দেশের উন্নয়নের জন্য সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে: তারেক রহমান

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলমত নির্বিশেষে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমরা আজ এমন এক পর্যায়ে এসে পৌঁছেছি যেখানে দেশের উন্নয়নের জন্য সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমাদের দেশ গড়তে হবে।”

তিনি বলেন, “ভিন্ন ভিন্ন মত থাকা গণতন্ত্রে স্বাভাবিক ব্যাপার এবং সেটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু দেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এগিয়ে নেওয়া, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মতো মৌলিক বিষয়ে আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে।”

পশ্চিম লন্ডনের একটি পাঁচ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০২৫-এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান খেলাধুলার উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, “যারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারে, তাদের সমস্ত দায়িত্ব রাষ্ট্র নেবে। ভবিষ্যতে দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও বেশি বিকেএসপি গড়ে তোলা হবে।”

তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে দেশের চারটি বিভাগে বিকেএসপি রয়েছে। আমরা যদি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পাই, তবে প্রত্যেক বিভাগে একটি করে বিকেএসপি প্রতিষ্ঠা করব। এতে ভালো মানের খেলোয়াড় তৈরি হবে এবং যারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশকে উপস্থাপন করবে, তাদের দায়িত্ব রাষ্ট্রই নেবে।”

তিনি বলেন, “আমরা ঢাকা শহরে ওয়ার্ডভিত্তিক খেলার মাঠ গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিতে পারি। যদি দুটি ওয়ার্ডের মাঝখানে তিন থেকে চার বিঘা জমি পাওয়া যায়, সেখানে খেলার মাঠ করা হবে। যাতে শিশু-কিশোররা খেলতে পারে, এবং বয়স্করা হেঁটে বিশ্রাম নিতে পারে—এমন জায়গা গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য।”

তারেক রহমান আরও বলেন, “আমরা স্কুলের পাঠ্যসূচিকে নতুন করে সাজাতে চাই। সেখানে খেলাধুলা এবং দ্বিতীয় বা তৃতীয় ভাষাকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে, যাতে এগুলোর জন্য আলাদাভাবে মূল্যায়ন করা যায়। অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করতে হবে, কারণ সেটা পাঠ্যসূচির অংশ হয়ে যাবে।”

তিনি বলেন, “আমরা সরকারের কাছে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছি। এই লক্ষ্যে আমাদের বহু নেতাকর্মী জীবন দিয়েছেন, অনেকে গুম হয়েছেন এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এটা মানুষের রাজনৈতিক অধিকার। আমরা এমন একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যা জনগণের রাজনৈতিক ও সামগ্রিক কল্যাণে কাজ করবে।”

ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোকে স্মরণ করে তারেক রহমান বলেন, “বড় ভাই হিসেবে ছোট ভাইয়ের গর্ব করার মতো সব গুণ কোকোর মধ্যে ছিল।”

আরাফাত রহমান কোকো মেমোরিয়াল ট্রাস্টের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আবু নাসের শেখ এবং সঞ্চালনা করেন শরফরাজ আহমেদ শরফু। এতে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, সাবেক ভূমি উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবীর, বগুড়া জেলা বিএনপির সহসভাপতি মীর শাহে আলম, সাবেক এমপি মোশারফ হোসেন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহসম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, ড্যাবের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি অধ্যাপক ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানটির আয়োজকদের মধ্যে ছিলেন: ফজলে রহমান (পিনাক), শেখ সাদেক, ডালিয়া বিনতে লাকুরিয়া, আরিফুল ইসলাম উজ্জ্বল, শাকিল চৌধুরী, আব্দুস সামাদ রাজ, ফাহিদুল আলম (ফরহাদ), অঞ্জনা আলম, মনোয়ার হোসেন, আলম শিমু, শফিউল আলম মুরাদ, কামরুজ্জামান চৌধুরী পাউন্ড, তুহিন মোল্লা প্রমুখ।