Bangla
2 years ago

ঘরে বসে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে সংলাপে প্রস্তাব

Published :

Updated :

ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নিয়ে ই ভোটের ব্যবস্থা করার সুপারিশ জানিয়েছে জাকের পার্টি।

বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে আলোচনা করে দলটি।

এদিন কল্যাণ পার্টি ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপিও আলাদা আলাদাভাবে সংলাপে অংশ নেয়।

কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ ফুরিয়ে আসায় নতুন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছেন রাষ্ট্রপ্রধান। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

আগামী সপ্তাহে এই বৈঠক শেষে করে সার্চ কমিটি গঠন করবেন তিনি। সেই কমিটি যে সব নাম সুপারিশ করবে, তাদের মধ্য থেকে অনধিক পাঁচজনকে নিয়ে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নতুন ইসি গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি।

বৃহস্পতিবার বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে জাকের পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা আমীর ফয়সাল সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের দেশে ভোট কেন্দ্রগুলো দখলে যেভাবে হানাহানি, মারামারি, আহত কিংবা নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে, তা স্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়া উচিৎ।

“এর ধারাবাহিকতা গণতন্ত্রের মসৃণ অগ্রযাত্রা ব্যাহত করে এবং নির্বাচনকে যেমন প্রশ্নবিদ্ধ করে, তেমনিভাবে এর ব্যাপকতায় গণতন্ত্রের ভবিষ্যত অন্ধকারে নিমজ্জিত হতে পারে।”

তাই বিকল্প প্রস্তাবে তিনি বলেন, “ভোটারদের উৎকণ্ঠা কমাতে ও নির্বাচনকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে ব্লকচেইন প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে ই ভোটিং প্রক্রিয়ায় ঘরে বসে ভোট প্রদানের ব্যাবস্থা এখনই গ্রহণ করা উচিৎ।

“মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নিরাপদভাবে যদি টাকা লেনদেন করা যায়, তবে ই ভোটিং এর মাধ্যমে নিরাপদ ভোট প্রদানের নিরাপদ ব্যাবস্থা এবং ভোটারদের জীবনের নিরাপত্তা বিধান করা যাবে না কেন? ঘরে বসে কেন ভোটাররা ভোট দিতে পারব না?”

জাকের পার্টির ইসি নিয়োগে আইন প্রণয়নের সুপারিশ জানানোর পাশাপাশি সেই আইনের খসড়া দ্রুত প্রস্তুত করে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠিয়ে মতামত নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

আর সার্চ কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে তা গঠনের সুপারিশ করেছে।

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়েও আপত্তি রয়েছে দলটির।

মোস্তফা আমির ফয়সলের নেতৃত্বে জাকের পার্টির ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেয়। অন্যরা হলেন মহাসচিব শামীম হায়দার, ভাইস চেয়ারম্যান সায়েম আমীর ফয়সল, ফারাহ আমীর, দপ্তর সম্পাদক আ ন ম মনিরুজ্জামান, স্থায়ী কমিটির সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিক খান।

খালেদার প্রসঙ্গ তুলল কল্যাণ পার্টি

রাষ্ট্রপতির সংলাপে আলোচ্যসূচির বাইরে গিয়ে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের চেয়ারম্যান খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার দাবি জানিয়েছে কল্যাণ পার্টি।

সংলাপ থেকে বেরিয়ে কল্যাণ পার্টির দলটির মহাসচিব আব্দুল আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা যেহেতু ২০ দলীয় জোটের শরিক, আমরা এখানে দেশের অনেক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করি। এ জন্য আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে মূল ইস্যুর বাইরে গিয়ে প্রথমেই বলেছি, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে৷ কারণ এখন এটা একটি বার্নিং ইস্যু।

“আমরা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বলেছি এ বিষয়ে এটা মহামান্য রাষ্ট্রপতি উনার বিশেষ ক্ষমতা মাধ্যমে যেন বিবেচনা করেন। বর্তমান ক্ষমতাসীনদের পারসু করার মাধ্যমে যেন একটি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।”

রাষ্ট্রপতির কী বলেছেন- সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা নিয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতি পজিটিভ। তিনি বলেছেন, রাষ্ট্রপতির একটা পাওয়ার আছে কিন্তু পাওয়ারটা নিতে হলে আপনাকে প্রসিডিউর মেইনটেইন করে আসতে হবে।”

বিএনপি বর্জন করলেও জোট শরিক হিসেবে সংলাপে যোগ দেওয়া নিয়ে মামুন বলেন, “আমরা মনে করি, যুদ্ধের ময়দানেও আলোচনার পথ খোলা থাকতে হবে। আলোচনা মানে উনি আমাদের সব মেনে নিবেন এটাও নয়, আবার কিছুই মানবেন না, এও নয়। তবে আমরা আশাবাদী হতে চাই।

“সংলাপে যারা আসেননি কিংবা যারা এসেছেন, সকলকে আমরা রেসপেক্ট করি। কারণ এটা তাদের ইন্ডিভিজুয়াল ডিসিশন। যে কোনো রাজনৈতিক দল তাদের সিদ্ধান্ত নিতে পারে।”

সংলাপ শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, “রাষ্ট্রপতি বলেছেন, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত ও সুপারিশ ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখবে। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য রাজনীতিতে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে এবং এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোকেই উদ্যোগী হতে হবে। এছাড়া ত্যাগী ও সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হতে পারে সে জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।”

বিজেপিও তুলল খালেদার প্রসঙ্গ

সংলাপ শেষে বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে বলেছি, আমরা নির্বাচনের পরিবেশসহ প্রাসঙ্গিক সকল বিষয়ে কথা বলতে চাই। সেক্ষেত্রে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিষয়টা এখন জনগুরুত্বপূর্ণ। মানবিক কারণের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ রাজনীতি, রাজনীতিবিদ ও সব দলের সঙ্গে সম্পর্ক মাথায় রেখে আমি মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করেছি, উনার (খালেদা জিয়া) সুচিকিৎসার জন্য যে ব্যবস্থাটা, ব্যাপারটা যেন উনি কেবিনেটে নেয়।”

খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে আইন তো সবার জন্যই সমান- এক সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “সবার জন্য না, আইনের মধ্যে অনেক জায়গা রয়েছে। যেখানে বলা আছে মহিলা, শিশু ও বয়স্ক মানুষদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হবে।”

খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে আইনজীবী হিসেবে প্রক্রিয়া কী হতে পারে বলে মনে করেন- জানতে চাইলে পার্থ বলেন, “প্রক্রিয়া তো হতেই পারে। সরকারের কাছে আবেদন করা হতে পারে। সরকারের যদি সদিচ্ছা থাকে, তাহলে সরকার বিএনপি চেয়ারপারসনকে পাঠিয়ে দিতে পারে।”

নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, “দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। গত দুই নির্বাচনে সেটা প্রমাণিত।”

নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন করার উপর জোর দিয়েছে বিজেপি।

সংলাপ শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, “রাষ্ট্রপতি বলেছেন, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত ও সুপারিশ ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখবে। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য রাজনীতিতে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে এবং এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোকেই উদ্যোগী হতে হবে। এছাড়া ত্যাগী ও সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হতে পারে সে জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।”

Share this news