Published :
Updated :
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, রাজনৈতিক ব্যবস্থা ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়। শুধুমাত্র প্রশাসনিক সংস্কার দিয়ে এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়।
শনিবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গবেষক ড. হোসেন জিল্লুর রহমানের নতুন গ্রন্থ ‘অর্থনীতি, শাসন ও ক্ষমতা : যাপিত জীবনের আলেখ্য’ প্রকাশ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, "বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কিছু সংস্কারের চেষ্টা করছে, তবে এই অল্প সময়ে বড় ধরনের পরিবর্তন আশা করা বাস্তবসম্মত নয়। সুশাসন নিশ্চিত করা দেশে বহু বছর ধরেই কঠিন হয়ে পড়েছে। এটি মোকাবিলায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের উপস্থিতি ও শক্তিশালী চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স ব্যবস্থা প্রয়োজন।"
তিনি আরও বলেন, "প্রধানমন্ত্রী, সংসদ সদস্য তাদের ক্ষমতার ‘চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স’ নেই। রাজনৈতিক সংস্কার ছাড়া কেবল প্রশাসনিক উদ্যোগে কোনো দীর্ঘমেয়াদি সুফল আসবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ সংস্কারও জরুরি।"
অর্থ মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালনকালে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, "বাংলাদেশের মতো একটি দেশ শাসন করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন সম্ভব হয়নি। তবুও আমরা এমন কিছু উদ্যোগ নিতে চেয়েছি যা ভবিষ্যৎ সরকার অনুসরণ করতে পারে।"
ব্যাংকিং খাতের দুরবস্থা তুলে ধরে তিনি জানান, অনেক ব্যাংকের চেয়ারম্যানরা প্রতিষ্ঠান থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, "যদি কোনো ব্যাংকে ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ বাকি থাকে, তার মধ্যে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকাই লোপাট হয়েছে।"
তিনি আরও উল্লেখ করেন, দেশের ব্যাংকিং খাতকে স্থিতিশীল করতে আনুমানিক ৩৫ বিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন হবে, যদিও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) প্রাথমিকভাবে এই চাহিদা ১৮ বিলিয়ন ডলার হিসেবে নির্ধারণ করেছিল।
অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ বক্তব্য দেন— অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের সভাপতি এম হুমায়ুন কবির, লেখক ও বিশ্লেষক অলতাফ পারভেজ, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, অধ্যাপক আবু আহমেদ, গবেষক খন্দকার সাখাওয়াত আলী, ভুঁইয়া আসাদুজ্জামান এবং এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আবদুল মজিদ।