প্রকাশিত হয়েছে :
সংশোধিত :
কক্সবাজারের টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে সাগরে ঢেউয়ের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে, ফলে মেরিন ড্রাইভে আবারও ভাঙন ধরেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, জোয়ারের ঢেউয়ের আঘাতে সাবরাং ইউনিয়নের বাহারছড়া ঘাট থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত সড়কের অন্তত ১৫টির বেশি স্থানে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। এতে যান চলাচলে বেড়েছে দুর্ভোগ এবং রয়েছে ঝুঁকিও।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভাঙনের কারণে এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এখানে কয়েক হাজার একর জমিতে চাষাবাদ হয়। সেগুলোতে লবণাক্ত পানি ঢুকে পড়লে ফসলের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ফতেআইল্যে পাড়া এলাকায় মেরিন ড্রাইভের পশ্চিম পাশে বসানো জিও ব্যাগের বাঁধ ধসে পড়েছে। এর বাইরে কিছু এলাকায় সড়ক ভেঙে পূর্ব পাশে চাষের জমিতে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ছে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, সড়ক পুরোপুরি ভেঙে গেলে পাশের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এর আগেও ২০২৩ সালের আগস্টে ও চলতি বছরের মে মাসে এই অংশে জোয়ারের প্রভাবে ভাঙন দেখা দিয়েছিল। তখন সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন (ইসিবি) জিও টিউব দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান জানান, উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। নিম্নচাপটি কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরের পূর্ব-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় এক থেকে তিন ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস এবং দমকা হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, এলাকাবাসীর কাছ থেকে ভাঙনের খবর পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। ভাঙন রোধে দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, মেরিন ড্রাইভে ভাঙনের পেছনে একটি বড় কারণ জায়গা ভরাটে সমুদ্র থেকে বালু তোলা। তাঁরা জানান, ট্যুরিজম পার্ক গড়ে ওঠায় জমির দাম বাড়ায় প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে বালু তুলে জমি ভরাট করছেন। এতে সড়কের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ছে।
তারা আরও জানান, মেরিন ড্রাইভের পূর্ব পাশে হোটেল-মোটেল গড়ার তোড়জোড় চলছে। অনেক প্রভাবশালী অবৈধভাবে সৈকতের বালু তুলছেন। এসব কারণে এখন একটু বড় ঢেউ এলেই সড়ক ভাঙছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ কক্সবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন খালেদ চৌধুরী বলেন, মেরিন ড্রাইভ সড়কটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইসিবির তত্ত্বাবধানে রয়েছে। টেকনাফ অংশে ভাঙনের খবর পেয়েছি। ইসিবি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।