Bangla
a year ago

এই গরমে সুস্থ থাকতে করণীয়

Representational image
Representational image

Published :

Updated :

দেশজুড়ে বইছে এক অস্বস্তিকর তাপপ্রবাহ বা হিটওয়েভ। গরম বাতাস যখন বায়ুমণ্ডলে আটকা পড়ে যায়, তখন এমনটা হয়। তাপপ্রবাহ একটি প্রাকৃতিক ঘটনা, যা দিনে দিনে আরো তীব্রভাবে, আরো বারংবার আমাদের আশপাশকে পর্যুদস্ত করে তুলেছে। এর কারণ হিসেবে অনেক বিষয়কেই চিহ্নিত করা হয়, তবে এর মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ কারণটি হচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণতা।

এবারের গ্রীষ্মে বাংলাদেশে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাচ্ছে, যা কিনা রেকর্ড কালের সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রার মধ্যে অন্যতম। এমন তাপমাত্রার সাথে রয়েছে উচ্চ আর্দ্রতা, গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি ইত্যাদি বিষয়ও। ফলস্বরূপ তাপজনিত অসুস্থতা যেমন হিটস্ট্রোক, সিনকোপ, পানিশূন্যতা, ক্লান্তি, গা ব্যথা ইত্যাদি সবই বাড়ছে। যতদিন না পরিবেশ শীতল হচ্ছে, ততদিন আমাদের স্বাস্থ্য বিষয়ে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে।অতি তাপমাত্রার প্রভাব কমাতে কিছু বিষয়ের চর্চা করতে হবে।

এই গরমে যাতে পানিশূন্যতা না হয়, সেক্ষেত্রে বেশি সচেতন থাকা জরুরি। ব্যক্তিভেদে চাহিদা আলাদা হতে পারে, তবে প্রতিদিন গড়ে ৩লিটার তরল পান করতে হবে, যাতে যথেষ্ট পরিমাণে পানীয়ের চাহিদা পূরণ হয়।প্রস্রাবের রঙ দেখেও হাইড্রেশনের বিষয়ে বোঝা যায়। প্রস্রাবের রঙ গাঢ়হলুদ হলে বুঝতে হবে যে শরীরে আরো পানীয়ের প্রয়োজন। তবে সবচেয়ে ভালো পানীয় হচ্ছে সুপেয় পানি। ক্যাফেইন, চিনিযুক্ত পানীয় ইত্যাদি গ্রহণ এড়িয়ে চলা বা সীমিত রাখতে হবে। শরীরে খনিজ ও লবণের অভাব মেটাতে পানির সাথে ইলেকট্রোলাইটড্রিংকও ভালো বিকল্প হতে পারে।

দিনের কিছু সময় অন্যবেলার চাইতে গরম বেশি লাগতে পারে। তাই সেই সময়গুলোতে বাড়িতে থাকাই ভালো। চারদেয়ালের মধ্যে থাকার সময় নিজেদেরকে শীতল রাখতে অনেকেই ফ্যান ব্যবহার করেন। তবে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা হলে তাতেও পর্যাপ্ত আরাম না মিলতে পারে। তাই এয়ারকন্ডিশন বেশি ভালো হবে এক্ষেত্রে। আর তা সম্ভব না হলে, সময়ে-সময়ে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে স্নান করা যায়।

হিটওয়েভের সময়ে পোশাক বাছাইয়েও সচেতন হতে হবে, বিশেষ করে বাইরে যাওয়ার সময়। সুতি কাপড় ও হালকা রঙ্গের ঢিলেঢালা পোশাকই এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হবে কেননা এতে ঘাম শুষেনেয় এবং র‍্যাশের ঝুঁকি কমে। এই ছোটখাটো সিদ্ধান্তগুলো হিটওয়েভের সময়ে স্বাস্থ্য ও আরাম, উভয়েরই খেয়াল রাখতে সহায়তা করবে। এছাড়াও টুপি, সানগ্লাস বাছা তার মতো বাড়তি সুরক্ষা নেয়া যায়। ত্বকের সুরক্ষায় সানস্ক্রিন বেশ জরুরি। বাজারে সানস্ক্রিনের অনেক ব্র্যান্ডই রয়েছে। এর মধ্য থেকে অতি বেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষা দেয়, এমন বেশি স্পেকট্রামের পণ্যগুলো বেছে নিতে হবে।

আমাদের মধ্যে অনেকেই শরীরচর্চা করে থাকেন। হিটওয়েভ চলাকালেও এচর্চা চালিয়ে যাওয়া যায়, কিন্তু বাড়তি সতর্কতা মেনে চলতে হবে। ব্যায়ামের মাত্রা যাতে আমাদের সহ্যসীমা না পেরিয়ে যায়। কোনোভাবে যদি ব্যায়ামের সময় শ্বাসকষ্ট বা বুকে ব্যথা হয়, তবে তক্ষুনিতা থামিয়ে দিতে হবে।

এসব সতর্কতা সত্ত্বেও বিপদের ঝুঁকি থেকেই যায়। তাই আমাদেরকে এসব ঝুঁকির উপসর্গ সম্পর্কে জানতে হবে।যদি কারো শরীর দুর্বল লাগে, মাথা ঘোরায় কিংবা জ্ঞান হারানোর মতো অবস্থা হয় তবে তখনই রোদের আলো থেকে সরে ছায়াময় স্থানে চলে যেতে হবে।

আমরা সকলেই শারীরিক ও মানসিকভাবে একে অন্যের থেকে আলাদা। কেউ-কেউ একটু বেশিই দুর্বল। এরমধ্যে ৬৫ বছরের বেশি বয়স্ক মানুষজন আছেন, অন্তঃসত্তা বা নতুন মায়েরা আছেন, আছে কচিকাচা শিশুরাও। ওজন বেশি যাদের, হাইপারটেনশন আছে এমনরোগী, হৃদরোগী, কিংবা ইনসমনিয়া, ডিপ্রেশন ইত্যাদির জন্য ওষুধ নিচ্ছেন এমন মানুষদের ক্ষেত্রে এ ঝুঁকি বেশি। এদের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।কোনো ধরনের ঝুঁকি দেখা গেলে জরুরি সাহায্য নিতে হবে।

মূল লেখাটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করা হয়েছে। অনুবাদ করেছেন অনিন্দিতা চৌধুরী। 

imtiazdmc@gmail.com

 

Share this news