Bangla
4 days ago

অ্যানিমেশন মুভির জগতের সেরা সাত

Published :

Updated :

অ্যানিমেশন মুভি ছোট থেকে বড় সব বয়সের লচ্চিত্রপ্রেমীদের কাছে সবসময়ই পেয়েছে অন্যরকম কদর। প্রাণবন্ত আঁকিবুকি আর মনকাড়া গল্পে শুরু থেকেই অ্যানিমেশন সিনেমা মাতিয়ে রেখেছে দর্শকদের। এক সময় অ্যানিমেশন বা চলমান চিত্রের এই সিনেমা নির্মাণ করা হতো হাতে এঁকে এঁকে। সময়ের সাথে এসেছে আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া, গড়ে উঠেছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের শিল্প। দর্শক জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা সবসময়ের এমন সাতটি অ্যানিমেশন মুভি তুলে ধরা হয়েছে এই লেখায়।

টয় স্টোরি

toy-story

অ্যানিমেশন সিনেমার জগতে অবিস্মরণীয় আলোড়ন তুলে নিজের শ্রেষ্ঠত্বের জানান দিয়েছিল পিক্সার ফিল্মসের টয় স্টোরি। খেলনা পুতুল শুধুই কি খেলনা, নাকি তাদেরও আছে জীবন, আছে বলার মতো গল্প এমন এক জাদুবাস্তবতার অনুভূতির সম্মুখীন করে তোলে টয় স্টোরি। উডি, বাজ লাইটইয়ারের মতো দারুণ দারুণ চরিত্রের হাত ধরে টয় স্টোরি সিরিজে মোট চারটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। প্লট, অ্যানিমেশন, সার্বিক উপস্থাপনার কথা মাথায় রেখে বলা যেতে পারে, অ্যানিমেশন মুভির এক নতুন যুগের সূচনা করে দেয় টয় স্টোরি। ১৯৯৫ সালে প্রথম মুক্তি পাওয়া টয় স্টোরি আইএমডিবি রেটিং এ ৮.৩ পাওয়ার পাশাপাশি বক্স অফিসেও তুলে এনেছে প্রায় ৩৭৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। 


স্পিরিটেড অ্যাওয়ে


spirited-away 
জাপানের অ্যানিমেটেড মুভির সুনাম আছে বিশ্বজুড়েই। সুবিখ্যাত পরিচালক হায়াকো মিয়াজাকির হাত ধরে ২০০১ সালে মুক্তি পায় স্পিরিটেড অ্যাওয়ে। চিহিরো নামের ছোট্ট এক মেয়ে কীভাবে আটকে যায় অতিপ্রাকৃত জগতে, একের পর এক পেরিয়ে যায় অদ্ভুত সব বাধা-বিপত্তি, তারই গল্প উঠে এসেছে এই সিনেমায়। স্টুডিও ঘিবলির শ্বাসরুদ্ধকর অ্যানিমেশন আর জমাট গল্পের এই অ্যানিমেশন মুভিটি যেকোনো ধরণের সিনেমার সাথে সহজেই টক্কর দেবার দাবী রাখে। বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে আসা চলচ্চিত্রটির আইএমডিবি রেটিং ৮.৬। 

দ্যা লায়ন কিং


the-lion-king


আইএমডিবির রেটিং ৮.৫। বক্স অফিসের আয় ৯৬৮.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এসব পরিসংখ্যান যদি সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে রাখা হয়, তবুও দ্যা লায়ন কিং থেকে যাবে সর্বকালের অন্যতম সেরা অ্যানিমেশন সিনেমা হিসেবে। ডিজনির অত্যন্ত জনপ্রিয় এই চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে। প্রায় তিন দশক পেরিয়ে আসলেও লায়ন কিং এর গল্প যেন এখনো জীবন্ত। সিম্বা নামক এক সিংহ রাজপুত্রের এই গল্পের মূল অনুপ্রেরণা শেকসপিয়ারের হ্যামলেট নাটক। “হাকুনা মাতাতা” বা “সার্কেল অব লাইফের” মতো গান আজো হৃদয় কাড়ে সকলের। অ্যানিমেটেড মুভির জগতের এক অনন্য মাস্টারপিস এই সিনেমাটি। 

 

