প্রকাশিত হয়েছে :
সংশোধিত :
সুন্দর স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক কে না চায়! তার উপরে এসেছে গরমকাল। রোদের মাঝেই ধূলোবালি সাথে নিয়েই রোজকার দিনযাপন। ত্বক যেন নিমেষেই দীপ্তি হারায়। আর সেই জন্যে কতো শতো প্রসাধনের ব্যবহার আর পার্লারে ছোটাছুটি। কিন্তু বাহিরের এই প্রয়াসের থেকে ত্বকের ভেতর থেকে পুষ্টি বেশি জরুরি। ত্বক তার চাহিদা অনুযায়ী খাবার থেকে পুষ্টি নিয়ে চকচকে হয়ে ওঠতে পারে। তাই জেনে নিতে হবে যেসব খাবার গ্রহণের অভ্যাসের ফলে সহজে ফিরে পাওয়া যাবে জেল্লাদার মুখ।
তাজা ফল
ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখার সিংহভাগ দায়িত্ব পড়ে ফলমূলের উপর। কমলা, আপেল, আঙ্গুর, তরমুজ, স্টব্রেরি প্রভৃতি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলগুলি ত্বকের জলীয়ভাব ধরে রেখে ত্বককে কোমল ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে।
ফলের ফাইবার ও এন্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে ফ্রি রেডিকেলের ক্ষতি থেকে দূরে রাখে। চামড়ার বয়সী ছাপ কমিয়ে কমনীয় রাখে। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা বাড়ায়। প্রতিদিনই তাই ভিটামিন সি জাতীয় ফল গ্রহণ করা উচিত। কমলার রস, ডালিমের রস, বিটের জুস, শসার জুস, কলার স্মুদি খাওয়া যেতে পারে, ত্বকের জন্য খুবই ভালো। ত্বকের লাবণ্য বৃদ্ধি করে।
শাকসবজি
সবুজ শাকসবজি সবরকমের খনিজে ঠাসা হয়। কোষাবলির অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া সচল রাখে। পালং, ব্রোকলি, ক্যাপসিকাম, পেঁয়াজ কলির মতন সতেজ সবজিগুলো ভালো পরিমাণে ত্বকে অক্সিজেন সরবরাহ করে।
শাক পাতায় থাকা লিউটিন আর জিয়াজেন্থিন ইউভি রশ্মির ক্ষতি অনেকটা পূরণ করার চেষ্টা করে। তাই রোজকার খাদ্য তালিকায় এদের উপস্থিতি ত্বকের লাবণ্য অনেকখানি বাড়াবে।
টমেটো আর গাজরের কথা আলাদা করে না বললেই নয়। টমেটোতে আছে উজ্জ্বল ত্বকের সাধন। ভিটামিন সি ও পটাশিয়ামের ভালো উৎস এটি। আছে লাইকোপেন নামের এন্টি অক্সিডেন্ট, যা এক কথায় প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন, ত্বকের দাগ, বলিরেখা, শুষ্কভাব ও লালচে ভাব কম করে।
এক সমীক্ষায় দেখা যায়, যারা রোজ টমেটো খান তারা অন্যদের তুলনায় ৩৩ শতাংশ কম রোদে পোড়েন। আর গাজরের ভিটামিন এ ত্বকের টানটান ভাব ধরে রেখে মসৃণতা ফিরিয়ে আনে। আর এতে থাকা ক্যারোটিন রোগ প্রতিরোধী হিসেবে কাজ করে।
শুকনো ফল আর বীজ
হাতের কাছেই রাখা যেতে পারে একটি কাঁচের বয়াম। যাতে ঠাসা থাকবে বাদাম, কাজু, কিসমিস, আখরোট, বেরি, চেরি, খেজুরের মতন শুকনো ফলগুলি। বয়াম খুললেই মুখের ভেতর চলে যাবে মিষ্টিস্বাদ।
খেতে শুধু স্বাদুই নয়, ত্বকে কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়, জেল্লাদার ভাব আনে।
চিয়া বীজ, তিল, তিসি বীজ, সূর্যমুখী বীজ, কুমড়ো বীজ, তোকমাদানা, ছোলা এগুলিতে প্রচুর ভিটামিন ই থাকে, যা ত্বকের জন্যে খুব উপকারী।
নানান রকম খাবারের সাথে এদের গ্রহণ করা যেতে পারে। অথবা নানান রকম বীজ একসাথে গুঁড়ো করে বানিয়ে নেয়া যেতে পারে হাতের কাছেবায়োটিন লাড্ডু।
ডার্ক চকলেট
কালো চকলেট খেতে একটু বিদঘুটে হলেও ত্বকের যত্নে বেশ লাভদায়ক। কোকোর এন্টিঅক্সিডেন্ট ত্বক সুস্থ ও উজ্জ্বল রাখে। চকোলেটের চিনির পরিমাণ যত কম হবে তা ত্বকের জন্য তত ভালো। তাই এমন চকোলেট বেছে নিতে হবে যাতে সত্তর শতাংশের বেশি কোকো থাকে। খেতে তিতকুড়ি লাগবে, কিন্তু সুন্দর ত্বক পেতে গেলে একটু বিরক্তি সয়ে নেয়াই ভালো বরং।
সবুজ চা
সবুজ শুধুই চা নয়, সৌন্দর্য রক্ষার বেশ ভালো টোটকা। শুধু চুমুকেই ত্বক সুন্দর। চা গাছের পাতায় থাকা নানাবিধ এনজাইম, এন্টিঅক্সিডেন্ট, ফ্ল্যাভেনয়েড, আমিনো এসিড, ফোলেট, ক্যাফেইন এর মতন ফাইটোকেমিকেল গুলি ত্বকে জমে থাকা টক্সিন দূর করে। ত্বক ভেতর থেকে উজ্জ্বল হয়। চায়ের নির্যাস চোখের নিচে জমা কালো দাগ কমিয়ে ফেলে।
ডিটক্স পানীয়
সুন্দর ত্বক পেতে রোজ সকালে একটা নতুন অভ্যাসের শুরু হোক আদা-লেবুর জলে চুমুক রেখে। হালকা গরম পানিতে একটু আদার রস আর কয়েক ফোঁটা লেবু দিয়ে গুলে নিলেই তৈরি হবে ডিটক্স পানীয়। ত্বকের সব দূষণ করে ত্বকের সুস্বাস্থ্য ধরে রাখবে। ত্বক হবে দীপ্তিময়।
roysushmitadiba@gmail.com