Bangla
3 days ago

'দেশের মানুষের একটি পয়সাও চুরি করবো না': ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

Published :

Updated :

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রতিষ্ঠান 'নগদ'-এর আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় তাকে এবং সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলামকে অযৌক্তিকভাবে জড়ানো হয়েছে। 

শনিবার (৩১ মে) বিকেলে নিজের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।

তৈয়্যব লিখেছেন, ‘আমি বাংলাদেশ রাষ্ট্র এবং এ দেশের মানুষের একটি পয়সাও চুরি করবো না- এই আস্থাটা আমার ওপর রাখবেন আশা করি। আমি প্রচণ্ডরকম আর্থিক সততা নিয়ে বড় হয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি তদন্তের ব্যবস্থা করেছি, নির্দেশনা দিয়েছি। নগদের অ্যাক্টিং সিইও এ বিষয়ে প্রেস রিলিজে বলবেন।’ ‘তবে বলে রাখি, এখানে অন্যায়ভাবে সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং আমাকে টেনে আনা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘নগদে সাবেক সরকারের লোকেরা ভুয়া ই-কেওয়াসি করে, ই-কেওয়াসি ছাড়া অ্যাকাউন্ট করে, ভুয়া এজেন্ট নিয়োগ দিয়ে, ভুয়া ক্যাশব্যাক করে, অবৈধ মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট লেনদেন করে অর্থ হাতিয়েছে। মানবজমিন সুকৌশলে এই দায় আমার আর নাহিদ ইসলামের ওপর চাপিয়ে দিতে চেয়েছে। আমি এর নিন্দা জানাই।’

প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, ‘ট্রান্সকাম সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্টে জমা অর্থের বিপরীতে অবৈধভাবে ইলেক্ট্রনিক মানি তৈরি করেছে, পরিমাণটা ডাক বিভাগের রিপোর্ট মতে ৬৪৫ কোটি টাকা। আমি নিজে তদন্তকারী গোয়েন্দা সংস্থাকে এসব বিস্তারিত বুঝিয়েছি, প্রেজেন্টেশন করেছি। যাদের আগ্রহ আছে, এসব পাবলিক করে দেবো। এটা ভয়াবহ অনৈতিক আচরণ হয়েছে আমাদের ওপর, আওয়ামী লুটপাট আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

‘অথচ সন্দেহভাজন নগদ কর্মকর্তাকে আমি নিজে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুরোধ করেছি। তারা ঘটনা উল্টিয়ে দিয়ে বলেছে আমি ছাড়িয়েছি। এই মিথ্যা সাংবাদিকতার জবাব কে দেবে!’

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব লিখেছেন, ‘মাসে কোম্পানির মোট খরচ আনুমানিক ৪৩ কোটি, কিন্তু বলা হচ্ছে দুর্নীতি করে অর্থ হাতানো হয়েছে ১৫০ কোটি। অথচ তদন্ত করছে একাধিক সংস্থা। এমন প্রপাগান্ডা সাংবাদিকতা মানতে পারছি না, বিশেষভাবে যে পত্রিকায় আমি একডজনের বেশি কলাম লিখেছি।’

তিনি বলেন, ‘২৭ মে সন্ধ্যায় নগদের দায়িত্ব বাংলাদেশ ডাক বিভাগকে বুঝিয়ে দেওয়ার পরে ২৮ মে মাত্র এক কর্মদিবস কাজ করেছেন নতুন অ্যাক্টিং সিইও এবং সেদিন তার ব্যবস্থা (ব্যস্ততা) গেছে আসামিদের ই-মেইল ব্লক করতে। আসামিরা ই-মেইলে কর্মকর্তাদের কনফিউজ করছিল। হুমকিও দিয়েছে। নতুন অ্যাক্টিং সিইও সবাইকে আশ্বস্ত করেছেন কারও চাকরি যাবে না, ঠিক সময়ে বেতন-বোনাস দেওয়া হবে। এর আগে ২ সপ্তাহ কাজ করেছে শাফায়াত গং। ৫ আগস্ট থেকে ১১ মে পর্যন্ত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।’

বিশেষ সহকারী আরও লিখেছেন, ‘আমরা সংবাদকর্মীদের কাছে জেনেছি যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পক্ষ এজেন্সিকে দিয়ে ১৫০ কোটি দুর্নীতির রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এর আগে তারা কিছু টিভি স্টেশনকেও অ্যাপ্রোচ করেছিল। দেশের শীর্ষ ফ্যাক্ট চেকার এবং ডিজিটাল ভেরিফিকেশন এক্সপার্ট সেটা এক্সপোজও করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘নগদে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রশাসক বসানোর পরে বাংলাদেশ ব্যাংক কেপিএমজিকে দিয়ে ফরেনসিক রিপোর্ট করাচ্ছে (অভিযোগ আছে কেপিএমজি প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট্যান্ট)। আমি পলিসি অ্যাডভাইজার থাকাকালে এসবে আপত্তি জানিয়ে বলেছি সময় ও অর্থ সাশ্রয়ে সিসিএ কিংবা সিআইডির ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব ব্যবহার করতে। ইত্যাদি বিষয়ে আমি গভর্নরকে বিস্তারিত জানিয়ে বলেছি, একটা রেগুলেটর তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশে একটা কোম্পানির অপারেশন এবং অ্যাডমিনিস্ট্রেশন করলে প্রতিযোগীর সুবিধা হয়, সে মনোপলি হয়ে যায়। তাই নগদকে ডাক বিভাগে দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণে চালালে সেটা বরং টেকসই হয়। (আধাসরকারি পত্র উন্মুক্ত করার ইচ্ছা ছিল না, নিজের ক্রেডিবিলিটি নষ্ট হচ্ছে ভেবে জবাবদিহির জায়গা থেকে শেয়ার করছি)।’

 

Share this news