Bangla
6 months ago

কমছে এটিএমের ব্যবহার, জায়গা নিচ্ছে সিআরএম

Published :

Updated :

১৯৯২ সাল পর্যন্ত দেশে টাকা জমা দেওয়া কিংবা উত্তোলনের জন্য একমাত্র মাধ্যম ছিলো ব্যাংকের শাখা। ব্যাংক বন্ধ থাকলে টাকা উঠানোর কোনো মাধ্যম ছিলো না। এ কারণে হঠাৎ জরুরি ভিত্তিতে টাকা তোলার প্রয়োজন হলে পড়তে হতো ভোগান্তিতে। 

এ সমস্যা নিরসনে ১৯৯২ সালে সর্বপ্রথম চালু করা হয় অটোমেটেড টেলার মেশিন যা এটিএম নামে পরিচিত। এতদিন পর্যন্ত এটিএম বুথে থাকা এটিএমগুলো থেকে শুধুমাত্র টাকা উত্তোলন করা যেতো। কারো যদি টাকা জমা দেওয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে তার ব্যাংকের শাখাতেই যেতে হতো। 

এক্ষেত্রে আরও আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে ২০১০ সাল থেকে শুরু হয় ক্যাশ ডিপোজিট মেশিন বা সিডিএমের ব্যবহার। নাম শুনেই বুঝা যাচ্ছে টাকা জমা দেওয়ার জন্য এ যন্ত্র ব্যবহার করা যায়। কিন্তু সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় অন্য জায়গায়। এ যন্ত্র টাকা জমা নিতো ঠিকই কিন্তু তাৎক্ষণিক ভাবে না। সিডিএমের মাধ্যমে জমাকৃত টাকা ব্যাংকের কর্মকর্তারা দিনে একবার ব্যাংকের শাখায় গিয়ে জমা করে আসতেন। বেশিরভাগ সময় তাই দুপুরের পরে টাকা জমা দিলে তার হিসাব হতো পরের দিন। ফলে গ্রাহককে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হতো। 

গ্রাহকদের এসব সমস্যা সমাধানে এমন একটি যন্ত্রের দরকার ছিলো যার মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করার পাশাপাশি টাকা জমা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে জমা হয়ে যাবে। এ উদ্যোগ সর্বপ্রথম নেয় সিটি ব্যাংক। তারা ২০১৭ সালের জুন মাসে নিয়ে আসে অত্যাধুনিক ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন বা সংক্ষেপে সিআরএম। ধীরে ধীরে অন্যান্য ব্যাংকও সিআরএমের ব্যবহার শুরু করে দেয়। যেহেতু একইসাথে টাকা জমা ও উত্তোলন করা যায়, তাই গ্রাহকসেবা নিশ্চিতে এটিএম বুথগুলোতে এটিএমের জায়গা দখল করতে শুরু করে সিআরএম। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী গত এক বছরে ক্যাশ ডিপোজিট মেশিনের (সিডিএম) সংখ্যা কমেছে প্রায় এক হাজার। উল্টোদিকে সিআরএমের সংখ্যা বেড়েছে দেড় হাজারের মতো। এটিএমের সংখ্যাও আগের তুলনায় কমছে। 

 ব্যাংকিং খাতের বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন বুথে টাকা জমা দেওয়া যায় এ ব্যাপারে এখনো অনেকের ধারণা গড়ে ওঠেনি। তাছাড়া টাকা জমা দেওয়ার চেয়ে টাকা উত্তোলনের প্রয়োজন বেশি হয়ে থাকে। 

সিআরএমের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, যখন খুশি তখন এর মাধ্যমে লেনদেন করা যায়। অনেক সময় বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে অপেক্ষা করতে হতো ব্যাংকের শাখায় জমা দিয়ে আসার। আর টাকা ব্যাংকে জমা না হওয়া পর্যন্ত দুশ্চিন্তায় থাকতে হতো। সে সমস্যা থেকে মুক্তি দিয়েছে সিআরএম। এছাড়াও জাল নোট শনাক্তকরণে সিআরএম বেশ দক্ষ। যন্ত্রটি প্রতি সেকেন্ডে ৮-১০টি নোট গুনতে পারে। তাছাড়াও টাকা জমা দেওয়া এবং উত্তোলন দুটোই করা যায় বলে এটি জায়গা কিংবা অর্থ ও সাশ্রয় করে। 

তবে সিআরএমে কিছু অসুবিধাও আছে। অনেক সময় পুরনো নোট কিংবা ময়লাযুক্ত নোট এ যন্ত্র গ্রহণ করে না। এছাড়াও সিডিএমের মতো চেক জমা দেওয়ার সুযোগও সিআরএমে নেই। 

তবে প্রযুক্তিগত উন্নতির সাথে সাথে এ সমস্যাগুলো সমাধান হয়ে যাবে বলে বিশ্বাস করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। 

[email protected] 

Share this news