মংলা বন্দরের উন্নয়নকাজের জন্য আগামী বাজেটে বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব করেছি। কারণ এই দুটি বন্দর আমাদের উন্নয়ন কর্মসূচির অগ্রাধিকারভুক্ত।"
তিনি আরও বলেন, "মংলা বন্দর দীর্ঘদিন ধরে পিছিয়ে রয়েছে। আমরা এটিকে পুনরুজ্জীবিত করতে চাই, যাতে বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশ — ভারত, নেপাল এবং ভূটানের সঙ্গে আঞ্চলিক সংযোগ বাড়ানো যায়।"
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা জানান, মাতারবাড়ি বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হয়ে উঠবে। এটি ভবিষ্যতে বৈশ্বিক পণ্য পরিবহনকারীদের জন্য আন্তর্জাতিক ট্রান্সপোর্ট হাবে পরিণত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, "আমরা ইতোমধ্যে মংলা বন্দরের উন্নয়নের জন্য একটি চীনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছি।"
এছাড়া তিনি বলেন, "বাংলাদেশ সরকার নেপাল ও ভূটানকে মংলা বন্দর ব্যবহার করে তাদের বৈদেশিক বাণিজ্য পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে।"
তিনি জানান, "আমরা ইতোমধ্যে নতুন রেললাইন নির্মাণ এবং বিদ্যমান সড়ক ও সেতু সম্প্রসারণের মাধ্যমে বন্দরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছি। এখন বন্দরের লজিস্টিক সুবিধা উন্নয়নে কাজ করছি।"
এদিকে মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপিতে মাতারবাড়ি বন্দরের উন্নয়নকাজের জন্য ২ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এডিপিতে মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়নকাজের জন্য ১ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল।
kabirhumayan10@gmail.com