Bangla
2 days ago

বগুড়ায় ঈদের আগে বেড়েছে দুধ ও দইয়ের দাম

Published :

Updated :

ঈদুল আজহার আগমনে বগুড়ার শেরপুরে দুধের দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্বখ্যাত বগুড়ার দইয়ের দামও ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। ২০২৩ সালে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া এই দইয়ের দাম বৃদ্ধি ক্রেতাদের মাঝে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) বাজার ঘুরে দেখা যায়, শেরপুরের বাজারে গত সপ্তাহে দুধের দাম ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা প্রতি লিটার, যা এখন বেড়ে ১০০ থেকে ১০৫ টাকায় পৌঁছেছে। এই দাম বৃদ্ধির প্রভাব সরাসরি দইয়ের বাজারে পড়েছে। একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে শাহী দই বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়, যা ঈদের আগে ছিল ২৮০ টাকা। স্পেশাল দই ২৫০ টাকা এবং রেগুলার দই ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য দোকানে সাধারণ মানের দই পাওয়া যাচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ঈদের মৌসুমে সারা দেশ থেকে দইয়ের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দুধের চাহিদাও বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু উৎপাদনের তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দুধের দাম হু হু করে বাড়ছে। এছাড়া, শ্রমিকের মজুরি, খড় এবং অন্যান্য উপকরণের দাম বৃদ্ধি দইয়ের দাম বাড়ার অন্যতম কারণ।

একজন দুধ ব্যবসায়ী বলেন, “ঈদের সময় দুধের চাহিদা বাড়ে, কিন্তু সরবরাহ কম। তাই দাম নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।”

দই ব্যবসায়ীরা জানান, দুধের দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দইয়ের দাম বাড়ানো ছাড়া তাদের কোনো উপায় নেই। একজন ব্যবসায়ী বলেন, “খরচ বেড়ে গেছে, শ্রমিকের মজুরি বেড়েছে, তাই দইয়ের দামও বাড়াতে হচ্ছে।”

ক্রেতারা এই দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হক বলেন, “বগুড়ার দই আমাদের পরিচয়, কিন্তু এত দাম হলে কীভাবে কিনব? সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।”

দই কিনতে আসা রেহেনা বেগম জানান, “ঈদের আগে প্রতিবারই দুধ আর দইয়ের দাম বাড়ে, কিন্তু এবার তো সীমা ছাড়িয়ে গেছে। দুধ ১০০-১০৫ টাকা লিটার, আর দইয়ের দামও তেমনি। আমার পরিবারের সবাই দই পছন্দ করে, কিন্তু এখন বাজেটের মধ্যে কেনা কঠিন।

জানা যায়, বগুড়ার শেরপুরে প্রথম দই তৈরি হয় প্রায় আড়াইশ বছর আগে। তৎকালীন বগুড়ার শেরপুরের ঘোষ পরিবারের ঘেটু ঘোষ প্রথম দই তৈরি আরম্ভ করেন। টক দই তৈরি থেকে বংশ পরম্পরায় তা চিনিপাতা বা মিষ্টি দইয়ে রূপান্তরিত হয়।

ঐতিহ্যবাহী বগুড়ার দই, যার উৎপত্তি শেরপুরেই, ২০২৩ সালে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। ফলে এর চাহিদা দেশ-বিদেশে আরও বেড়েছে। তবে দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ ক্রেতারা কিছুটা ভোগান্তিতে পড়েছেন।

Share this news