ওয়াল-ই

wall-e


২০০৮ সালে মুক্তি পায় পিক্সার ফিল্মসের ওয়াল-ই। ওয়াল-ইর অন্যতম বিশেষত্ব হলো এটি ভাবনার খোরাক যোগায়। চারপাশের দূষণ আর প্রযুক্তির উৎকর্ষে পৃথিবীর ওপর মানুষের ক্রমাগত অত্যাচারে ভবিষ্যতের বসবাসের অযোগ্য পৃথিবী এই সিনেমার প্লট। আইএমডিবি রেটিং এ ৮.৪ পাওয়া এই সিনেমার মূল চরিত্র চমৎকার এক রোবট, ওয়াল-ই। পৃথিবীর বাইরে দূরে বহুদূরে এক অজানা যাত্রায় ছুটে চলছে ওয়াল-ই। সেখানে সে খুঁজে পায় তার জীবনের ভালোবাসা, ইভকে। ছোট ছোট সংলাপের মধ্যে দিয়েও দারুণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পরিবেশবাদ, ভোগবাদ এবং সর্বোপরি ভালোবাসার গল্প। বক্স অফিসেও ওয়াল-ই পেয়েছে দারুণ সাফল্য, আয় করেছে ৫৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

 

স্পাইডারম্যান: ইনটু দ্যা স্পাইডারভার্স


spider-man-into-the

তালিকার সবচেয়ে নবীন চলচ্চিত্র স্পাইডারম্যান সিরিজের এই অ্যানিমেশন মুভিটি। ২০১৮ সালে মুক্তি পাওয়া এই সুপারহিরো মুভির কেন্দ্রীয় চরিত্র মাইলস মোরালেস নামের এক কিশোর। মাইলস একজন নতুন স্পাইডারম্যান। কিন্তু স্পাইডারম্যান হওয়াটাই তো সব না, মাইলসকে খুঁজে বের করতে হবে “স্পাইডারভার্স” থেকে পৃথিবীর বাকি স্পাইডারম্যানদের – আর সেই খোঁজাখুঁজির পথ যথেষ্ট বন্ধুর। নানা চড়াই - উৎরাই পেরিয়ে তবেই মাইলস এগিয়ে যায়, সাথে এগোতে থাকে স্পাইডারম্যান ইনটু দ্যা স্পাইডারভার্সের গল্প। চোখধাঁধানো অ্যানিমেশন, আবহ সংগীত আর চমৎকার প্লটের এই চলচ্চিত্রের বক্স অফিস থেকে আয় ছিল ৩৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার; আইএমডিবি রেটিং ৮.৪।

 

আপ

up

পিক্সারের চিফ ক্রিয়েটিভ অফিসার পিট ডক্টর পরিচালিত আপ চলচ্চিত্রটি যেকোনো দর্শককেই আবেগাপ্লূত করে তুলবে। কার্ল ফ্রেড্রিকসন নামের এক অবসরপ্রাপ্ত সেলসম্যানের জীবনের গল্প আপ। কার্ল ছিলেন বেলুনের সেলসম্যান। একদিন রঙ-বেরঙের হাজারো বেলুনের সাথে নিজের বাড়িটা বেঁধে দিয়ে সে উড়ে যায় তার আজীবনের স্বপ্ন পূরণ করতে। পুরো গল্প জুড়েই আছে ভালোবাসার প্রাপ্তি - অপ্রাপ্তি, হারানোর বিভিন্ন দিক, আছে বন্ধুত্বের দারুণ সব নিদর্শনও। দর্শকের মনকে দোলা দিয়ে যাওয়া ২০০৯ সালের এই চলচ্চিত্রটি আয় করে ৭৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, আইএমডিবি রেটিং এ পেয়েছে ৮.২।

 

ফাইন্ডিং নিমো


finding-nemo
এই তালিকার অন্যতম ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র ২০০৩ সালে মুক্তি পাওয়া পিক্সারের ফাইন্ডিং নিমো। মার্লিন নামের এক ক্লাউনফিশ হারিয়ে ফেলে তার ছেলে নিমোকে। সাগরের অতলে হারানো ছেলেকে খুঁজে আনতে এক বাবার সংগ্রাম, সাথে সমুদ্রতলের বর্ণিল অ্যানিমেশন – সবই নজর কাড়ে দর্শকদের। অনবদ্য প্লটের এই সিনেমা যে দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছে দারুণভাবেই, তা বোঝা যায় বক্স অফিসের ৯৪০ মিলিয়ন ডলার আয় থেকেই। আইএমডিবি রেটিং এ ৮.১ পাওয়া এই চলচ্চিত্রের রয়েছে ছেলে-বুড়ো সবাইকেই আবেগঘন করে তোলার ক্ষমতা।

 

[email protected]

Share this news