প্রকাশিত হয়েছে :
সংশোধিত :
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, ইসরায়েলের প্রায় দুই মাসের অবরোধের ফলে গাজা উপত্যকায় তাদের খাদ্যের মজুদ সম্পূর্ণ শেষ হয়ে গেছে। এতে উপত্যকার লাখ লাখ ফিলিস্তিনির জন্য প্রধান খাদ্য সরবরাহের পথ বন্ধ হয়ে গেল।
এক বিবৃতিতে ডব্লিউএফপি জানায়, গাজায় তারা যেসব দাতব্য রান্নাঘরকে সহায়তা করত, সেগুলোতে শেষ চালান পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এই রান্নাঘরগুলোও অল্প ক’দিনের মধ্যেই খাদ্যশূন্য হয়ে পড়বে বলে জানায় সংস্থাটি। এ খবর জানিয়েছে এপি।
জাতিসংঘ জানায়, অবরোধের কারণে অন্য সব উৎস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গাজার প্রায় ২০ লাখ মানুষের মধ্যে ৮০ শতাংশই এসব দাতব্য রান্নাঘরের খাবারের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
ডব্লিউএফপির মুখপাত্র আবির এতেফা জানান, সংস্থাটি গাজায় ৪৭টি রান্নাঘরকে সহায়তা দিচ্ছিল, যারা প্রতিদিন ৬ লাখ ৪৪ হাজার গরম খাবার বিতরণ করছিল।
এই রান্নাঘরগুলো বন্ধ হয়ে গেলে কতগুলো চালু থাকবে, সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যায়নি। তবে এতেফা জানান, ডব্লিউএফপি-সহায়ক রান্নাঘরগুলোই গাজায় প্রধান খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র ছিল।
গত ২ মার্চ ইসরায়েল গাজায় খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধসহ সব ধরনের সরবরাহ প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। এরপর দুই সপ্তাহ পর হামাসের সঙ্গে দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে আবারও হামলা ও অভিযান চালায়।
ইসরায়েল দাবি করেছে, হামাসের হাতে বন্দিদের মুক্তির চাপ তৈরির জন্যই তারা এই অবরোধ জারি রেখেছে। তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো একে ‘ক্ষুধা ব্যবহারের কৌশল’ এবং সম্ভবত যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
ইসরায়েল বলছে, যুদ্ধবিরতির সময় যে ত্রাণ ঢুকেছিল, তা যথেষ্ট ছিল। তারা হামাসের বিরুদ্ধে ত্রাণ নিজেদের কাজে লাগানোর অভিযোগ তুলেছে। তবে মানবিক ত্রাণকর্মীরা এ অভিযোগ নাকচ করে বলেছেন, জাতিসংঘ কঠোরভাবে ত্রাণ বিতরণ তদারকি করে।
তারা জানান, যুদ্ধবিরতির সময় যে পরিমাণ ত্রাণ গাজায় ঢুকেছিল, তা দীর্ঘ সময়ের যুদ্ধের বিপুল চাহিদার তুলনায় খুবই অপ্রতুল ছিল।
নতুন করে কোনো খাদ্য ও পণ্য প্রবেশ না করায় গাজার বাজার থেকে মাংস, ডিম, ফলমূল, দুগ্ধজাত খাবার এবং বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি উধাও হয়ে গেছে। অল্প কিছু যেটুকু পাওয়া যায়, তার দাম কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। অধিকাংশ পরিবার এখন শুধু টিনজাত খাবার খেয়েই বেঁচে আছে।