Bangla
3 days ago

কক্সবাজারে সড়ক ছাড়লেন চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা

Published :

Updated :

টানা ৮ ঘণ্টা কর্মসূচী শেষে সড়ক ছাড়লেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা।

এর আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরি হারানো স্থানীয় শিক্ষকরা সড়ক অবরোধ করে রেখেছিলেন। মঙ্গলবার (৩ জুন) টানা ৮ ঘণ্টা কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের উখিয়ার কোটবাজার এলাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। এতে কক্সবাজার ও টেকনাফের মধ্যকার সড়ক যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

সড়ক অবরোধের ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন কয়েক হাজার যাত্রী। নারী-শিশুসহ সাধারণ মানুষকে দীর্ঘ সময় আটকে থাকতে হয়। পাশাপাশি, আশ্রয়শিবিরে কর্মরত বেসরকারি সাহায্য সংস্থার (এনজিও) কর্মকর্তারা কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারেননি।

জানা গেছে, জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক জরুরি শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) অর্থায়নে পরিচালিত শিক্ষা প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন এসব শিক্ষক। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের স্কুলগুলোতে পাঠদান করে আসছিলেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তহবিল সংকটের কারণ দেখিয়ে এক হাজার ২৫০ জন স্থানীয় বাংলাদেশি শিক্ষককে একযোগে চাকরিচ্যুত করা হয়।

চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে গত চারদিন ধরে উখিয়ায় মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে আসছেন তারা। এই ধারাবাহিক কর্মসূচির চতুর্থ দিনে মঙ্গলবার সকাল ৭টা থেকে তারা কোটবাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ শুরু করেন।

সড়ক অবরোধের ফলে টেকনাফ থেকে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও ঢাকাগামী এবং বিপরীতগামী কয়েক হাজার যানবাহন আটকে পড়ে। এতে যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়ে। সকাল থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত পরিস্থিতি অব্যাহত থাকে। এ সময় আশ্রয়শিবিরে কর্মরত এনজিওগুলোর গাড়িও আটকে দেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ ও বিজিবির পাহারায় কয়েকটি গাড়ি শিবিরে প্রবেশের চেষ্টা করলে আন্দোলনকারীরা ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দিয়ে গাড়িগুলো বাধা দেন এবং অবশেষে সেগুলো কক্সবাজার শহরের দিকে ফিরে যেতে বাধ্য হয়।

দুপুরে ঘটনাস্থলে পৌঁছান উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুল ইসলাম চৌধুরী। সঙ্গে ছিলেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ আরিফ হোসেন এবং উখিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপির আহ্বায়ক সরওয়ার জাহান চৌধুরী।

আন্দোলনকারী শিক্ষকরা ইউএনও’র কাছে সাফ জানিয়ে দেন, যদি তহবিল সংকট থাকে, তবে আশ্রয়শিবিরের সব শিক্ষা কার্যক্রমই বন্ধ করতে হবে। শুধু স্থানীয়দের বাদ দিয়ে প্রকল্প চলতে পারে না। শেষপর্যন্ত ইউএনও মো. কামরুল ইসলাম চৌধুরীর আশ্বাসে বিকেল ৩টার দিকে আন্দোলনকারীরা সড়ক থেকে সরে দাঁড়ান।

এ বিষয়ে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) ও অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, অর্থসংকটের কারণে ইউনিসেফের শিক্ষা প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে শিক্ষকদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এটি অমানবিক হলেও ইউনিসেফের হাতে টাকা নেই।

তিনি আরও জানান, স্থানীয় শিক্ষকদের চাকরির বিষয়টি সরকারের উপদেষ্টা ও বিভিন্ন দাতা সংস্থার সঙ্গে আলোচনা চলছে। শরণার্থী ক্যাম্পে কয়েক হাজার শিক্ষক রয়েছেন। তাদের এক বছর ধরে রাখতে হলে ৬০ থেকে ৮০ কোটি টাকা প্রয়োজন। কীভাবে এই অর্থ সংগ্রহ করা যায়, তা নিয়ে চেষ্টা চলছে। 

tahjibulanam18@gmail.com 

Share this news