Published :
Updated :
বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের সম্ভাব্য অস্থিরতা রোধে বাংলাদেশ ব্যাংক নয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের ওপর বিশেষ নজরদারি শুরু করেছে। এই ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে তুলনামূলকভাবে বেশি সম্পৃক্ততা রয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নয়টি দল আটটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং একটি রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা সংক্রান্ত সন্দেহজনক লেনদেন খতিয়ে দেখছে। বুধবার থেকে এই দলগুলো ব্যাংকগুলোতে সরেজমিনে পরিদর্শন শুরু করেছে। তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো বৈদেশিক মুদ্রার কথিত 'মূল্য বিকৃতি' খতিয়ে দেখা, যা ভবিষ্যতে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
তদন্তকারীদের গত এক মাসের রপ্তানি, আমদানি ও রেমিটেন্সের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা কেনা-বেচার হার সংগ্রহ করার দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে।
তদন্ত দলগুলোকে প্রবাসী এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে আসা রেমিটেন্স কেনার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো যে দর প্রস্তাব করেছে এবং গ্রাহকদের কাছে বৈদেশিক মুদ্রা বিক্রির হারের মধ্যেকার পার্থক্যও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।
তফসিলিভুক্ত ব্যাংকগুলোকে গ্রাহক পর্যায়ে এর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১২২ টাকা এবং ক্রয়ের ক্ষেত্রে ১২১ টাকা পর্যন্ত রেট নির্ধারণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
তবে কিছু ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে প্রতি ডলারে ১২৩ টাকা পর্যন্ত রেমিট্যান্স কিনেছে বলে বাজার সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এর আগে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪-এ বাংলাদেশ ব্যাংক ক্রলিং পেগের মধ্যম হার ১১৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে মৌখিকভাবে ১১৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল।
মূলত, ২ দশমিক ৫ শতাংশের ব্যান্ড যোগ করে সর্বোচ্চ এক্সচেঞ্জ রেট নির্ধারিত হয়েছিল প্রায় ১২২ টাকা। ক্রলিং পেগ হলো এমন এক্সচেঞ্জ রেট ব্যবস্থাপনা, যেখানে একটি নির্দিষ্ট রেটের মধ্যে একটি মুদ্রা সীমিতভাবে ওঠানামা করতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসকে বুধবার এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, “আমরা বাজার তদারকির অংশ হিসেবে এই বিশেষ পরিদর্শন শুরু করেছি।” তিনি আরও বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই কর্মকর্তা জানান, তদন্ত দলগুলোকে এই সপ্তাহের শেষ নাগাদ তাদের পরিদর্শন কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শ অনুযায়ী আরও নমনীয় বিনিময় হার ব্যবস্থাপনায় যাওয়ার প্রেক্ষাপটে নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই সর্বশেষ পদক্ষেপটি এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি সব তফসিলি ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সঙ্গে এক বৈঠকে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের ক্ষেত্রে নতুন ব্যবস্থায় সম্ভাব্য অস্থিরতা এড়াতে যৌক্তিক ও বিচক্ষণতার সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।