Bangla
2 years ago

বাংলার নায়াগ্রা: নাফাখুম জলপ্রপাত

ছবি: অভিযাত্রিক
ছবি: অভিযাত্রিক

Published :

Updated :

নাফাখুম জলপ্রপাত - বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলায় প্রকৃতির যেন এক মায়াবী উপহার। চারদিকে ঘন জঙ্গল ঘেরা উচুঁ নিচু আঁকাবাঁকা পথ ও পিচ্ছল পাথর পেরিয়ে জলপ্রপাত দর্শনের পর ভ্রমণকারী ভুলে যাবেন দুর্গম পথের সব ক্লান্তি। সকল বাধা উপেক্ষা করে পাহাড়, জল, পাথর, গভীর কুপ পেরয়ে যখন জলপ্রপাতের পানিতে শরীর সিক্ত হবে - সব ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে নিমিষেই। এর এই বিপদ্দজনক পথটি মূলত জলপ্রপাতটিকে করেছে আরো আকর্ষণীয়।

সাঙ্গু নদীর পাড়ে অবস্থিত থানচি বাজার। এই সাঙ্গু নদীর তীরে প্রকৃতি এখানে এত সুন্দর আর নির্মল হতে পারে ভাবাই যায় না! নদীর দুপাশে ছোটবড় সব পাহাড়। সবুজে মোড়ানো প্রতিটি পাহাড়ে যেন মেঘ ছুঁয়ে যাচ্ছে।

কিছু কিছু পাহাড়ের এত উচ্চতা – তাদের চূড়াগুলো যেন ঢেকে আছে মেঘের আস্তরে। থানচি উপজেলার রেমাক্রি স্থানটি সাঙ্গু নদীর উজানে একটি মারমা বসতি।

মারমা ভাষায় ‘খুম’ মানে হচ্ছে জলপ্রপাত। রেমাক্রি থেকে তিন ঘন্টার হাঁটা পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হয় এই নাফাখুম জলপ্রপাতে। রেমাক্রি খালের পানি প্রবাহ এই নাফাখুম এ এসে বাঁক খেয়ে হঠাৎ করেই নেমে গেছে প্রায় ২৫-৩০ ফুট, প্রকৃতির খেয়ালে সৃষ্টি হয়েছে চমৎকার এক জলপ্রপাত!

সূর্যের আলোয় যেখানে নিত্য খেলা করে বর্ণিল রংধনু! ভরা বর্ষায় রেমাক্রি খালের জলপ্রবাহ নিতান্ত কম নয়। প্রায় যেন উজানের সাঙ্গু নদীর মতই। এই পথে যেতে যেতে আপনাকে পারি দিতে হবে তিন্দু ও বড় পাথর।

পানি প্রবাহের পরিমাণের দিক থেকে নাফাখুমকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জলপ্রপাত বলা হয়ে থাকে। উপর থেকে এমন ভাবে পানি আছড়ে পড়ে যেন মনে হয় কুয়াশার ঘন চাদর নামছে প্রবল গতিতে। উড়ে যাওয়া জলকনা বাষ্পের সাথে ভেসে ভেসে শরীরে এসে পড়ে। রোমাঞ্চকর সে অনুভূতি নিতে পর্যটকদের অন্যতম প্রিয় এই জলপ্রপাত। হয়তো একারণেই একে বাংলার নায়াগ্রা বলা হয়ে থাকে।

দিনে গিয়ে দিনেই নাফাখুম ঝর্না থেকে থানচি ফিরে আসাটা খুবই কষ্টকর। তাই চাইলে রেমাক্রীতে রাত্রি যাপন করে চারপাশটা ভালোভাবে ঘুরে ফিরে দেখে আসা যায়। আর যারা দিনে গিয়ে দিনেই ফিরে আসতে চান তাদেরকে ভোর ৬/৭ টার মধ্যে থানচি থেকে যাত্রা শুরু করতে হবে। রেমাক্রী বাজার হতে জোরে হাটলে ২ ঘন্টা এবং ধীর পায়ে হাঁটার ক্ষেত্রে নাফাখুম ঝর্নায় পৌছতে ৩ ঘন্টার মতো সময় লেগে যায়। 

মুলত বর্ষার সময় ঝর্নার আকার বড় হয়। আর শীতের দিনে তা ক্ষীণ হয়ে যায়। তবে সেপ্টেম্বর - অক্টোবর মাসে নাফাখুমের প্রকৃত সৌন্দর্য দেখা যায়।

 

মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ সাংবাদিকতা বিভাগের প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত।

[email protected]

Share this news