Bangla
7 hours ago

বছরের মাঝামাঝিতে ঢাকায় জীবনযাত্রার ব্যয়ের সূচক নিম্নগামী

Published :

Updated :

২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় জীবনযাত্রার ব্যয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে, যার পেছনে স্থানীয় উৎপাদনের অবদান রয়েছে—এমনটি জানিয়েছে বিশ্বজুড়ে জীবনযাত্রার অবস্থা পর্যবেক্ষণকারী একটি ডেটাবেইস।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় জীবনযাত্রা ব্যয় সংক্রান্ত ডেটাবেইস ‘নাম্বিও’র সর্বশেষ জনসাধারণনির্ভর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জুন মাসে ঢাকার জীবনযাত্রা সূচক দাঁড়িয়েছে ২৩.৫, যা ২০২৪ সালের জুনে ছিল ২৫.১।
এই সূচক মোট ব্যয়কে নির্দেশ করে, যার মধ্যে ভোক্তা পণ্য, ভাড়া এবং মুদি খরচ অন্তর্ভুক্ত।

জীবনযাত্রা ব্যয়ের একটি প্রধান উপাদান মুদি খরচ সূচকও নেমে এসেছে ২৮.৩-এ, যা গত বছরের তুলনায় ০.৭ পয়েন্ট কম।

তবে চলতি বছরজুড়ে ভাড়ার খরচ অপরিবর্তিত থেকেছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই সূচক হ্রাসের মূল কারণ হলো এ সময় মুদ্রাস্ফীতির চাপ কিছুটা কমে যাওয়া।

বাংলাদেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন জানান, ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে মুদ্রাস্ফীতির চাপ কম থাকায় ঢাকায় জীবনযাত্রার ব্যয় কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।

তিনি আরও বলেন, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত অনেক খাদ্যপণ্যের দাম খামার পর্যায়ে তুলনামূলকভাবে কম থাকলেও, ঢাকায় ভোক্তামূল্য বেশি থেকে গেছে বিতরণ ব্যবস্থার অদক্ষতার কারণে।

ড. হোসেন সতর্ক করে বলেন, নাম্বিওর তথ্য ব্যবহারকারীর জমা দেওয়া তথ্যে নির্ভর করে, তাই এটি শহরের পুরো বৈচিত্র্য না-ও দেখাতে পারে; তবে এটি বিশ্বজুড়ে শহরভিত্তিক জীবনযাত্রার ব্যয় তুলনায় একটি কার্যকর মানদণ্ড হিসেবে কাজ করে।

এই সামান্য হ্রাস সত্ত্বেও ২০২৫ সালের জুনে জরিপে অংশ নেওয়া এশিয়ার ৯৩টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান ছিল ৭২তম। ওই সময় এশিয়ার সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর ছিল সিঙ্গাপুর।

দক্ষিণ এশিয়ার ২৭টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান ছিল ৬ষ্ঠ।

শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো অঞ্চলটির সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, আর ভারতের কোয়েম্বাটোর ছিল সবচেয়ে সাশ্রয়ী শহর।

বিশ্বজুড়ে ৪০৪টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান ছিল ৩৭৯তম, যা ইঙ্গিত দেয় ঢাকায় জীবনযাত্রার ব্যয় তুলনামূলকভাবে কম।

সুইজারল্যান্ডের শহরগুলো এখনও তালিকার শীর্ষে রয়েছে। ২০২৫ সালের জুনে জুরিখ ছিল বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর, যা আগের বছর শীর্ষে থাকা জেনেভাকে পেছনে ফেলেছে।

২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত নাম্বিও ভোক্তা মূল্য, আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা, অপরাধ-ধারণা, যানজট ও অন্যান্য জীবনমান সূচকের তথ্য সংকলন করে।

২০০৭-২০০৯ সালের বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের পর বিশ্বের বিভিন্ন শহরের জীবনযাত্রা ব্যয় সম্পর্কে আরও বিশদ ও সহজলভ্য তথ্য দেওয়ার লক্ষ্যেই এটি চালু হয়।

ব্যবহারকারীদের সরবরাহকৃত তথ্য ও মতামতের ভিত্তিতে নাম্বিও নিয়মিত হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করে, যা ব্যক্তি, গবেষক ও নীতিনির্ধারকদের জীবনযাত্রার ব্যয় তুলনা, বাসস্থান পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত এবং বাজার বিশ্লেষণে সহায়তা করে।

Share this news