Published :
Updated :
টানা বর্ষণে বগুড়ার শেরপুর শহরে তীব্র জলাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। নালা-খাল ভরাট, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাব এবং স্থানীয় প্রশাসনের নিরবতার কারণে পৌর এলাকার ১৬টি মহল্লা ও পৌরবহির্ভূত এলাকাগুলোতে দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতাল রোড, ধুনট মোড়, রেজিস্ট্রি অফিস মোড়, বারোদুয়ারীপাড়া, কলেজ রোড, দাড়কিপাড়া, উলিপুর, জগন্নাথপাড়া এবং দত্তপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি এবং দোকানপাট হাঁটু পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকা ও বিদ্যমান নালা পরিষ্কারের অভাবে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।
শহরের হাসপাতাল রোড এলাকার বাসিন্দা আঃ হালিম বলেন, “বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ঢালাই নালা তৈরি হলেও নিয়মিত সংস্কার না হওয়ায় মাঝারি বৃষ্টিতেই পানি রাস্তা ও ঘরবাড়িতে ঢুকে পড়ে। বছরের পর বছর এই সমস্যা চলছে, কিন্তু পৌরসভা থেকে কোনো স্থায়ী সমাধান পাচ্ছি না।”
একইভাবে, শিক্ষার্থী মেহজাবিন আক্তার জানান, “কলেজে পরীক্ষা ছিল, কিন্তু পানির কারণে হাঁটতেই পারিনি। শহরের প্রতিটি গলিতে পানি থই থই করছে।”
দোকানি হায়দার আলী অভিযোগ করে বলেন, “আজকের বৃষ্টিতে দোকানে পানি উঠে গেছে। পৌরসভা এ সমস্যার কোনো স্থায়ী সমাধান দেয় না।”
শহরের ধুনট মোড় এলাকার বাসিন্দা শাহানা বেগম বলেন, “আমাদের বাড়ির সামনে হাঁটু পানি। বাচ্চাদের নিয়ে খুব সমস্যায় পড়েছি। নালাগুলো পরিষ্কার না করায় পানি বেরোতে পারছে না।”
বগুড়া আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ৮২.৮০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া জানান, আগামী ১৮ জুলাই পর্যন্ত দমকা হাওয়াসহ ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করবে।
গত সোমবার শেরপুর পৌরসভা ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে, যেখানে রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ এবং পরিচ্ছন্নতা উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশিক খান জানান, “এই বাজেট বাস্তবায়িত হলে শেরপুর একটি স্মার্ট ও নাগরিকবান্ধব শহরে রূপান্তরিত হবে।”