
Published :
Updated :

সবসময় তো বাজারের দই খাওয়া হয়। যদিও বাড়িতে সহজেই খুব কম উপকরণে স্বাস্থ্যকর উপায়ে দই তৈরি করা যায়, কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দইয়ের রেসিপির জন্য দরকার পরে বাজারের কেনা দই যা সবসময় হাতের নাগালে থাকে না।
অনেকেই খাবার শেষে মিষ্টিমুখ করেন দই দিয়ে। খেতে সুস্বাদু ছাড়াও রোগ প্রতিরোধে যেন দই এর প্রতিপক্ষ মেলা ভার। এতে রয়েছে প্রবায়টিক যেমন ল্যাকটোব্যাসিলাস এবং বিফিডোব্যাজটেরিয়াম, যা অন্ত্রের মাইক্রোবায়োটা সংশোধন করে। এছাড়া দইয়ের নিয়মিত ব্যবহার আপনার দৈনন্দিন ক্যালসিয়ামের চাহিদা মেটাতেও সাহায্য করে থাকে। আপনি কি জানেন ওজন কমাতে এমনকি ডায়বেটিসের সমস্যা কমানোর জন্যও দই সাহায্য করে? এছাড়া দই এ রয়েছে ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
যদিও বাজারের দই সহজলভ্য, কিন্তু আপনার ভেতরকার রাধুনি বাসায় দই বানানোর জন্য মাথাচাড়া দিয়ে ওঠলে, আপনার জন্য এই লেখাটি, যেখানে আপনি সহজেই পাঁচটি ভিন্ন উপকরণ দিয়ে বাসায় দই তৈরি করতে পারবেন।
আসুন শুরুতেই জেনে নিই মিষ্টি দই তৈরির উপায়। এর জন্য প্রয়োজন দুই লিটার দুধ, তিন কাপ পরিমান চিনি, তিন চা চামচ মিষ্টি দই ও একটি মাটির পাত্র।
এবার একটি পাত্রে দুধ ভালো করে মিশিয়ে নিন। ফোটানোর সময় বার বার নাড়তে থাকুন যেন সর না পড়ে। অন্য একটি পাত্রে দুই চামচ চিনি ও দুই চামচ পানি জ্বাল করে ক্যারামেল বানিয়ে নিন এবং তা দুধে ভালো করে মিশিয়ে নিন। বাকি চিনিটুকু দিয়ে আরও কিছুক্ষন জ্বাল করে নিন। এবার দুধ কিছুটা ঠান্ডা হলে দুই চামচ দই মিশিয়ে দিন এই মিশ্রণে। এবার মাটির পাত্রের গায়ে এক চামচ দই মেখে নিয়ে মিশ্রণটি ঢেলে দিন এবং পাত্রের মুখ ভালো করে আটকে দিন। ছয়-সাত ঘণ্টা একটি স্থির যায়গায় রেখে দিন এবং উপভোগ করুন বাসায় তৈরি মিষ্টি দই।
এখন যদি আগে থেকে আপনার কাছে দই না থাকে তখন? আসুন জেনে নেয়া যাক দই ছাড়া টক দই তৈরির উপায়।
দই বীজ তৈরির জন্য দুইকাপ ফুল ফ্যাট বা ফুল ক্রিম যুক্ত তরল দুধ কুসুম গরম করে নিতে হবে। খেয়াল রাখা ভালো যে হাতের ছোয়ায় গরমটা যেন সহনীয় হয়। ব্যাস হয়ে গেল দই বীজ। এটি দিয়ে আপনি পাঁচটি ভিন্ন উপায়ে টক দই তৈরি করতে পারবেন।
এবার একটি বাটিতে পরিমাণমতো দুধ নিয়ে তাতে তিন-চারটি শুকনো মরিচ দিতে হবে।
শুকনো মরিচের পরিবর্তে কাচামরিচও ব্যবহার করা যায়। এক্ষেত্রে আলতোভাবে মরিচ দুধের সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। এরপর দুই টুকরা তেতুল দুধের সাথে মিশিয়ে নিবেন।
চার নম্বর পদ্ধতির জন্য দরকার সাদা ভিনেগার বা সিরকা। এককাপ দুধের জন্য এক চা চামচ ভিনেগার বা সাদা সিরকা মিশিয়ে নিতে হবে। সর্বশেষে এক টুকরো লেবু দিয়েও আপনি খুব সহজে বাসায় তৈরি করে নিতে পারবেন টক দই। চেষ্টা করবেন লেবুর টুকরোটি দুধে ডুবিয়ে রাখতে।
যেই পদ্ধতি আপনি প্রয়োগ করুন না কেন, পাত্রটিকে ভালো করে ফয়েল পেপার দিয়ে মুড়ে দিতে ভুলবেন না। এবার পাত্রটিকে সারা রাত মোটা কাপড় বা কম্বল দিয়ে পেচিয়ে গরম কোথাও রেখে দিতে হবে। সকালে একটি ছাকনির সাহায্যে দই এর অতিরিক্ত পানি ঝেড়ে ফেলুন এবং উপভোগ করুন ঘরে তৈরি স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে দই, যা বাজারের দই থেকে কোন অংশে কম নয়।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতেই পারে, আমার বাসায় দই ঠিকঠাক জমে না কেন? সেক্ষেত্রে এই বিষয়গুলোয় নজর দিন যেমন দইয়ের পাত্রটি যেন একটি স্থির জায়গায় থাকে এবং দই পাতার পর চার-পাঁচ ঘণ্টা পাত্রটি ধরা যাবে না।
আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যেন দই পাতার সময় বাতাসের উষ্ণতার যেন তারতম্য না হয়। সেক্ষেত্রে আগে থেকেই দই পাতার পাত্রটিকে মোটা কাপড়, উল বা কম্বল দিয়ে মুড়ে দিতে হবে। এতে দই জলদি করে জমবে। বাসায় দই তৈরি করা কঠিন নয় বরং কিছু পদ্ধতি ফলো করে আপনিও স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে কম খরচে দই তৈরি করতে পারবেন৷

For all latest news, follow The Financial Express Google News channel.