মুদ্রা বিনিময় হার ইস্যুতে আইএমএফের সঙ্গে সমঝোতা হয়নি, ঋণ কিস্তি অনিশ্চিত
Published :
Updated :
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির ঋণের বাকি অর্থ ছাড় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইএমএফের মধ্যে একাধিক বৈঠক হলেও এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
মূল আলোচনার বিষয় হলো — মুদ্রার বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে কিনা। আইএমএফ শর্ত দিয়েছে, ডলারের বিনিময় মূল্য বাজার নির্ধারণ করবে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করছে, এখনই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া সঠিক হবে না। কারণ, এতে ডলারের দাম বেড়ে মূল্যস্ফীতির আরও ঊর্ধ্বগতি হতে পারে। বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে অবস্থান করছে।
সোমবার (৫ মে) সন্ধ্যায় এই বিষয়ে আইএমএফের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টার বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের নেতৃত্বে ছিলেন দুই ডেপুটি গভর্নর হাবিবুর রহমান ও কবির। বৈঠকে নতুন করে আরও ১০০ কোটি ডলারের ‘স্থিতিশীলতা তহবিল’ (স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড) গঠনের প্রস্তাবও করা হয়। বলা হয়, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু হলে সম্ভাব্য সংকট মোকাবিলায় এই তহবিল থেকে ডলার সরবরাহ করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা হবে, যাতে রিজার্ভে চাপ না পড়ে।
যদিও বৈঠকে কোনো চূড়ান্ত সমঝোতা হয়নি, তবে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। একই বিষয়ে এর আগে আইএমএফ প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর এবং ওয়াশিংটনে বৈঠকেও আলোচনা করলেও কোনো পক্ষ সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক আশঙ্কা করছে, বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দিলে ডলারের দাম আরও বেড়ে যাবে, যা আমদানি নির্ভর অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়াবে। ফলে দেশীয় বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফ থেকে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি শুরু করে বাংলাদেশ। এর তিনদিন পর, ২ ফেব্রুয়ারি প্রথম কিস্তি হিসেবে ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার এবং ওই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। এরপর ২০২৪ সালের জুন মাসে তৃতীয় কিস্তি হিসেবে আসে আরও ১১৫ কোটি ডলার। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেলেও, বাকি রয়েছে ২৩৯ কোটি ডলার।