Bangla
8 days ago

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বিতর্কিত ধারা বাতিল করলো হাইকোর্ট

প্রকাশিত হয়েছে :

সংশোধিত :

সংবিধানের বহুল আলোচিত পঞ্চদশ সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত কিছু বিষয়কে অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে। এতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত বিধানসহ আরও কয়েকটি অনুচ্ছেদকে সংবিধানবিরোধী বলা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর স্বাক্ষরের মাধ্যমে ১৩৯ পৃষ্ঠার এই রায় প্রকাশিত হয়। এর আগে, ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এই রায় প্রদান করেছিলেন।

রায়ে বলা হয়েছে, গণতন্ত্র বাংলাদেশের সংবিধানের মূল কাঠামোর অংশ এবং এটি কার্যকর হয় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে। কিন্তু বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে দলীয় সরকারের অধীনে ভোট গ্রহণে জনগণের অভিপ্রায় প্রতিফলিত হয়নি এবং জনমনে আস্থা সৃষ্টি হয়নি। এর ফলেই ঘটে জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থান।

হাইকোর্ট উল্লেখ করেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জনগণের চাহিদা অনুযায়ী সংবিধানে যুক্ত হয়েছিল এবং এটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অংশ হয়ে উঠেছিল।

এই রায়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে যুক্ত অনুচ্ছেদ ২০ ও ২১, এবং ৭(ক), ৭(খ), ও ৪৪(২) অনুচ্ছেদকে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হিসেবে বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। আদালত বলেছে, এসব অনুচ্ছেদ গণতন্ত্রের মতো একটি মৌলিক কাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

তবে আদালত পুরো পঞ্চদশ সংশোধনীকে বাতিল করেনি। যেসব বিধান এখনো বহাল রয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে ভবিষ্যতে জাতীয় সংসদ জনগণের মতামতের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে পারবে বলে মন্তব্য করেছে আদালত। এর মধ্যে জাতির পিতার স্বীকৃতি এবং ২৬ মার্চের ভাষণের মতো বিষয়গুলো রয়েছে।

গণভোট সংক্রান্ত বিষয়ে আদালত জানিয়েছে, ১৯৯১ সালের দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত গণভোটের বিধান পরবর্তীতে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বাতিল করা হয়, যা ছিল সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের অংশ। আদালত মনে করেছে, গণভোটের বিধান বিলুপ্তি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর পরিপন্থী। ফলে তা বাতিল করে ১৪২ অনুচ্ছেদ পুনর্বহাল করা হয়েছে।

এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন। রিটকারী সংগঠন সুজনের পক্ষে শুনানি করেন ড. শরিফ ভূঁইয়া। বিএনপির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার কায়সার কামালসহ অন্যরা। জামায়াত, ইনসানিয়াত বিপ্লব ও অন্যান্য আবেদনকারীদের পক্ষেও বিভিন্ন আইনজীবী অংশ নেন। 

শেয়ার করুন