Published :
Updated :
জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইএইএ’র মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি সতর্ক করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় ইরানের কিছু পরমাণু স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, দেশটি অল্প কয়েক মাসের মধ্যেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার ক্ষমতা আবার ফিরে পেতে পারে।
আজ রোববার (২৯ জুন) টিআরটি ওয়ার্ল্ড এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
শনিবার (২৮ জুন) সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গ্রোসি বলেন, “ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোর কিছু এখনো অক্ষত রয়েছে। ফলে তারা কয়েক মাসের মধ্যেই আবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম শুরু করতে পারবে— এমনকি এর চেয়েও আগে।”
এর আগে ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের সামরিক, পারমাণবিক ও বেসামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। তাদের দাবি, ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনা থেকে বিরত রাখতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এরপর যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনায় হামলা করে।
তেহরান জানিয়েছে, এসব হামলায় পরমাণু স্থাপনাগুলোর মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে, তবে বিস্তারিত তথ্য এখনো প্রকাশ পায়নি। মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, এই হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি “দশকের পর দশক” পিছিয়ে গেছে। কিন্তু গ্রোসি বিষয়টি এতটা সরল নয় বলে মনে করেন।
গ্রোসি আরও জানান, ইরানের কাছে বর্তমানে আনুমানিক ৪০৮.৬ কেজি উচ্চমাত্রায় (৬০ শতাংশ) সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে, যা বেসামরিক ব্যবহার ছাড়িয়ে গেলেও এখনো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় মাত্রা অতিক্রম করেনি। তবে এই ইউরেনিয়াম আরও সমৃদ্ধ করলে তা দিয়ে প্রায় ৯টি পারমাণবিক বোমা তৈরি সম্ভব।
তিনি বলেন, “আমরা এখনো জানি না, ইউরেনিয়ামের এই মজুদ কোথায় আছে— কিছু হয়তো হামলায় নষ্ট হয়েছে, আবার কিছু হয়তো অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এ বিষয়গুলো পরিষ্কারভাবে জানা দরকার।”
এদিকে ইরানি পার্লামেন্ট আইএইএ’র সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করার পক্ষে ভোট দিয়েছে। ফলে সংস্থার প্রধান গ্রোসিকে তেহরান সফরের অনুমতি দেওয়া হয়নি এবং মূল ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র ফোর্দোতে নজরদারি ক্যামেরা বসানোর সুযোগও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
গ্রোসি বলেন, “আমাদের সেখানে গিয়ে নিশ্চিত হতে হবে— কী আছে, কী নষ্ট হয়েছে এবং কীভাবে তা ঘটেছে।”
অন্যদিকে ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেন, “হামলার আগে আমরা খুব অল্প সময়ে নোটিশ দিয়েছিলাম, তাই তারা ইউরেনিয়াম সরিয়ে নিতে পেরেছে বলে আমার মনে হয় না।”
এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, “ইরানে আইএইএ’র পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা গ্রোসি ও তার সংস্থার পেশাদারিত্ব এবং অঙ্গীকারের প্রশংসা করি।”