Bangla
2 years ago

‘আরাভের নামে’ ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করতে পুলিশের চিঠি

Published :

Updated :

দুবাইয়ে স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করতে বাংলাদেশ থেকে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ বিনোদন জগতের কয়েকজন তারকাকে ডেকে নিয়ে আলোচনায় আসা আরাভ খানের বিরুদ্ধে ‘রেড নোটিস’ জারি করতে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ।

পুলিশ প্রধান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানতে পেরেছেন, ওই চিঠি ইন্টারপোল ‘একসেপ্ট’ করেছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

নোটিস অবশ্য ‘আরাভ খান’ নামে হবে না। পুলিশ কর্মকর্তা মামুন ইমরান খান হত্যা মামলায় এ আসামির যে নাম আছে, সেই ‘রবিউল ইসলামের’ নামে নোটিস জারি করতেই পাঠানো হয়েছে চিঠি।

সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের নন্দনকানন এলাকায় এনায়েত বাজার পুলিশ ফাঁড়ির উদ্বোধন করতে এসে আইজিপি এ কথা জানান।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, “যে নামে তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছি, সে নামে রেড নোটিশ জারির জন্য ইন্টারপোলকে বলেছি। শুনেছি তারা সেটা একসেপ্ট করেছে।”

সম্প্রতি আরব আমিরাতের দুবাইয়ে একটি গয়নার দোকান উদ্বোধন হয়েছে ‘আরাভের’। সেটি উদ্বোধন করতে বাংলাদেশ থেকে উড়ে যান ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, অভিনেত্রী ফারদিন দীঘি, ইউটিউবার হিরো আলমসহ বিনোদন জগতের আরও কয়েকজন। আর সেই আয়োজন ঘিরে দেশে শুরু হয় তোলপাড়।

ওই অনুষ্ঠানের আগে আগে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়, এই আরাভ আর কেউ নন, ঢাকায় পুলিশ কর্মকর্তা মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম, যিনি ভারতীয় পাসপোর্টে ‍দুবাই গেছেন।

আরও প্রকাশ পায়, এই আরাভ বা রবিউল একেক সময় একেক নামে পরিচিতি পেয়েছেন। তার বাবা ছিলেন নিম্ন আয়ের একজন মানুষ, যিনি ঢাকায় এসে হোটেলে শ্রমিকের কাজ করেছেন। সেই আরাভই এখন শত শত কোটি টাকার মালিক, যার অর্থের উৎস নিয়ে আছে ধোঁয়াশা।

গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থানায় আরাভ বা রবিউলের বিরদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা গেছে ৯টি। তবে মামলার সংখ্যা আরও বেশি।

মামুন হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক শেখ মাহবুবুর রহমান ২০২১ সালের ২ মার্চ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচার ফয়সল আতিক বিন কাদেরের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন। সেখানে রবিউল ইসলামসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়। 

পুলিশ বলছে, রবিউল ভারতের পাসপোর্টে ‘আরাভ খান’ নামে দুবাইয়ে পারি জামিয়েছেন।

সোমবার বিকাল পর্যন্ত ইন্টারপোলের রেড নোটিসের তালিকায় বাংলাদেশের ৬২ জনের নাম পাওয়া যায়। সেখানে আরাভ খান বা রবিউল ইসলাম নামে কেউ নেই।

রেড নোটিস জারি হলে কী লাভ

ইন্টারপোলের আট ধরনের নোটিসের মধ্যে রেড নোটিস জারির অর্থ হলো ওই ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার ও বিচার বিভাগ বিচারের মুখোমুখি করতে অথবা দণ্ড কার্যকর করার জন্য খুঁজছে।

সদস্য দেশগুলো ইন্টারপোলের মাধ্যমে পলাতক আসামির সম্পর্কে তথ্য বিনিময় করতে পারে। বাংলাদেশ সরকারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে এবং সে দেশের সরকার তা খতিয়ে দেখে সন্তুষ্ট হলে তাকে গ্রেপ্তার করতে পারে।  

অবশ্য সেক্ষেত্রে সে দেশের সরকারই তার বিচার শুরু করবে। আর তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হলে আসামি প্রত্যর্পণ চুক্তির প্রয়োজন হবে।

বাংলাদেশ ও আরব আমিরাতের মধ্যে এই চুক্তি নেই।

দাওয়াতে যাওয়া মানেইজড়িত নন

এ রকম ‘নেতিবাচক চরিত্রের’ একজনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করতে বাংলাদেশের ক্রীড়া ও বিনোদন জগতের আলোচিত কয়েকজনের যাওয়া নিয়ে যে সমালোচনা হচ্ছে, সে বিষয়ে আইজিপির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা।

জবাবে তিনি বলেন, “অনেক সময় দেখা যায় বিজ্ঞাপনে যায়। দাওয়াতে গেলেই যে জড়িত থাকবে বলে সেটা বলা যায়? বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।”

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে খুনোখুনি ও অপহরণ বেড়ে যাওয়ার বিষয়েও সাংবাদিকরা প্রশ্ন রাখেন পুলিশ প্রধানের কাছে।

জবাবে তিনি বলেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।”

কক্সবাজারের স্থানীয় ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জনসংখ্যার তুলনা করে তিনি বলেন, “কক্সবাজার জেলা পুলিশ, এপিবিএন, র‌্যাব, গোয়েন্দা সংস্থা, ট্রিপলআরসি সবাই মিলে আমরা কাজ করছি। আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী প্রত্যেক্যের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। এমন না যে আমরা ছাড় দিচ্ছি।”

Share this news