মোরেলগঞ্জে টানা ৯ দিনের ভারী বর্ষণে শত শত বিঘা ফসলী জমি পানির নিচে, দুশ্চিন্তায় চাষিরা
Published :
Updated :
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ টানা ৯ দিনে ভারী বর্ষণে ফসলী জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে প্রায় শত শত বিঘা আমন বীজতলা ও আউশ রোপা ফসলী জমি পানির নিচে নিমজ্জিত। ক্ষতির আশংকায় কৃষকেরা। বদ্ধ ও দখলকৃত খালের বাঁধ কেটে মাঠের পানি দ্রুত নামানোর ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি স্থানীয় চাষিদের।
শুক্রবার (১১ জুলাই) সরেজমিনে জানাগেছে, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার গত ৯ দিনের টানা ভারী বর্ষণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ফসলী মাঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে পড়েছে। যে কারনে চলতি আমন মৌসুমে বীজতলা ও আউশ রোপনকৃত প্রায় ২ হাজার বিঘা ফসলী মাঠ পানির নিচে নিমজ্জিত রয়েছে। বীজতলা পচে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতির আশংকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষক।
এদিকে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, চলতি বছরে এ উপজেলায় স্থানীয় আমন ধান ১শ’ হেক্টর ও ২০ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলন শীল আমন বীজতলা, ৭৭৪ হেক্টর জমিতে আউশ রোপন করেছে কৃষক।
জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে পড়া নিচু এলাকা প্রত্যন্ত ইউনিয়ন জিউধরা, বহরবুনিয়া, চিংড়াখালী, বারইখালী, নিশানবাড়িয়া, হোগলাবুনিয়া, মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়ন, পঞ্চকরণ দৈবজ্ঞহাটী, তেলিগাতী সহ পৌর শহরের নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো ফসলী মাঠে এখনও হাঁটু পানি জমে রয়েছে। ছোট ছোট নালা ও ফসলী মাঠের পাশে খালগুলো বাঁধ দিয়ে আটকে রাখার কারনে পানি নামাতে পারছেন না কৃষক। এ ছাড়াও কৃষকের মাঠে থাকা ঢেড়স, পেপে, মরিচ, করলা, শসাসহ বিভিন্ন প্রকারের সবজি ফসলের চারা পানির নিচে থাকায় পচন ধরার উপক্রম হয়ে পড়েছে।
দৈবজ্ঞহাটী ইউনিয়নের খালখুলা গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান, আলতিবুরুজ বাড়িয়া গ্রামের সাদেক হাওলাদার, জোকা গ্রামের ফারুক শেখ, কুমারিয়া জোলা গ্রামের শাওন শেখসহ একাধিক কৃষকেরা বলেন, এ বছর আমন বীজতলা ফসলী মাঠে তাদের ৫/৬ বিঘা জমিতে বীজ ধান ফেলেছেন। ধান ফেলার ৩/৪ দিন পরেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। একটানা বৃষ্টি চলছে। প্রত্যেক মাঠেই হাঁটু পানি জমে রয়েছে। পানি সরানোর কোন ব্যবস্থা নেই। অনেক খালে বাঁধ রয়েছে তাই পানি নামতে পারছে না।
এ বিষয়ে দৈবজ্ঞহাটী ইউনিয়ন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, তার ইউনিয়নে যেসব ফসলী মাঠে পানি জমে রয়েছে সেক্ষেত্রে কৃষকদেরকে নালা কেটে দ্রæত পানি অপসারণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ সর্ম্পকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রবল বর্ষণে এ উপজেলায় নিম্নাঞ্চলের গ্রামগুলোতে ফসলী মাঠে পানি জমে থাকার কারনে আমন বীজতলার ক্ষতির আশংকা করছেন কৃষক। তবে,৩ / ৪ দিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে ক্ষতির পরিমানটা কমে আসবে। তিনিসহ মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা এ দুর্যোগের বিষয়ে সার্বক্ষনিক কৃষকদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন।
saifulpress24@yahoo.com