Bangla
8 months ago

ঈদে সদরঘাটের লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের জন্য সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ এবং বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি নাগরিক সমাজের

Published :

Updated :

গত ১১ এপ্রিল ঈদুল ফিতরের দিন সদরঘাটে লঞ্চ দুর্ঘটনায় পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ীদের শাস্তি দাবি করেছে নিরাপদ নৌ-পথ বাস্তবায়ন জোট।

জোটের নেতৃবৃন্দ মনে করেন, অবহেলা আর কতিপয় মানুষের বেপরোয়া আচরণের বলি এই পাঁচটি মৃত্যু। এই ঘটনায় দায়ের করা মামলাতেও অবহেলাজনিত ও বেপরোয়া গতিতে লঞ্চ চালানোর কারণে মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।

ঈদের দিন বিকেলে ঢাকা সদরঘাটের ১১ নম্বর পন্টুনে দুটি লঞ্চ বাঁধা থাকা অবস্থায় ছিল। এ দুটি লঞ্চের মাঝখানে যথেষ্ট জায়গা না থাকলেও সেখান দিয়ে আরেকটি লঞ্চ বেপরোয়াভাবে পন্টুনে ঢোকানোর চেষ্টা করা হয়। এ সময় একটি লঞ্চের রশি ছিঁড়ে পন্টুনে অপেক্ষমাণ পাঁচ যাত্রীকে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থালেই তাঁরা মৃত্যুবরণ করেন। ঈদের সময় লঞ্চঘাটে সবসময়ই বাড়তি চাপ থাকে, ফলে সেখানে বাড়তি নজরদারি, বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকাই ছিলো স্বাভাবিক।

নিরাপদ নৌ-পথ বাস্তবায়ন জোটের পক্ষ থেকে এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থার অবসান দাবি করা হয়। বাংলাদেশের নৌপথকে নিরাপদ করতে জোট থেকে নিম্নোক্ত দাবিসমূহ পেশ করা হয়।

(১) একজন বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি করতে হবে।

(২) তদন্ত কমিটিতে বিশেষজ্ঞ এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতিনিধিও রাখতে হবে।

(৩) অতীতের সকল তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে।

(৪) মেরিন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পর্যাপ্ত পুলিশ বাহিনী মোতায়েন রাখতে হবে।

(৫) লঞ্চ মালিকদেরকে সকল যাত্রীর বীমা এবং যাত্রী নিবন্ধন নিশ্চিত করতে হবে।

(৬) দুর্ঘটনার জন্য দায়ী সকলকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

(৭) ঈদ, পূজা, অন্যান্য উৎসবকালীন এবং ঝড়ের সময় জেটিতে অতিরিক্ত পরিদর্শক ও পুলিশ মোতায়েন করতে হবে।

(৮) ১১ এপ্রিল ২০২৪ লঞ্চ দুর্ঘটনায় যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের পরিবারকে অবিলম্বে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

জোটের প্রধান সমন্বয়ক জনাব রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, নদীমাতৃক বাংলাদেশে নৌপথ সবচেয়ে ব্যয় সাশ্রয়ী ও নিরাপদ। আমরা চাই, গণমানুষ ও পণ্য পরিবহনের জন্য এই সাশ্রয়ী নৌপথ নিরাপদ করার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হোক।

২০০৩ সাল থেকে বাংলাদেশের নৌপথ নিরাপদ করার দাবিতে আন্দোলনরত নাগরিক সমাজের সংগঠন নিরাপদ নৌপথ বাস্তবায়ন জোট প্রায় নিয়মিত এই দাবিগুলো করে আসছে। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সংগঠনটি।  

২০০৩ সালের ৮ জুলাই এমভি নাসরীন ডুবে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এই ঘটনার পর থেকে প্রায় ১৫ বছর এই নিরাপদ নৌপথ বাস্তবায়ন জোট প্রতি বছর নিরাপদ নৌপথ বাস্তবায়নের নানা সুপারিশ তুলে ধরছে।

২০০৬ সালে নৌ দুর্ঘটনার কারণ আর তার প্রতিকারের সুপারিশ তুলে ধরে বিস্তারিত একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে জোট।

২০১৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে ঈদ ও পূজার ছুটিতে এবং কালবৈশাখীর সময়ে লঞ্চঘাটে অতিরিক্ত পরিদর্শনকারী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ নিয়োগ করার দাবি জানানো হয়েছিলো জোটের এক সংবাদ সম্মেলনে।

Share this news