Published :
Updated :
আসন্ন এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)-এর বার্ষিক সভায় পূর্ব প্রতিশ্রুত ৫০ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা ঋণ এবং অতিরিক্ত আর্থিক সহায়তা চূড়ান্তকরণের ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশ।
আজ রোববার (৪ মে) ইতালির মিলানে শুরু হওয়া এ সভায় বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)-এর এক কর্মকর্তা শনিবার দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসকে জানান, অর্থ উপদেষ্টা এডিবি প্রেসিডেন্ট মাসাতো কান্দা এবং আরও কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। সেখানে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সংস্কারের জন্য অতিরিক্ত অর্থায়নের আবেদন জানানো হবে।
ইআরডি-র অতিরিক্ত সচিব এসএম জাকারিয়া জানান, "বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল এডিবি-র বার্ষিক সভায় অংশ নেবে এবং উন্নয়ন সহযোগী এডিবি থেকে আরও আর্থিক সহায়তা চাইবে। বর্তমানে এডিবি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বহুপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগী।"
তিনি আরও বলেন, ৪-৭ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য এই বার্ষিক সভার ফাঁকে অর্থ উপদেষ্টা এডিবি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং ভবিষ্যতে সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানাবেন।
আরেক ইআরডি কর্মকর্তা জানান, অন্তত ৫০ কোটি ডলারের পূর্ব প্রতিশ্রুত বাজেট সহায়তা দ্রুত চূড়ান্ত করার জন্যও অনুরোধ জানানো হবে। এই অর্থ আগামী ৩০ জুন শেষ হতে যাওয়া চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যেই ছাড়ের জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ব্যাংকিং খাতের সংস্কারের জন্য এই ৫০ কোটি ডলারের প্যাকেজ পেতে এডিবির সঙ্গে আলোচনা শেষ করেছে। তবে, সরকার আশা করেছিল এডিবি-র বোর্ড সভায় এপ্রিলেই এ প্রস্তাব অনুমোদিত হবে এবং দ্রুত ঋণচুক্তি সই হবে।
ইআরডি কর্মকর্তারা বলেন, গত সরকারের সময়ে ব্যাংক খাতের অনিয়ম, জাল ঋণ, হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট এবং বিদেশে অর্থ পাচারের কারণে আর্থিক খাত আজ চরম সংকটে। বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। কমপক্ষে এক ডজন বাণিজ্যিক ব্যাংক বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে।
প্রস্তাবিত এই ৫০ কোটি ডলার ‘ব্যাংক খাত সংস্কারনীতি-ভিত্তিক ঋণ (পলিসি বেসড লোন)-এর সাব-প্রোগ্রাম-১-এর আওতায় দেওয়া হবে। এই প্রকল্প সফল হলে আরও ৫০ কোটি ডলারের সাব-প্রোগ্রাম-২ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
ইতোমধ্যে এডিবি সরকারের কাছে ব্যাংকিং খাতসহ অর্থনৈতিক খাতের সংস্কার বিষয়ক কিছু প্রস্তাবনা দিয়েছে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে (জুলাই-মার্চ) এডিবি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ উন্নয়ন সহযোগীতে পরিণত হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে এডিবি থেকে ১ দশমিক ২২৬ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক সহায়তা এসেছে, যা অন্য যে কোনো উন্নয়ন সহযোগীর তুলনায় বেশি।
উল্লেখ্য, এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি নিতে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর এডিবি বাংলাদেশকে ‘অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ও সুশাসন জোরদারকরণ কর্মসূচি, সাব-প্রোগ্রাম-১’ শীর্ষক আরও ৬০০ মিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তা প্রদান করে।
kabirhumayan10@gmail.com