
Published :
Updated :

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরতান্ত্রিক প্রবণতাগুলোর উৎস চিহ্নিত করে যথাযথ সংস্কার করতে হবে, যাতে কোনো ব্যক্তি বা দল ভবিষ্যতে একচ্ছত্র ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করতে না পারে।
মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার বৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যমকে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় এনসিপি’র সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সরোয়ার তুষার এবং আরমান হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
সারজিস আলম বলেন, যেসব কারণে ফ্যাসিবাদ গড়ে ওঠে যেমন- এককেন্দ্রিক ক্ষমতা, দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ, পক্ষপাত যুক্ত নির্বাচন ও নিয়ন্ত্রিত বিচারবিভাগ- এসব জায়গাগুলোকে আলাদা করে সংস্কারের কাজ করতে হবে যেন দেশে আর কখনো একটি ফ্যাসিবাদী কাঠামো পুনরায় তৈরি হতে না পারে।
তিনি আরও বলেন, গণতান্ত্রিক নীতি ও প্রক্রিয়াকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে, যেখানে জনগণের মতামত ও অংশগ্রহণই হবে রাষ্ট্র পরিচালনার মূল ভিত্তি।
তিনি জোর দেন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা ও কার্যকারিতার ওপর, বিশেষ করে বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), মহাহিসাব নিরীক্ষকের দফতরসহ অন্যান্য সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে। এসব প্রতিষ্ঠানের সাংবিধানিক সুরক্ষা এবং জনসম্পৃক্ত সংস্কার নিশ্চিত করার কথা জানান তিনি।
এছাড়া, সংসদীয় কাঠামোতে ভারসাম্য আনতে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদের প্রস্তাব দেন সারজিস আলম, যেখানে একটি কক্ষ হবে আসনভিত্তিক এবং অপরটি গঠিত হবে ভোটের আনুপাতিক হারে। আন্তর্জাতিক চুক্তির অনুমোদনের জন্য উচ্চকক্ষের অনুমোদনের প্রস্তাবও তুলে ধরেন তিনি।
স্বাধীন বিচার বিভাগের জন্য এনসিপি’র প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে নিজস্ব প্রশাসনিক সচিবালয় গঠন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সৃষ্টি, সর্বজ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ এবং বিচারপতি নিয়োগে স্বচ্ছ মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু করা। পাশাপাশি, দুর্নীতি দমন কমিশনের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করাসহ সরকারি ও বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা-বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের অনুমতির প্রয়োজন না রাখার বিধানের কথা বলেন তিনি।
তিনি জানান, স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে দলীয় প্রতীকের পরিবর্তে স্বতন্ত্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে এনসিপি। জনপ্রতিনিধিদের পুনর্মূল্যায়নের জন্য "রাইট টু রিকল" বা জনগণের চাহিদায় পুনর্নির্বাচনের সুযোগ চালু করার প্রস্তাবও রাখা হয়েছে।

For all latest news, follow The Financial Express Google News channel.