
প্রকাশিত হয়েছে :
সংশোধিত :

অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সবচেয়ে বেশি রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, এখন মানুষ খোলামেলা লিখছে, সমালোচনা করছে এমনকি গালিও দিচ্ছে—কাউকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না। কেউ কেউ বলছেন, স্বৈরাচারের সহযোগীদের প্রতি নরম আচরণ করা হচ্ছে। তবে আমরা আইনের বাইরে গিয়ে কিছু করতে পারি না।
তিনি আরও বলেন, আমরা কোনো সাংবাদিকের কলম ভাঙিনি, কোনো প্রেসে তালা দিইনি। কোনো গণমাধ্যম তাদের কর্মীকে চাকরিচ্যুত করলে সেই প্রতিষ্ঠানের সামনে প্রতিবাদ করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠকে লিখতে এবং স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ শুক্রবার (২ মে) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের জুলাই বিপ্লব স্মৃতি হলে ‘জুলাই বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশ: গণমাধ্যমের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি।
শফিকুল আলম বলেন, গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার সরকারের আমলে সাংবাদিকদের ভূমিকা মূল্যায়ন করে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরিতে জাতিসংঘের সহযোগিতা চাওয়া হবে। জাতিসংঘের কাছে অনুরোধ করা হবে, বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন করে বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচন, আইসিটি ট্রাইব্যুনালের রায়, মাওলানা সাঈদীর মামলা, শাপলা চত্বরের ঘটনা, জুলাই গণহত্যাসহ বড় বড় ঘটনার সময় সাংবাদিকতার ভূমিকা বিশ্লেষণ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করতে।
তিনি আরও বলেন, ভারতসহ বিদেশি মিডিয়া ও আওয়ামী লীগের অপপ্রচার বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এখন মানুষ নিউজ না পড়ে ভিডিও বেশি দেখে। সেই সুযোগ নিয়ে ভুয়া ভিডিও ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করা হচ্ছে। একটি ভিডিও ছড়িয়ে বলা হয়েছিল জামায়াত কর্মীরা এক ছেলেকে জবাই করেছে, অথচ সেটি ল্যাটিন আমেরিকায় ড্রাগ নিয়ে সংঘটিত ঘটনা ছিল। এমন অপপ্রচারের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘাত তৈরির চেষ্টা চলছে। সামনে নির্বাচন, তাই গণমাধ্যমকে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। প্রতিটি সংবাদমাধ্যমে ফ্যাক্টচেকিং সেল থাকা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকতায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছিল। আইনটি কিছু মানুষকে নিরাপত্তা দিতে তৈরি হলেও বিগত সরকার সাংবাদিকদের দমন করতে এটি ব্যবহার করেছে। অন্তর্বর্তী সরকার মুক্ত সাংবাদিকতার পক্ষে এবং এই আইন বাতিল করা হবে।
তিনি জানান, গণমাধ্যমে ক্ষমতাশালীদের হস্তক্ষেপ ঠেকাতে সরকার একটি গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন গঠন করেছে, যা তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সুপারিশ বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। এগুলো কার্যকর হলে সাংবাদিকরা আরও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবেন।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সিএমইউজে সেক্রেটারি সালেহ নোমান, প্রেস ক্লাবের সদস্য গোলাম মাওলা মুরাদ, সিএমইউজে সভাপতি মোহাম্মদ শাহনওয়াজ, পিপলস ভিউ সম্পাদক ওসমান গণি মনসুর, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নসরুল কদির, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ডা. খুরশীদ জামিল, অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের জানে আলম সেলিম, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুস সাত্তার এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক শহীদুল হক।

For all latest news, follow The Financial Express Google News channel.