মাতারবাড়ী হবে দেশের বৃহত্তম বন্দর ও শিল্পকেন্দ্র: প্রধান উপদেষ্টা
Published :
Updated :
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে, মাতারবাড়ী অঞ্চলের কৌশলগত গুরুত্ব তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, এ এলাকাকে দেশের সবচেয়ে বড় বন্দর, সরবরাহ কেন্দ্র, শিল্প উৎপাদন ও জ্বালানির হাব হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য রয়েছে। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করা জরুরি বলে তিনি মত দেন।
তিনি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের এ অঞ্চলে আগ্রহের বিষয়টি তুলে ধরে বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সহজ করতে একটি সুপরিকল্পিত মাস্টার প্ল্যানের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা সংশ্লিষ্ট সড়ক পরিবহন ও নৌপরিবহন সচিবদের মহেশখালী-মাতারবাড়ী সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন উদ্যোগ (এমআইডিআই) ত্বরান্বিত করতে এবং অঞ্চলটিকে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য দ্রুত রাস্তা নির্মাণের নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে বড় সমুদ্রগামী কন্টেইনার জাহাজ গ্রহণে সক্ষম টার্মিনাল নির্মাণের ওপরও তিনি জোর দেন।
তিনি আরও বলেন, এ অঞ্চলে মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল ও শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে, ফলে বিপুল সংখ্যক শ্রমিকের আগমন ঘটবে। তাই একটি পরিকল্পিত নগর উন্নয়ন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
অধ্যাপক ইউনূস জানান, ২৮ মে থেকে শুরু হতে যাওয়া তার আড়াই দিনের জাপান সফরে এমআইডিআই অঞ্চলের উন্নয়ন একটি প্রধান আলোচ্য বিষয় হবে। সফরকালে তিনি ৩০ মে টোকিওতে অনুষ্ঠিতব্য ৩০তম নিক্কেই ফিউচার অব এশিয়া সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। আলোচনার মূল লক্ষ্য হবে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর জন্য অর্থায়ন নিশ্চিত করা।
বৈঠকে জাপানের দ্বিতীয় একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল এমআইডিআই এলাকায় প্রতিষ্ঠার আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে। প্রথম জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলটি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে স্থাপিত, যা ইতোমধ্যেই উল্লেখযোগ্য বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করেছে।
এছাড়া, সৌদি আরবের আরামকো, আবুধাবি পোর্টস, রেড সি গেটওয়ে, জাপানের বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জেরা এবং মালয়েশিয়ার পেট্রোনাসসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এ অঞ্চলে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
সম্প্রতি মাতারবাড়ীতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের জন্য ঢাকার সঙ্গে জাপানের পেন্টা-ওশান কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড এবং টিওএ কর্পোরেশনের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) অর্থায়নকৃত এই প্রকল্পটি এমআইডিআই উদ্যোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা অঞ্চলটির যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে বাড়াবে।
মহেশখালী-মাতারবাড়ী সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন উদ্যোগ (এমআইডিআই) হলো বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে একটি যৌথ প্রচেষ্টা, যার লক্ষ্য এই অঞ্চলকে একটি কৌশলগত অর্থনৈতিক করিডোরে রূপান্তরিত করা। এতে সরবরাহ, জ্বালানি ও শিল্প খাত একীভূত হবে।
প্রধান উপদেষ্টার মুখ্যসচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোর্শেদ এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। এমআইডিআই সেলের মহাপরিচালক সারওয়ার আলম চলমান প্রকল্পগুলোর একটি বিস্তৃত উপস্থাপনা তুলে ধরেন।