প্রকাশিত হয়েছে :
সংশোধিত :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় এক যুবক সোহান শাহকে গুলি করে হত্যা করা হয়, এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় 'শেখ বশির উদ্দিন ভূঁইয়া' নামের একজন আসামি হিসেবে তালিকাভুক্ত রয়েছেন। গতকাল (১০ নভেম্বর) শপথগ্রহণকারী তিন উপদেষ্টার একজন সেখ বশির উদ্দিনের নামের সাথে কিছুটা মিল রয়েছে। এমনকি তাঁর বাবার নামও আসামির বাবার নামের সাথে আংশিকভাবে মেলে। এ কারণে প্রশ্ন উঠেছে, 'শেখ বশির উদ্দিন ভূঁইয়া' নামে কি সেখ বশির উদ্দিনকে আসামি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সেখ বশির উদ্দিন নিজে বলেন, নামের কিছু মিল ও অমিল থাকলেও তিনি নিশ্চিত নন, মামলাটি তাঁর বিরুদ্ধে হয়েছে কি না। পুলিশ জানিয়েছে, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
নিহত সোহান শাহর মা সুফিয়া বেগম বলেছেন, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশ তাঁর ছেলের হত্যার জন্য দায়ী। তবে তিনি নিশ্চিত না, আসামিরা কারা, এবং তাদের নামও জানেন না। তিনি শুধু তাঁর ছেলের হত্যার বিচার চান।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, ১৮ অক্টোবর রাজধানীর রামপুরা থানায় এই মামলা রেকর্ড করা হয়, যেখানে ৫৭ জন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং আরও ২০০ থেকে ৩০০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। ৫৭ আসামির মধ্যে ৪৯ নম্বরে 'শেখ বশির উদ্দিন ভূঁইয়া' নাম রয়েছে, যিনি আওয়ামী লীগ নেতা বলে পরিচিত এবং তাঁর বাবার নাম শেখ আকিজ উদ্দিন ভূঁইয়া।
এদিকে, সেখ আফিল উদ্দিন ভূঁইয়ার নামও মামলার ৪৮ নম্বরে রয়েছে, যিনি সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন। সেখ আফিল উদ্দিনের বাবাও সেখ আকিজ উদ্দিন।
সেখ আকিজ উদ্দিন ছিলেন আকিজ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা, যা বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে একটি। সেখ বশির উদ্দিন, যিনি আকিজ-বশির গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, তিনি সম্প্রতি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন। এরপর থেকে মামলাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে সেখ বশির উদ্দিন বলেন, 'আমি পুরোপুরি জানি না, আমাদের লিগ্যাল টিম বিষয়টি দেখছে। নাম ও বাবার নামের কিছু মিল থাকলেও আমি নিশ্চিত না, এটি আমার বিরুদ্ধে হয়েছে কি না। যদি নিশ্চিত হই, তবে আইনিভাবে মোকাবিলা করা হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'যারা আন্দোলন করেছেন, তাদের আবেগের সাথে আমি একমত, তবে তাদের তথ্য সঠিক নয়।'
মামলার এজাহারের তথ্য অনুযায়ী, সোহান শাহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন এবং তিনি মাগুরা জেলার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি ভারগো গার্মেন্টস কারখানায় মেকানিক্যাল প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৯ জুলাই, ২০২৩ সালে রাজধানীর রামপুরা সিএনজি স্টেশনের সামনে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হন।