Published :
Updated :
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বাংলাদেশ ত্যাগ নিয়ে দিনভর নানা গুঞ্জনের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, তিনি সরকারকে জানিয়েই দেশের বাইরে গেছেন।
তবে হাস কী উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়লেন এবং তার গন্তব্য কোথায়, এসব বিষয়ে কিছু জানাতে রাজি হননি মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। বলেছেন, “এটা পাবলিকলি জানানোর কথা না।”
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কাছেও এ বিষয়ে তথ্য চেয়ে জবাব পাওয়া যায়নি।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়ে বিরোধী পক্ষের টানা অবরোধের মধ্যে সংলাপে বসতে তিন প্রধান দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে চিঠি দেওয়ার পর এখন পর্যন্ত ইতিবাচক সাড়া পাননি পিটার হাস।
এর মধ্যে ৭ জানুয়ারি ভোটের তারিখ জানিয়ে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে। এরপর বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘এই তফসিলে কোনো দিন ভোট হবে না’। আওয়ামী লীগের তরফে ঘোষণা এসেছে, ‘নির্বাচনের ট্রেন কেউ মিস করলে কিছু করার নেই।’
তফসিল ঘোষণার দিন বুধবার পিটার হাস ঢাকায় বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, দুই সংস্থার অর্থায়ন নিয়েও আলোচনা হয় বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন এসেছে।
নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে সমঝোতার চেষ্টায় সংলাপের উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র । গত সোমবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের কাছে এ বিষয়ে চিঠি নিয়ে যান পিটার হাস। একই চিঠি দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে।
এর মধ্যে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই হাসের ঢাকা ত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ে।
কোনো খবরে বলা হয়, তিনি ওয়াশিংটন যাচ্ছেন, কেউ কেউ তার গন্তব্য শ্রীলঙ্কা বলে দাবি করছে। কেউ লিখেছে, কলম্বো হয়ে ওয়াশিংটন যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত।
তবে হাস কোথায় যাচ্ছেন, সে প্রশ্নে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মুখপাত্র স্টিফেন ইবেলি সাড়া দেননি।
পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন নিশ্চিত করেন, আমেরিকার দূত এই মুহূর্তে বাংলাদেশে নেই।
হাসের ঢাকা ত্যাগের বিষয়টি সরকারের জানা আছে কি না, এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমরা অবশ্যই অবগত। কারণ, একজন রাষ্ট্রদূত যখন যাবেন, তখন অবশ্যই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েই যান।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে যেসব বিদেশি রাষ্ট্রদূত বা মিশন প্রধান আছেন, তারা যখন স্টেশন ত্যাগ করেন, তারা আমাদেরকে জানিয়ে যান কূটনৈতিক পত্রের মাধ্যমে। সেটা কিন্তু তাদের হেডকোয়ার্টারকেও জানাতে হয়।
“একইভাবে কিন্তু আমাদের রাষ্ট্রদূতরাও তার হোস্ট কান্ট্রি থেকে যখন বাংলাদেশে আসেন, তখন একইভাবে যেমন আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জানান, তেমনি ওখানকার সরকারকেও কিন্তু কূটনৈতিক পত্রের মাধ্যমে জানিয়ে আসতে হয় এবং তার অবর্তমানে একজন যে দায়িত্বপ্রাপ্ত থাকেন, তার নামটাও কিন্তু প্রকাশ করে আসতে হয়।”
তবে পিটার হাস কত দিনের জন্য বাংলাদেশ ছেড়েছেন, কী জন্য ছেড়েছেন, এসব বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিন্তু এই তথ্যটা পাবলিকলি জানাবে না যে, একজন রাষ্ট্রদূত কবে থেকে কতদিনের জন্য গেছেন এবং কী উদ্দেশ্যে গেছেন। কারণ, এটা তো পাবলিকলি জানানোর কথা না।”
বিষয়টি নিয়ে নানা রকম ‘ভুল তথ্য’ ছড়ানোর বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সেহেলী বলেন, “মিসইনফরমেশন কেন হবে? আপনারা দূতাবাসের কাছ থেকে জানতে পারেন। তাদেরও তো একজন মুখপাত্র আছে।”