Published :
Updated :
গত বছরের ডিসেম্বর প্রান্তিকে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পরিমাণ খেলাপি ঋণের রেকর্ড গড়েছে। এ সময় ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকায়, যা বিতরণকৃত মোট ঋণের প্রায় ২০ দশমিক ২ শতাংশ। একই সময়ে ব্যাংক খাতে মোট ঋণ ছিল ১৭ লাখ ১১ হাজার ৪০২ কোটি টাকা।
খেলাপি ঋণের এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে এক-তৃতীয়াংশ ব্যাংকের মূলধনে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে ২০টি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার ৭৮৯ কোটি টাকায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত ডিসেম্বর প্রান্তিকের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সেখানে জানানো হয়, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৫৩ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা। আর ডিসেম্বর প্রান্তিকে এই ঘাটতি বেড়ে হয় ১ লাখ ১৮ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা। এর আগের বছর, অর্থাৎ ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে ১০টি রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৩৯ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা।
অপরদিকে, ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে ব্যাংক খাতের সম্মিলিত মূলধন ও ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের অনুপাত (সিআরএআর) কমে নেমে এসেছে মাত্র ৩ দশমিক ০৮ শতাংশে। যা তার আগের প্রান্তিক অর্থাৎ সেপ্টেম্বর শেষে ছিল ৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ব্যাসেল-৩ নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি ব্যাংককে তাদের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১০ শতাংশ বা ৫০০ কোটি টাকার মধ্যে যেটি বেশি, সেই পরিমাণ মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়।
এই শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে, সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে মূলধন ঘাটতিতে রয়েছে বলে ধরা হয়। মূলধনের অর্থ মূলত উদ্যোক্তাদের প্রাথমিক বিনিয়োগ ও অর্জিত মুনাফা থেকে সংরক্ষিত থাকে। আর যে কোনো ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে থাকলে, তারা তাদের শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতে পারে না।