Bangla
4 days ago

মিষ্টি আলুতে যেসব পুষ্টি গুণাগুণ রয়েছে?

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

প্রকাশিত হয়েছে :

সংশোধিত :

শীতকালীন সবজি হিসেবে পরিচিত হলেও মিষ্টি আলু বর্তমানে প্রায় সারা বছরই বাজারে পাওয়া যায়। খেতে যেমন সুস্বাদু, ঠিক তেমনি পুষ্টিগুণেও অনন্য এই সবজি। রান্না ছাড়াও সেদ্ধ কিংবা পুড়িয়ে খাওয়া যায় বিধায় নাস্তা হিসেবেও মিষ্টি আলুর বেশ সমাদর রয়েছে বাংলাদেশে।

মিষ্টি আলুতে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি-৬, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, এবং ম্যাঙ্গানিজসহ আরও বেশ কিছু পুষ্টি উপাদান।

ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচারের (ইউএসডিএ) তথ্যমতে, প্রতি ১০০ গ্রাম মিষ্টি আলুতে ৮৬ কিলোক্যালরি এবং ০.১ গ্রাম ফ্যাট রয়েছে। এছাড়া মিষ্টি আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা ফ্রি র‍্যাডিকেলের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে।

একজন ব্যক্তি নিয়মিত এটি খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ নানা ধরনের উপকারিতা পাবেন।

মিষ্টি আলু চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। তাই যাদের নিয়মিত মোবাইল কিংবা কম্পিউটারে কাজ করতে হয় তারা মিষ্টি আলু খেতে পারেন। এতে করে চোখের উপর আসা বাড়তি চাপ অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব হবে। এছাড়া ত্বক ভালো রাখতেও মিষ্টি আলু খাওয়ার অভ্যাস করা যেতে পারে।

শুধু চোখ এবং ত্বক নয়, মস্তিষ্কের সুস্থতায়ও দারুন কাজ করে মিষ্টি আলু। এছাড়া শরীরের বিপাক প্রক্রিয়া ঠিক রাখতেও অবদান রাখে এই সবজি

বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রাণঘাতী ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। বাংলাদেশেও এই হার প্রতিনিয়ত বাড়ছে। মিষ্টি আলুতে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় তা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে স্তন ক্যান্সার রোধে মিষ্টি আলু খুবই উপকারি।

এছাড়া পাকস্থলীর ক্যান্সার এবং আলসারের ঝুঁকি কমাতেও এটি সাহায্য করে। অন্যদিকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়াকলাপ ঠিক রাখতেও অবদান রাখে মিষ্টি আলু।

আমরা জানি, শিশুদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য পুষ্টিকর খাবারের কোনও বিকল্প নেই। তবে প্রায়ই শিশুরা ঘরের খাবারের পরিবর্তে বাইরের প্রক্রিয়াজাত খাবারের প্রতি বেশি ঝুঁকে পড়ে। আর তাই তাদের জন্য মিষ্টি আলু হতে পারে একটি মুখরোচক খাবার। কারণ মিষ্টি স্বাদের জন্য এটি খেতে যেমন সুস্বাদু, ঠিক তেমনি পুষ্টি উপাদানে ভরপুর থাকে বিধায় তা শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশেও সহায়তা করে।

এছাড়া যারা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য মিষ্টি আলু একটি সমাধান হতে পারে। কারণ এটি বিপাক এবং রেচন ক্রিয়ায় সাহায্য করে থাকে।

মিষ্টি আলুতে ক্যালরির পরিমাণ কম থাকে। অন্যদিকে এতে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে বিধায় অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরিয়ে রাখতে পারে। ফলে সহজে ক্ষুধা লাগে না যা শরীরের বাড়তি ওজন রোধে সাহায্য করে৷ তাই যারা অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চিন্তাগ্রস্ত কিংবা ওজন কমিয়ে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে চান তারা মিষ্টি আলু খেতে পারেন।

তবে পুষ্টিকর হলেও অন্যান্য খাবারের মতো মিষ্টি আলু খাওয়ার ক্ষেত্রেও কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে।

কারণ তা না হলে স্বাস্থ্য জটিলতায় পড়তে হতে পারে। যেমন- মিষ্টি আলুতে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে বিধায় এটি রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই কিডনি রোগীদের জন্য মিষ্টি আলু কম খাওয়াই মঙ্গলজনক।

বাংলাদেশের একটি জাতীয় দৈনিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ নিশাত শারমিন নিশি বলেন, "মিষ্টি আলু অত্যধিক পরিমাণে খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো নয়। বিশেষ করে এটি খোসাসহ বেশি পুড়িয়ে খেলে তা হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি আলু খেলে বদহজম কিংবা পেটে ব্যাথা হতে পারে।"

অন্যদিকে অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি আলু খেলে তা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এটি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। তবে পরিমিত মাত্রায় খেলে সবার জন্যই মিষ্টি আলু অত্যন্ত উপকারি একটি খাদ্য উপাদান হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

tanjimhasan001@gmail.com

শেয়ার করুন