Bangla
2 days ago

প্রধান উপদেষ্টার টোকিও সফর

জাপানের কাছে ১ বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা চাওয়ার পরিকল্পনা

Published :

Updated :

প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন সফরে জাপানের কাছ থেকে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেট সহায়তা চাইবে বাংলাদেশ। এ সফরে উভয় দেশের মধ্যে কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা চুক্তিও সই হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রোববার দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসকে জানান, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস ২৮ থেকে ৩১ জুন টোকিও সফর করবেন এবং এই বিষয়গুলো সফরের গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্যসূচীতে থাকবে।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, প্রধান উপদেষ্টার এ সফরে বাংলাদেশ ও জাপান ৭টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করতে সম্মত হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, “এর মধ্যে একটি হবে জ্বালানি সহযোগিতা নিয়ে, দুটি বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর সঙ্গে, দুটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এবং দুটি হবে বিজনেস-টু-বিসনেস চুক্তি।”

তিনি আরও জানান, “আমরা জাপান সরকারের কাছে এক বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রস্তাব উপস্থাপন করব।” তবে জাপান এখনো এ বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি। 

তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “আমরা সন্তোষজনক পরিমাণ অর্থ পাওয়ার প্রত্যাশা করছি।” 

জাতীয় বাজেট ও উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ বিদেশি অর্থায়নের চেষ্টা চালাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে জাপানের সরকারি উন্নয়ন সহায়তা (ওডিএ), সহজ শর্তের ঋণ, ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বৃদ্ধি এবং বাজেট সহায়তা বৃদ্ধির অনুরোধ জানানো হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এছাড়া, আগামী ৩০ মে নির্ধারিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অবকাঠামো, জাহাজ নির্মাণ, ব্লু ইকোনমি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং জ্বালানি খাতে সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা হবে।

এর আগে উভয় দেশ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত একটি চুক্তিতে সম্মত হলেও, রোববার জাপান জানিয়েছে যে, পার্লামেন্টের অনুমোদন ছাড়া তারা এ ধরনের চুক্তি সই করতে পারবে না, ফলে এটি আপাতত বাদ পড়ছে।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য জাপানের বৃত্তির সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাবও উত্থাপন করা হবে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাপান ‘বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট (বিগ-বি)’ উদ্যোগের আওতায় বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ উদ্যোগের আওতায় উচ্চমানের অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং জাপানি শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশে তাদের উৎপাদন ও মূল্য সংযোজন কার্যক্রম সম্প্রসারণে উৎসাহিত করা হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আরও জানান, এ উদ্যোগ জাপানের ‘ফ্রি অ্যান্ড ওপেন ইন্ডো-প্যাসিফিক’ ধারণা এবং এ অঞ্চলের টেকসই উন্নয়নের অঙ্গীকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

এছাড়া, এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের পণ্যের জন্য শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত (ডিএফকিউএফ) বাজার সুবিধা অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানানো হবে এবং বাংলাদেশ এ বিষয়ে ইতিবাচক ফলাফলের প্রত্যাশা করছে।

সহযোগিতার মূল খাত হিসেবে কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন মানবসম্পদ উন্নয়ন, যৌথ ক্রেডিটিং ব্যবস্থার মাধ্যমে জ্বালানি রূপান্তর, জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন, ভূমিকম্প ব্যবস্থাপনা, এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (ইটিপি), ট্রিটমেন্ট, স্টোরেজ ও ডিসপোজাল ফ্যাসিলিটি (টিএসডিএফ), সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প এবং জাহাজঘাটার আধুনিকায়ন।

এছাড়া, কক্সবাজারে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন ও তাদের জন্য মানবিক সহায়তার বিষয়টিও আলোচনায় থাকবে। 

mirmostafiz@yahoo.com

 

Share this news