Bangla
a year ago

হোপ মার্কেটঃ মিরপুরের স্ট্রিট শপিংয়ের জন্য সেরা জায়গা

মিরপুর ১০ এর জনপ্রিয় ‘হোপ মার্কেট'
মিরপুর ১০ এর জনপ্রিয় ‘হোপ মার্কেট' Photo : নীলাঞ্জনা চম্পা

Published :

Updated :

‘স্ট্রিট শপিং’ বরাবরই নারীদের পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে একটি। ইন্টারনেটের যুগে এই স্ট্রিট শপিং এখন নান্দনিকতার তালিকায় বেশ উপরে আছে। বেশ কয়েক মাস ধরেই স্ট্রিট শপিংয়ের স্থান নিয়ে অনেকেই যারা ফেসবুক রিলসে ঘুরাঘুরি করছেন তার মধ্যে একটি হলো মিরপুর ১০ এর জনপ্রিয় ‘হোপ মার্কেট।’

মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশনের পূর্ব দিক থেকে শুরু করে ঝুটপট্টি পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বসে এই মার্কেট। স্থানটি ‘হোপের গলি’ হিসেবেও পরিচিত। হোপ স্কুল সংলগ্ন হোপ প্লাজাকে কেন্দ্র করে আশেপাশের ফুটপাথে অবস্থানরত ছোট ছোট ভাসমান দোকানগুলো নিয়ে গড়ে উঠেছে এই মার্কেট। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে চলে আসা এই মার্কেটে ফুটপাথের ভাসমান দোকান সংখ্যা প্রায় শতাধিক।

মার্কেটের শুরুতেই চোখে পড়ে ছেলেদের শার্ট প্যান্টের দোকান। এরপর সামনের দিকে এগোতে থাকলে দেখা যায় গজ কাপড় থেকে শুরু করে থ্রি-পিস, হিজাব, শাড়ি, লুঙ্গি, গৃহস্থলির তৈজসপত্র, সিরামিক্স, বিছানার চাদর, মশারি, মৃৎশিল্পের সামগ্রী, নার্সারি, স্টেশনারি, এক্সেসরিজ, ব্যাগ, জুতা, রেডিমেড জামা, জিন্স, গয়না, কসমেটিক্স, ক্রাফট শপ এমনকি স্ট্রিট ফুডের দোকান। একাধারে ফুচকা-চটপটি থেকে শুরু করে নানা ধরনের ছোট ছোট স্টলে মচমচে ভাজাপোড়ার দোকানের সংখ্যা কম হলেও বিশটি। হোপ মার্কেট তাই স্ট্রিট ফুডের জন্যও বেশ জনপ্রিয়।

স্থানীয় এক দোকানি জানান, “গজ কাপড় সর্বনিম্ন ৬০ টাকা, থ্রি পিস ৩০০ টাকা, বিছানার চাদর ১৫০ টাকা, ব্যাগ ৪০০ টাকা, জুতা ১৫০ টাকা, জিন্স ২০০ টাকা থেকে শুরু হয় এবং মানভেদে দাম বাড়তে থাকে।”  স্থানীয় এক ক্রেতা জানান, “এখানের বেশিরভাগ পণ্য পাইকারী দামে বিক্রি হয়, তবে ক্রেতাদেরকে অবশ্যই দামাদামিতে পারদর্শী হতে হবে।”

স্থানীয় আরো এক দোকানদার জানায় এখানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫ শতাধিকের বেশি সাধারণ ক্রেতার আগমন ঘটে। কাছাকাছি তিন-চারটি স্কুল, সামনেই ক্যান্টনমেন্ট, ডেন্টাল হাসপাতাল ইত্যাদি থাকায় হোপ মার্কেট ব্যবসার যথাযথ পরিবেশের সুবিধা পাচ্ছে। 

স্কুল ছুটির পর হোপ মার্কেটে অভিবাবকদের ভীড়
ছবি তুলেছেনঃ নীলাঞ্জনা চম্পা

স্কুল ছুটির সময়টাতে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের আনাগোনা বেড়ে যায় বিধায় এখানকার ব্যবসায়ীরা কড়া রোদের মাঝেও দুপুরের সময়টার জন্য অপেক্ষা করে।

স্কুল শুরু হওয়ার সময়টাতে হোপ মার্কেটের ফুটপাথের দোকানগুলো একে-একে বসতে শুরু করে এবং ব্যবসা চলে রাত প্রায় ১২টা পর্যন্ত। সন্ধ্যার পর লাল-সাদা বাতির আলোয় মনমুগ্ধকর হয়ে ওঠে এখানকার পরিবেশ। এরপর আবার স্ট্রিট ফুডের স্টলও দেখা যায় সন্ধ্যার পর। তাই অনেকের পরামর্শ হোপ মার্কেট ঘোরাফেরার জন্য সন্ধ্যার পরের সময়টা বেশ উপযুক্ত।

সাম্প্রতিক তাপদাহের কারণে ব্যবসার গতি খানিকটা কমে এসেছে বলে জানায় হোপ প্লাজার নিচতলার এক দোকানি। বলেন, “গরমের কারণে ক্রেতার সংখ্যা আগের চেয়ে কমেগেছে, এরপর আবার স্কুল ছুটি দিয়েছে, তাই দুপুরে অভিবাবকরাও কেনাকাটা করতে আসেনা।”

ব্যবসার গতি কমে গেলেও একেবারে থেমে থাকেনি বলে জানান এক কসমেটিক্স বিক্রেতা। তিনি জানান, “সন্ধ্যার পর কাস্টমার সংখ্যা বাড়তে থাকে। অনেকেই খাবার খেতে এসে এটা সেটা কেনাকাটা করে নিয়ে যায়।” একই মন্তব্য পাশের এক নার্সারী দোকানির। তিনি বলেন, “গরমে গাছ কেনার এক রকম হিড়িক পরেগেছে। অনেকেই দুই-তিনটি করে গাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছে।”

করোনাপরবর্তী সময়ে মোটামুটি সব মার্কেট বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। করোনার আগে সময়ের মতো অর্থনৈতিক অবস্থা ফেরানোর চেষ্টা থাকলেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে চাঁদাবাজির মতো কর্মকান্ড। গরমে ব্যবসা দমে আসলেও দমে নেই চাঁদাবাজরা। সপ্তাহ ঘুরে আসতে না আসতেই অতিষ্ঠ করে তুলছে দোকান মালিকদের। প্রশাসনের নিকট তাদের আবেদন, অতি শীঘ্রই যেন প্রতিকার করা হয় এই সমস্যার। 

fatemaaktarhellbound@gmail.com

 

Share this news