Published :
Updated :
সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির চাপায় নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসানের মৃত্যুর ঘটনায় দ্বিতীয় দিনের মত রাজধানীতে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর।
ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে অনেক এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে; যানজটে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে অন্যান্য এলাকাও।
নটর ডেম কলেজের কয়েকশ শিক্ষার্থী সকালে মতিঝিল হয়ে গুলিস্তানে দুর্ঘটনাস্থলের কাছে অবস্থান নিলে সেখানে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা পরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়।
সেখানে তারা স্লোগান দিতে থাকেন: ‘মেয়র তোমার দেখা চাই, নাঈম হত্যার বিচার চাই’।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ট্রাফিক) নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানিয়েছে, ফার্মগেট, গুলিস্তান ও শান্তিনগরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে রাস্তা বন্ধ। এছাড়া মিরপুর ১৩ নম্বর এলাকায় বিক্ষোভ করছে পোশাক শ্রমিকরা।
ফলে মতিঝিল, পল্টন, কাকরাইল, শান্তিনগর, মালিবাগ, ফার্মগেট, মিরপুর সড়ক, বিমানবন্দর সড়ক ব্যাপক যানজট দেখা দেওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা বেইলি রোডের মুখে শান্তিনগরের রাস্তা আটকে বিক্ষোভ করলে সেখানে কয়েক ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।
বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। হলিক্রস, বিজ্ঞান কলেজ ও ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টার দিকে ফার্মগেট এলাকায় সড়ক অবরোধ করলে সেখানে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সেখানে পুলিশ সদস্যদের বহনকারী একটি বাস তারা এক ঘণ্টা আটকে রাখেন চালক লাইসেন্স দেখাতে না পারার কারণে।
এয়ারপোর্ট-গুলিস্তান পথে চলাচলকারী বাসের চালক ইব্রাহিম মিয়া বলেন, “সকালে প্রথম ট্রিপ নিয়ে গুলিস্তানে আসছি। এরপর আর এই এলাকা থেকে বের হতে পারিনি। সাংঘাতিক যানজট।
উবারে ভাড়ার গাড়ি চালক আশরাফ আলী বলেন, সকালে একজনকে গুলশানে নামিয়ে দিয়ে নিউ মার্কেটের যাত্রী তুলেছিলেন। কিন্তু পৌঁছাতে পারেননি। পরে বিজয় সরণি দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে আগারগাঁও চলে গেছেন।
দুপুরে গুগলের ম্যাপে, মতিঝিল, ফার্মগেটের আশপাশের সব এলাকার রাস্তাগুলো গাড় লাল দেখা যায়। অর্থাৎ ওইসব এলাকায় যানজট ছিল তখন। ফার্মগেট ও গুলিস্তানের রাস্তা বন্ধ থাকার চিহ্নও দেখা যায় গুগল ম্যাপে।
বুধবার দুপুরে গুলিস্তান হল মার্কেটের সামনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লার ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ যায় ১৭ বছরের তরুণ নাঈমের। নটর ডেম কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন তিনি।
কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দা শাহ আলমের ছেলে নাঈম দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট। তার বাবা নীলক্ষেতের একটি বইয়ের দোকানের মালিক।
নাঈমের মৃত্যুর পর তার সহপাঠিরা দুপুর থেকে বিকাল অবধি গুলিস্তানে সড়ক আটকে বিক্ষোভ দেখায়। পরে শিক্ষকরা বুঝিয়ে তাদের সরিয়ে নেন।
ঘটনার পরপরই সিটি করপোরেশনের ওই গাড়িচালক রাসেল খানকে আটক করা হয়। তবে তিনি সিটি করপোরেশনের নিয়োগপ্রাপ্ত গাড়িচালক নন বলে পল্টন থানার ওসি মো. সালাউদ্দিন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সড়ক পরিবহন আইনে করা মামলায় রাসেলকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে।