Bangla
2 years ago

যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টের টিকটক অ্যাকাউন্ট বন্ধ 

ফাইল ছবি (সংগৃহীত)
ফাইল ছবি (সংগৃহীত)

Published :

Updated :

চীনের কাছে ‘স্পর্শকাতর’ ডেটা খোয়ানোর শঙ্কায় নিজস্ব টিকটক অ্যাকউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট। চালু করার কয়েক দিনের মধ্যে লক করে দেওয়া হয়েছে অ্যাকাউন্টটি, মুছে দেওয়া হয়েছে অ্যাকাউন্টের যাবতীয় কনটেন্ট। 

বিবিসি জানিয়েছে, পার্লামেন্টের সদস্যদের দাবির মুখেই অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোনো ডেটা চীন সরকারকে দেওয়া হচ্ছে না – টিকটকের কাছে এমন নিশ্চয়তা দাবি করছেন যুক্তরাজ্যের জনপ্রতিনিধিরা। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের। 

টিকটকের মূল কোম্পানি বাইটড্যান্স একটি চীনা প্রতিষ্ঠান। পশ্চিমা দেশগুলোর সন্দেহের মুখে কোম্পানিটি দাবি করে আসছে, চীন সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই তাদের ওপর। 

অন্যদিকে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেইজিং ও লন্ডনের সম্পর্কে টানাপোড়েন আরও বেড়েছে। গেল বছরে যুক্তরাজ্যের বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধির ওপর চীন নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় দুই দেশের রেষারেষি আরও বেড়েছে বলে মন্তব্য বিবিস’র। 

যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টের এক মুখপাত্র টিকটক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার খবর নিশ্চিত করে বলেছেন, “সদস্যদের প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে আমরা যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টের পাইলট টিকটক অ্যাকাউন্টটি আগেভাগেই বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” 

“অ্যাকাউন্টটি একটি পরীক্ষামূলক উদ্যোগ ছিল। এর মাধ্যমে মাধ্যমে পার্লামেন্টের প্রাসঙ্গিক কনটেন্ট তরুণ দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর সম্ভাব্য উপায় পরীক্ষা করে দেখছিলাম আমরা।” 

এ প্রসঙ্গে টিকটকের এক মুখপাত্র বিবিসিকে বলেছেন, ব্রিটিশ পার্লামেন্ট অ্যাপের ব্যবহারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করার উদ্যোগটি বন্ধ করে দেওয়ায় তারা ‘আশাহত’।  

ডেটা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত পার্লামেন্ট সদস্যদের নিশ্চিন্ত করতে, ‘প্ল্যাটফর্ম নিয়ে যে কোনো ভুল বোঝাবুঝি’ দূর করতে রাজি আছে বলে জানিয়েছে টিকটক। 

নিরাপত্তা শঙ্কা 

পার্লামেন্টের টিকটক অ্যাকাউন্ট খোলার সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে উচ্চ ও নিম্ন কক্ষের স্পিকারদের উদ্দেশ্যে চিঠি পাঠিয়েছিলেন পার্লামেন্টের সদস্যরা; তাদের মধ্যে রক্ষণশীল দলের সাবেক প্রধান স্যার ইয়ান ডানকান স্মিথ এবং টোরি দলের নেতৃত্ব নিয়ে সাম্প্রতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া টম টুগেনধাতও ছিলেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। 

চীনের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ও সমালোচনা করে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়া জনপ্রতিনিধিরা চিঠিতে লিখেছেন, পার্লামেন্ট টিকটক অ্যাকাউন্ট খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তারা ‘বিস্মিত এবং আশাহত’। 

টিকটক অ্যাপের ডেটা ঝুঁকি ‘বিবেচনায়’ নেওয়ার মতোই বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন তারা।  

টিকটকের নির্বাহীরা, “এমপিদের নিশ্চিত করতে পারেননি যে তারা বাইটড্যান্সের কাছে ডেটা হস্তান্তর বন্ধ করতে পারবে।” 

অন্যদিকে, স্পিকারদের উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিতে যে এমপিরা স্বাক্ষর করেছিলেন, টিকটক তাদের সবার সঙ্গে দেখা করে নিজস্ব ডেটা নিরাপত্তা প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করার প্রস্তাব পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। 

গত মাসেই যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টের এমপি এবং ‘বিজনেস, এনার্জি অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্ট্র্যাটেজি কমিটি’র চেয়ারম্যান ড্যারেন জোনসের উদ্দেশ্যে চিঠি লিখেছিলেন টিকটকের ইউরোপভিত্তিক ‘গভর্নমেন্ট রিলেশনস অ্যান্ড পাবলিক পলিসি’ বিষয়ক ভাইস-প্রেসিডেন্ট থিও বার্ট্রাম। 

চিঠিতে বার্ট্রাম লিখেছিলেন, “চীন সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে কখনোই টিকটক ব্যবহারকারীদের ডেটা চায়নি, চাইলেও আমরা দেবো না।” 

বিবিসি জানিয়েছে, বেইজিংয়ের সঙ্গে লন্ডনের সম্পর্কে সৃষ্ট টানাপোড়েনের অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটি হলো চীনা প্রযুক্তিকে জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে বিবেচনা করা। 

২০২৭ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্যের মোবাইল নেটওয়ার্ক থেকে হুয়াওয়েইয়ের ৫জি যন্ত্রাংশ সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্তে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের শঙ্কাও বেড়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।  

শিনজিয়াং প্রদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে চীনের সমালোচনা করায় গত বছরেই স্যার ইয়ানসহ বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি এবং ব্রিটিশ সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বেইজিং। 

Share this news